দান-অনুদানের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। মানুষকে তার পথে খরচ করার নসিহত পেশ করেছেন। হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দানের অনেক ফজিলত বর্ণনা করছেন।

মানুষকে কিভাবে দান করতে হবে। দ্বীনের পথে কিভাবে দান করতে হবে, সে সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা রয়েছে কুরআন হাদিসে। প্রিয়নবি বলেছেন, দান এমনভাবে কর যেন তোমার বাম হাত না জানে; ডান হাত কী দান করল।

Quran-inner

আয়াতের অনুবাদ

bangla

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২৬২নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার পথে খরচকারীকে অভয় দিয়ে বলেন, যারা দান করে আর কাউকে দানের কথা বলে বেড়ায় না এবং কষ্টও দেয় না; তাদের জন্য তার প্রভু রেখেছেন পুরস্কার এবং তাদের কোনো ভয় ও চিন্তার কারণ নেই।

আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাঁর জীবনের চেয়ে সম্পদের গুরুত্ব বেশি দিয়েছেন। এ কারণে আল্লাহর পথে অগ্রসহর হওয়ার জন্য সর্ব প্রথম মাল বা সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন অতঃপর জীবন দিয়ে আল্লাহর কাজে অগ্রসর হওয়া কথা বলেছেন।

হজরত ওসমান রাদিয়াআল্লাহু আনহু এবং হজরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ রাদিয়াল্লাহু আনুর সম্পর্কে এ আয়াত নাজিল হয়েছে।

হজরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু তাবুকের যুদ্ধের সময় এক সহস্র উটের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রসহ আল্লাহর পথে দান করেছিলেন। অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি তখন নগদ ১ হাজার স্বর্ণ মুদ্রাও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে পেশ করেছিলেন। তখন এ আয়াত নাজিল হয়।

বিখ্যাত সাহাবী হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি সচক্ষে দেখেছি যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু হাত তুলে হজরত ওমমান রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দোয়া করেছেন এই বলে যে, হে পরওয়ারদেগার! আমি ওসমান ইবনে আফ্ফানের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছি, তুমিও তার প্রতি সন্তুষ্ট হও।’

আর হজরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে ৪ হাজার দেরহাম পেশ করে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে ৮ হাজার দেরহাম ছিল; তন্মধ্যে ৪ হাজার দেরহাম আমি আমার সন্তান-সন্ততির জন্য রেখে এসেছি আর ৪ হাজার দেরহাম আমার পরওয়ারদেগারকে কর্জ দেয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছি।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন ইরশাদ করলেন, ‘যে দেরহামগুলো তুমি তোমার কাছে রেখেছ আর যা কিছু আল্লাহর রাহে দান করতে নিয়ে এসেছ সবগুলোতে আল্লাহ তাআলা বরকত দান করুন।’ তখন এ আয়াতে কারিমা নাজিল হয়।

মূল কথা হলো- দান করতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। যাকে দান করা হলো তার প্রতি কোনো প্রকার অনুগ্রহ প্রকাশ করা যাবে না। দানের কারণে তাকে কোনো প্রকার খাটানো বৈধ হবে না। কোনো প্রকার কষ্ট দেয়া যাবে না।

মনে রাখতে হবে দান করে যদি কেউ কাউকে খোটা দেয় বা কাজে খাটায় বা কষ্ট দেয় তাহলে দানের মাহাত্ম্য নষ্ট হবে; দানের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। দানের ফজিলত ও বরকত নষ্ট হবে।

পড়ুন- সুরা বাকারার ২৬১ নং আয়াত

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের উল্লেখিত আয়াত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আল্লাহর পথে নিঃস্বার্থ দান করার তাওফিক দান করুন। কুরআন ও হাদিসে ঘোষিত দানের ফজিলত লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।