হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :

১৪ জানুয়ারী থেকে টেকনাফ উপজেলায় শুরু হওয়া ‘খানা তথ্য ভান্ডার শুমারী’র সভা সেন্টমার্টিনদ্বীপে এখনও হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ ২ ফেব্রুয়ারী শুমারীর কাজ শেষ হয়ে যাবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র ন্যাশনাল হাউজ হোল্ড ডাটা বেইজ (এনএইচডি) প্রকল্পের উদ্যোগে দেশের সকল খানার আর্থ-সামাজিক ও জনমিতিক তথ্য সংগ্রহ করে একটি জাতীয় তথ্য ভান্ডার তৈরী করতে এ শুমারী করা হচ্ছে।

জানা যায়, ১৪ জানুয়ারী থেকে বাড়ি বাড়ি গণণার কাজ শুরুর আগেই প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি চেয়ারম্যান, সকল সদস্য ও গন্যমাণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে সভা করার বাধ্যবাদকতা ছিল। এজন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ, অংশগ্রহণকারীদের উপযুক্ত সম্মানী ভাতা, আপ্যায়ণ ইত্যাদির জন্য টাকাও বরাদ্দ ছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত জোনাল অফিসারগণ এ কাজ বাস্তবায়ন করার কথা। ৬নং সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত জোনাল অফিসার হলেন ক্রিড প্রাইমারী স্কুলের ইমরান হোসেন।

৩১ জানুয়ারী সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর আহমদ বলেন ‘সেন্টমার্টিনদ্বীপে এধরণের কোন সভা হয়নি’। কয়েক যুগ ধরে টেকনাফে উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসার নেই। ‘খানা তথ্য ভান্ডার শুমারী’র কাজ তদারক করতে নতুনভাবে পুলিশ সুপারের চাকরী পাওয়া ঢাকা থেকে জিসান নিয়াজ নামে একজন উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসারকে টেকনাফে পাঠানো হয়েছে। তিনি এপ্রসঙ্গে বলেন ‘১৪ জানুয়ারীর আগে এ সভা আবশ্যিকভাবে করার কথা। পরিষদের সভার রেজুলেশনসহ ও খরচের ভাউচার জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে’। ৬নং সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত জোনাল অফিসার ক্রিড প্রাইমারী স্কুলের ইমরান হোসেন এপ্রসঙ্গে ৩১ জানুয়ারী রাতে বলেন ‘সভা করার জন্য আমি চেয়ারম্যানের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্ত তিনি বিভিন্ন জরুরী কাজে ব্যস্ত থাকায় সময় দিতে পারেননি। তাঁর পরামর্শ মতে সভা অনুষ্টানের সম্মানী ভাতা গত ২ দিন আগে মেম্বারদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি’।

উল্লেখ্য, এবারে সারা দেশের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলা, চট্রগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলা, ময়মনসিংহের ১টি জেলা, মোট ২৫টি জেলা, ৬টি সিটি কর্পোরেশন, ২০০টি উপজেলায় ৩০৫৪টি জোনে একযোগে চলছে এ শুমারী। রোহিঙ্গারা এ শুমারীর অন্তর্ভুক্ত হবেনা। যারা রোহিঙ্গা নারী বিয়ে করেছেন অথবা রোহিঙ্গা যুবক বাংলাদেশী নারী বিয়ে করেছেন তারাও বাদ যাবে।

টেকনাফ উপজেলায় সুষ্টভাবে শুমারী সম্পন্ন করতে ১১টি জোনে ১১ জন জোনাল অফিসার, ৫২ জন সুপারভাইজার, ২৮৩ জন তথ্য সংগ্রহকারী নিয়োগ দিয়ে ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা হয়েছে। একজন তথ্যসংগ্রহকারী ২০০-২২০টি খানা বা ঘরের তথ্য সংগ্রহ করবেন বলে জানা গেছে। তথ্য সংগ্রহকারীগণ প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে। শুমারীর জন্য নির্ধারিত ফরমের ৪৩টি কলাম পুরণ করতে হবে।

টেকনাফ উপজেলার ১টি পৌরসভা এবং ৬টি ইউনিয়নের জন্য নির্ধারিত ১১টি জোনে ১১ জন জোনাল অফিসার হলেন পৌরসভায় পরিসংখ্যান অফিসের আমজাদ হোসেন, ১নং হোয়াইক্যং ইউনিয়নে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ওবাচিং মার্মা ও কাঞ্জরপাড়া সরকারী প্রাইমারী স্কুলের হামিদুল হক। ২নং হ্নীলা ইউনিয়নে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আমির হোসেন ও একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের বিশ্বজিৎ ভট্রাচার্য্য। ৩নং টেকনাফ সদর ইউনিয়নে পরিসংখ্যান অফিসের জুয়েল চন্দ্র দেব ও নুরুল আফসার। ৪নং সাবরাং ইউনিয়নে যুব উন্নয়ন অফিসের মঞ্জুর আলম ও সমবায় অফিসের মনির আহমদ। ৫নং বাহারছড়া ইউনিয়নে কৃষি বিভাগের মোস্তাক উদ্দিন। ৬নং সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউনিয়নে ক্রিড প্রাইমারী স্কুলের ইমরান হোসেন।