সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার : কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওয়ে ফসলি জমির উর্বর মাটি ইটভাটা গিলে খাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা ইটভাটার মালিকদের প্রলোভনে পরে দেদারচে বিক্রি করছে ফসলি জমির উপরিভাগের টপসয়েল মাটি। এতে চরম হুমকিতে ফসলি জমির আবাদ। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এভাবে মাটি কাটায় ফসলি জমির উর্বরতা হারাচ্ছে। দ্রুত মাটি কাটা বন্ধ না হলে কৃষি উৎপাদনে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে।

সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ে ঝিকঝ্যাঁক, ড্রাম চিমনি পদ্ধতির ৯টি ইটভাটি রয়েছে। এসব ইটভাটিতে বছরে কয়েক কোটি ইট পোড়ানো হয়। ইট পোড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় মাটি ভাটির মালিকরা ফসলি জমি থেকে সংগ্রহ করছে। একাধিক ইটভাটিতে মাটি বিক্রির জন্য কৃষি জমি কেটে খনন করা হয়েছে পুকুর। এর ফলে হাজার হাজার একর কৃষি জমির উর্বরতা হারাচ্ছে। ফসলি জমির মালিকরা না বুঝে ইটভাটির মালিকদের প্রলোভনে পরে দেদারচে মাটি বিক্রি করছে।

সুত্রে জানা গেছে, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রন আইন ২০১৩, মাটির ব্যবহার হ্রাসকরন নিয়ন্ত্রন আইনে উল্লেখ রয়েছে ইট প্রস্তুতের জন্য ইটভাটির মালিকরা কৃষি জমি, পাহাড়-টিলা কেটে সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেনা। যদি কোন ব্যক্তি ৫ এ উপধারা (১) এ বিধান লঙন করে ইটভাটি প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে কৃষি জমি বা পাহাড় বা টিলা হতে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে তা হলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বছরের কারাদন্ড বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।

দেখা গেছে, ঈদগাঁওর ইটভাটির মালিকরা এ আইনের তোয়াক্কা না করে ফসলি জমি থেকে মাটি সংগ্রহ করে ইট ভাটির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করছে।

গত মঙলবার সরজমিন ঈদগাঁও আলমাছিয়া কলেজ গেইট, ভোমরিয়া ঘোনা, ইসলামাবাদ হাসের দিঘী, তেতুলতলী,বোয়ালখালী, জালালাবাদের মোহনভিলা, ফরাজিপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, পিকআপ-ডাম্পার বোঝাই করে শ্রমিকরা দেদারচে মাটি কেটে বিভিন্ন ইট ভাটিতে নিয়ে যাচ্ছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, কৃষি জমি’র উপরের ৬ ইঞ্চি থেকে দেড়ফুট পর্যন্ত মাটির উপরিভাগে রাসায়নিক উপাদান থাকে। এ মাটি কেটে নেয়া হলে যেমনি জমি উর্বরতা হারাবে তেমনি ফসল আবাদ বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নোমান হোসেন বলেন, ফসলি জমি কেটে নেয়া ফসল উৎপাদনের জন্য হুমকি কিন্তু জমির মালিকরা না বুঝে মাটি বিক্রি করলে সেখানে করনীয় থাকে না। পাহাড়-খাল-সরকারী খাস জমির মাটি ইটভাটিতে নিয়ে গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।