নুরুল কবির,বান্দরবান :

বান্দরবান সদর উপজেলার ভরাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখল করে নিয়েছে এলাকার এক প্রভাবশালী। একমাত্র স্কুল মাঠটি দখল করে নেয়ায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা হতে বঞ্চিত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সদর উপজেলার কুয়ালং ইউনিয়নের বালাঘাটা এলাকার ভরাখালী হাজী সাহেব মিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের একমাত্র খেলার মাঠটি বেড়া দিয়ে ঘেরাও করে সেখানে বিভিন্ন গাছের বাগান করছে পাশ্ববর্তী প্রতিবেশী আব্দুল মালেক। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও কোন ফল হয়নি বলে জানান স্কুল কমিটির সভাপতি শামসুল আলম। জানা গেছে ভরাখালী হাজী সাহেব মিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ৩০ শতক জায়গা দান করেছিল স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল আলম। মাঠ দখলকারী পাশ্ববর্তী আব্দুল মালেককেও কিছু জায়গা বিক্রি করেছিল স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি (শামসুল আলম)। জায়গার মালিক শামসুল আলম বলেন, আব্দুল মালেক আমার কাছ থেকে ১০ শতক জমি ক্রয় করেছিল। তাকে তার জায়গাটি বুঝিয়ে দেয়া হলেও চিহ্নিত জায়গায় না গিয়ে স্কুলের খেলার মাঠটি দখল করে রেখেছে। মূলত স্কুলের পাশের মালেকের জায়গাটি উঁচু নিচু গর্ত হওয়ায় সে স্কুলের সমান জায়গাটি দখল করে আছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনসহ সরকারী উর্ধ্বতন মহলে অভিযোগ করেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। তবে স্কুল মাঠ দখলকারী আব্দুল মালেক জানান, আমি স্কুল কমিটির সভাপতি শামসুল আলম এর নিকট থেকে ১০ শতক জায়গা ক্রয় করি। কিন্তু আমাকে উক্ত জায়গা বুঝিয়ে না দেওয়ায় আমি স্কুলের মাঠ দখল করে রেখেছি। স্কুলের মাঠ দখল করতে আমারও কোন ইচ্ছা নাই। যদি সভাপতি আমার জায়গা বুঝিয়ে দেয় তাহলে মাঠের দখল আমি ছেড়ে দিয়ে আমি আমার জায়গায় চলে যাব। স্কুলের জন্য আমি ত্রিশ শতক জায়গা দান করেছি এবং সেটি স্কুলের নামে দানপত্র করে দিয়েছি। আব্দুল মালেককে দশ শতক জায়গা বিক্রী করেছি তার জায়গাটি স্কুলের পাশে তাকে অনেকবার সেটি বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু সে তার জায়গা বুঝে না নিয়ে স্কুলের জায়গাটি দখল করে বাগান করছে।এর ফলে স্কুলের ছেলে মেয়েরা খেলা ধুলা করতে পারছে না স্কুলের পরিবেশ নষ্ট করছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এমরান ফারুক বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের সামনে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাত্যহিক সমাবেশ এবং খেলাধুলা করার জন্য কোন মাঠ নেই। স্কুলের সামনে যে জায়গাটি রয়েছে সেখানে ঘেরাবেড়া দিয়ে বাগান করার ফলে শিশুদের স্কুলে আসতে কষ্ট হয়। বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করার জন্য আমাদেরকে অন্য স্কুলের মাঠে গিয়ে করতে হয়। তাই শিশুদের খেলাধুলার স্বার্থে বিদ্যালয়ের সামনে একটি মাঠ প্রয়োজন। আমরা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। বিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ জায়গাটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এখনো নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের জায়গাটি নির্ধারণ করে দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিন্দ্র সাহা বলেন, ভরাখালী হাজী সাহেব মিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দানকৃত জায়গাটি সীমানা নির্ধারণে সমস্যা রয়েছে। যে ব্যক্তি জায়গা দান করেছেন তিনি বিদ্যালয়ের সীমানা নির্ধারণ করে দেয়নি। এর ফলে পার্শ্ববর্তী ব্যক্তি বিদ্যালয়ের সামনের জায়গাটি দখল করে আছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে বিদ্যালয়ের সীমানা নির্ধারণের জন্য সদর উপজেলা কর্মকর্তা বরাবরে রিপোর্ট পেশ করেছি। বিদ্যালয়ের সীমানা নির্ধারণ হলে বিদ্যালয়ের সামনের জায়গাটি দখলমুক্ত করতে আর কোন জটিলতা থাকবে না।

ছবির ক্যাপশন: সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঘেরাও দিয়ে বাগানের ছবি।