এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া:

চকরিয়া উপজেলার লক্ষারচর ইউনিয়নের ছিকলঘাটস্থ লক্ষারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৪জন অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারলেও রেজিস্ট্রেশন করতে অতিরিক্ত টাকা দাবির কারনে এবার পরীক্ষা দিতে পারেনি ৩ শিক্ষার্থী। এ অবস্থার কারনে পরীক্ষা বঞ্চিত এসব শিক্ষ ার্থীরা আত্মহত্যার হুমকী দিয়েছে। এ ঘটনায় আতঙ্কগ্রস্ত পরিবার চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার লক্ষারচর উচ্চ বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে প্রতিষ্টিত হয়। পাঠদানের অনুমতি নিয়ে শুরু করে দশম শ্রেণীর পাঠদান। চলতিবছর পাশের শাহ ওমরাবাদ হাই স্কুলের মাধ্যমে লক্ষ্যারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬৭ জন পরীক্ষার্থী প্রস্ততিমুলক টেষ্ট পরীক্ষাও দেন।

অভিভাবকরা জানান, ৬৭জনের মধ্যে মাত্র ৩ জন ছাড়া সকলেই টেষ্ট পরীক্ষায় ফেল করে। বেশী ছাত্র ফেল করায় লক্ষ্যাচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম অর্থ বাণিজ্যের কৌশলের আশ্রয় নেন। ফেল করা প্রতিজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কাছ থেকে সন্তানদের এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াসে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। ফলে প্রধান শিক্ষক ৬৭ জনের মধ্যে ৬৪জন শিক্ষার্থীর এসএসসি রেজিস্ট্রেশন ফরম পুরণ করেন।

ভুক্তভোগী অভিভাবকরা জানান, চাহিদা মতো টাকা দাবি করে আদায় করতে ব্যর্থ হওয়ায় অযোগ্যতার অজুহাত তুলে প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন হাসান আসিফ, মোহাম্মদ ইসমাইল উদ্দিন ও আবদুল্লাহ সায়েম সহ তিনজনের রেজিস্ট্রেশন ফরম পুরন করেনি। ফলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে তাদের নামে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়নি।

অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের কারনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন হাসান আসিফ, মোহাম্মদ ইসমাইল উদ্দিন ও আবদুল্লাহ সায়েম অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারেনি। এ অবস্থায় পরীক্ষা দিতে না পারার কারনে চরমভাবে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন বঞ্চিত তিন শিক্ষার্থী।

পরীক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীর বাবা মৌলানা জহির আহমদ আজিজী জানান, লক্ষারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনৈতিক কর্মের কারনে তাঁর ছেলেসহ অপর দুইজন শিক্ষার্থীর জীবন অন্ধকারে পতিত হয়েছে। তাঁরা পরীক্ষা দিতে না পারার ক্ষোভে এখন আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে আমার পরিবার সদস্যরা পরীক্ষার্থী সন্তানকে নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। তিনি জানান, ছেলের জীবন বাঁচাতে আমি ইতোমধ্যে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী নোমানের কাছে লিখিত আবেদন করেছি।

বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী এবছর এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারছেনা স্বীকার করে লক্ষ্যারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম, তাঁরা এসএসসির প্রস্ততিমুলক পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করেছে। তাই তাদের রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি। বিষয়টি আমরা ওইসময় শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে অবগত করেছি। তিনি বলেন, ভালভাবে লেখাপড়া করলে তাদেরকে আগামী বছর পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে।