হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :

টেকনাফে বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ফলে টেকনাফ উপজেলার জেলেরা ও ব্যবসায়ীরা কর্মব্যস্ত সময় কাটছে। প্রতিদিন ধরা পড়া শত শত মণ ইলিশ ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার বাজার ও মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে। ব্যবসায়ীরা ইলিশের আমদানি বুঝে দর ওঠানামার জন্য ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা। শীত মৌসুমের শেষভাগে এসে হঠাৎ রেকর্ড পরিমাণ ইলিশ প্রাপ্তিতে জেলেরা খুশীতে আতœহারা।

টেকনাফ সিনিয়র উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন এপ্রসঙ্গে বলেন ‘২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শীত মৌসুমের শুরুতে ইলিশ মাছ ধরা না পড়লেও প্রাকৃতিক কারণে এবারে ইলিশের মৌসুম একটু দেরিতে শুরু হয়েছে। জেলেদের জালে এখন প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবারেও ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যাবে’।

মেসার্স টেকনাফ ফিশিং এর মালিক নুরুল আমিন বলেন ‘টেকনাফের বিভিন্ন ঘাট থেকে প্রতিটি ১২০ টাকা দরে ৭ হাজার হাজার ইলিশ ক্রয় করি। প্রতিটি মাছ ৪০০ গ্রাম থেকে শুর করে প্রায় ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ। বরফ না পেয়ে জেলেরা মাছ কিছুটা নষ্ট করে ফেলে। অন্যদিকে চট্রগ্রামের মাছের আড়তে ফোন দিয়ে জানতে পারি ওখানে বিক্রি হচ্ছে মণ প্রতি ১৫ হাজার টাকা’।

টেকনাফ বাহারছড়া ঘাটের ফিশিং ট্রলারের মালিক আবুল কালাম বলেন ‘৩ দিন আগে আমার ট্রলারটি ৯ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। রাতে মাঝি ফোন দিয়ে বলে আমাদের বরফ শেষে হয়ে গেছে আমরা চলে আসছি। সকাল ১০টার সময় ঘাটে গিয়ে দেখি ট্রলারটি চলে এসেছে। মাঝি আমাকে বলেন আমরা ৩০০০ ইলিশ মাছ পেয়েছি। মাঝির কথা বিশ্বাস না করে ট্রলারে গিয়ে দেখি ৪০০ গ্রাম থেকে শুর করে প্রায় ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রচুর ইলিশ। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে মাছ ব্যবসায়ীরার ভীড় । নিজেদের জন্য কিছু ইলিশ মাছ রেখে ব্যবসায়ীদের সাথে দর কষাকষি করে প্রতিটি ইলিশ ১১০ টাকা দরে ২ হাজার ৯০০টি ইলিশ মাছ বিক্রি করি’।

শাহপরীরদ্বীপের স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী ও ফিশিং ট্রলারের মালিক মোহম্মদ কায়ছার বলেন ‘আমার ট্রলারও এক রাতেই ১ হাজার ২০০টি ইলিশ পেয়েছে। বরফের সংকটের কারণে মাছ একটু নষ্ট হয়ে গেছে। তার পরও ভাল দাম পেয়েছি। মণ প্রতি ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি করি’।

ঢাকা-চট্রগ্রামের মাছের আড়ৎ ব্যবসায়ীরা জানান ইলিশের আমদানি বাড়লে দাম এখনও একটু কম। আমাদের দেশেও প্রচুর ইলিশের চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন গাড়ি গাড়ি ইলিশের চালান চট্রগ্রাম-ঢাকাসহ সারাদেশে যাচ্ছে। ইলিশের মৌসুম শুরুর পর বর্তমানে দাম অনেকটা কমে আসলেও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাড়বে।