বিদেশ ডেস্ক:
কুখ্যাত গুয়ান্তানামো কারাগার আবারও চালু ও তা ভর্তি করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের প্রথম স্টেট ইউনিয়ন ভাষণে তিনি বলেন, ‘আগে শুধুমাত্র আবারও যুদ্ধক্ষেত্রে দেখার জন্য আমরা বোকার মতো আইএস নেতা বাগদাদীসহ শত শত ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীকে ছেড়ে দিয়েছি। তাই আজ আমি আরেকটি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছি। আমি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ম্যাটিসকে দেওয়া এক নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেছি।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমাদের সামরিক আটক নীতি পুনঃপরীক্ষা করার জন্য ও গুয়ান্তানামো বেতে আমাদের কারাগার খোলা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।’

ট্রাম্প এই ঘোষণা দেওয়ার রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যরা তা স্বাগত জানিয়ে হাততালি দেন।

এর আগে বক্তব্যের শুরুতে আমেরিকান মহত্ত্ব’কে সামনে টেনে আনেন ট্রাম্প। আমেরিকাকে শক্তিশালী নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী এক দেশ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলতে চেয়েছেন স্বপ্ন-সম্ভবনায় বিশ্বের আর কোনও দেশ আমেরিকার মতো নয়। ভাষণে ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণার সময়ের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ ধারণার আভাস পাওয়া গেছে।

ভাষণের শুরুতেই ট্রাম্প বলেছেন, ‘সব সময়ের জন্যই যা বাস্তব, গত বছর বিশ্ব তা দেখেছে। বিশ্ব জেনেছে, পৃথিবীর আর কোনও দেশের মানুষ আমেরিকানদের মতো নির্ভীক-সাহসী আর নিজের প্রতি আস্থাশীল নয়। পাহাড় দেখলে সেটায় উঠে পড়তে আমরা দেরি করি না। একটা সীমান্ত দেখলে সেটা পেরিয়ে যেতে ভয় পাই না। যেখানেই আশা, তাকেই আমরা কব্জা করে ফেলি। সুতরাং আমেরিকা শক্তিশালী, কেননা এর জনগণ শক্তিশালী।’

গুয়ানতানামো নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারটি বন্দিদের ওপর ভয়ঙ্কর নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত। এই কারাগারে বন্দীদের বিনাবিচারে আটক রাখা হয় এবং তথ্য আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে বন্দীদের ওপর যৌন অত্যাচার, ‘ওয়াটার বোর্ডিং’-সহ বিভিন্ন আইনবহির্ভূত উপায়ে নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের প্রকার ও মাত্রা এতই বেশি যে এই কারাগারকে ‘মর্ত্যের নরক’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ সত্ত্বেও ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত কারাগারটিতে অব্যাহতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে একে মার্কিনীদের ‘লজ্জা’ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূ-খণ্ডের বাইরে কিউবার দক্ষিণ-পূর্ব পাশে ক্যারিবীয় সাগরে এর অবস্থান। এবার সেই ভয়ঙ্কর কারাগারটির কার্যক্রম চালুর কথাই বললেন ট্রাম্প।