ডেস্ক নিউজ:

দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার পর পরই বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান। এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সপরিবারে বঙ্গভবনে যান তিনি।

২১তম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার স্থলাভিষিক্ত হলেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তবে ২২তম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন।

বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্য, সাবেক প্রধান বিচারপতি, উচ্চ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ সরকারের পদস্থ বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

এর আগে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শুক্রবার নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের আদেশে সই করেন। এর পরপরই পদত্যাগ করেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারক মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

এর আগে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের স্বাক্ষরে এ প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

এতে বলা হয়, ‘সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন।’

বিএসসি ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে দু’টি কোর্স সম্পন্ন করা সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ১৯৮৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।

আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ১৯৯৯ সালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ পান। বিএনপি সরকার আমলে ২০০৩ সালে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারক হন। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগে নিয়োগ পান তিনি। ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর জন্ম নেয়া সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি পদে থাকবেন। সে হিসেবে তার চাকরির মেয়াদ আছে আরও তিন বছর।

বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞার পদত্যাগের পর আপিল বিভাগে এখন বিচারক হিসেবে বিচারপতি মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে আছেন বিচারপতি মো. ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর জন্ম নেয়া সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এলএলবি ডিগ্রি নিয়ে ১৯৮১ সালে আইন পেশায় যুক্ত হন। তার দুই বছর পর ওকালতি শুরু করেন হাইকোর্টে।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন গত দুটি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন ও বিতর্কের মধ্যে ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়া প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা গত বছরের ১১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। পরে বঙ্গভবন থেকে জানানো হয় রাষ্ট্রপতি এই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। এস কে সিনহা ছুটিতে যাওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন আপিল বিভাগের অপর জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা। সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করার পর পরই জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেন।