ডেস্ক নিউজ:

বেসরকারি মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনকে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ফাঁকির সাত কোটি ২৫ লাখ টাকা দিতেই হবে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে স্থান ও স্থাপনা ভাড়ায় প্রযোজ্য এ পরিমাণ অর্থ ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যা এখন প্রমাণিত। ফলে এই অর্থ চেয়ে সোমবার চূড়ান্ত নোটিশ জারি করা হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) মূল্য সংযোজন কর শাখা থেকে পাওনা আদায়ে গ্রামীণফোনকে এ চিঠি দেয়া হয়।

এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে প্রতিষ্ঠানটি এ বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এ বিষয়টি এনবিআরের তদন্তে ধরা পড়ে। এ বিষয়ে শুনানি ও চিঠি চালাচালিও হয় প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে। অবশেষে এনবিআরের তদন্ত সঠিক প্রমাণিত হওয়ায় চূড়ান্ত নোটিশ জারি করা হলো। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতেও বলা হয়েছে। এর আগেও নানাভাবে প্রতিষ্ঠানটি বিপুল রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, মোবাইল অপারেটরগুলো নানাভাবে কর তথা মুসক ফাঁকি দিয়ে আসছে। আমরা তাদেরকে ধরার চেষ্টা করছি। এরই অংশ হিসেবে গ্রামীণফোনের এই ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি ধরা পড়ে। বড় প্রতিষ্ঠান হওয়ায় কর ফাঁকির হারও অন্যদের তুলনায় বেশি। তবে এই অভিযোগ এখন প্রমাণিত। তাই প্রতিষ্ঠানটির কাছে চূড়ান্ত নোটিশ (ডিও) দেয়া হয়েছে। এই টাকা পরিশোধে তারা ১৫ দিন সময় পাবেন।

সূত্র জানায়, এনবিআর ২০১০ সালের এসআরও (এসআরও নং-২০০-আইন/২০১০/৫৪৯-মূসক) অনুযায়ী স্থান ও স্থাপনার ওপর মূসক আরোপ ও একটি ব্যাখ্যা দেয়। এতে বলা হয়, স্থান ও স্থাপনা ভাড়া গ্রহণকারীর ওপর ৯ শতাংশ হারে মূসক প্রযোজ্য। তবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত অনধিক ১৫০ বর্গফুট আয়তনের কোনো স্থাপনা এর অন্তর্ভুক্ত নয়।

কমিশনার মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত গ্রামীণফোনকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়, গত ৩ জুলাই গ্রামীণফোনকে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত স্থান ও স্থাপনা ভাড়া ব্যয়ের হিসাব চেয়েছিল এলটিইউ। প্রতিষ্ঠানটি ১১ জুলাই স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার হিসাব দেয়। সে হিসাব বিশ্লেষণ করে ৬ মাসে ৭ কোটি ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৩০ টাকা ৪০ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি এ ভ্যাট পরিশোধ করেনি। মূসক আইন, ১৯৯১ এর ৩৭ ধারার উপধারা (৩) অনুযায়ী অপরিশোধিত মূসকে সুদের হার ২ শতাংশ। ডিমান্ড নোট জারির পর থেকে এ সুদ প্রযোজ্য হবে। ডিমান্ড নোট জারির ১৫ দিনের মধ্যে ফাঁকিকৃত মূসক রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে চিঠি দেয়া হয়েছে।