আনোয়ার হোছাইন, ঈদগাঁও :
 কক্সবাজার  সদরের ঈদগাঁও’র আইন শৃংখলা পরিস্থিতি দিন দিন ভেঙ্গে পড়ছে। লাশ উদ্ধারের রেশ না কাটতেই মহাসড়কস্থ দোকানে দূর্ধর্ষ  ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। এর জন্য সাধারণ জনগণ পুলিশের অবহেলাকে দায়ী করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  বৃহত্তর ঈদগাঁও এলাকার আইন শৃংখলা রক্ষার  স্বার্থে বিগত এক বছর পূর্ব থেকে  ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র আইসি পদে একজন পরিদর্শক , একজন এসআই,অর্ধডজন এএসআইসহ আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা বৃদ্ধি করে জেলা পুলিশ প্রশাসন । কিন্তু সম্প্রতি এলাকার আইন শৃংখলা দিনদিন অবনতির দিকে যাচ্ছে । কোন ভুক্তভোগি পুলিশী সহায়তার জন্য আসলে টাকা ছাড়া এক কদমও  পুলিশ নড়াচডা করেনা বলে অসংখ্য ফরিয়াদির অভিযোগ । তারা পুলিশী হয়রানির ভয়ে ঐসব কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করছেনা।
তাদের অভিযোগ , যেসব কর্মকর্তা বিগত কয়েক বছর ধরে ঈদগাঁওতে কর্মরত রয়েছে তারাই বেশী হয়রানি করছে। তাদের অনেকের ইতিপূর্বে বদলি হলেও মোটা অংকের বিনিময়ে বদলি ঠেকিয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে তাদের দাবি । তাদের সাথে বৃহত্তর ঈদগাঁও এলাকার দাগী অপরাধি, হুন্ডি , ইয়াবা ও মাদকচক্র এবং  দালালদের  গভীর সখ্যতা । যার কারণে ঈদগাঁও এখন অঘোষিত ইয়াবা পাচারের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হলেও পুলিশ এ পর্যন্ত কোন রাঘব বোয়ালকে আটক করেনি।উল্টো তাদের সাথে গভীর রাতে এলাকার বিভিন্ন স্থানে দাওয়াত খাওয়া ও ঘুরাফেরা করতে দেখা যায় এসব কর্মকর্তাদের ।
অন্যদিকে তাদের দেখাদেখি নতুন আসা কর্মকর্তারাও ইদানিং আইন শৃংখলা রক্ষার পরিবর্তে জায়গা জমিনের বিচার শালিশ ও ঈদগাঁওর বিভিন্ন স্থানে অপরাধীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। এমনকি উক্ত চক্রের  সদস্যরা কোন তথ্য দেয়ার সাথে সাথেই  পুলিশ মূহর্তেই টনাস্থলে পৌছে যায়।কিন্তু সাধারণ কোন মানুষ সাহায্য চাইলে যতোক্ষণ নগদ টাকা  বা চুক্তি করেনা ততক্ষণ ফরিয়াদির স্বজনকে মেরে ফেলছে বললেও পুলিশ কর্মকর্তা নড়ে না।এমনকি তার উপরস্থ কর্মকর্তা নির্দেশ দিলেও যায়না এমন ঘটনাও আছে সম্প্রতি ।
এমন অভিযোগও রয়েছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে একজন দীর্ঘদিন ধরে শুধু ইয়াবার চালান আটকে ব্যস্ত । কিন্তু এ পর্যন্ত উল্লেখ্যযোগ্য চালান আটকের কোন সংবাদ নেই।কিন্তু অনেক সময় শুনা যায় বিভিন্ন স্থান থেকে ঐ কর্মকর্তা বড় বড় চালান আটক করেছে । কিন্তু ঐ চালান যায় কোথায়  জনমনে প্রশ্ন ! অপর কর্মকর্তাকে রাত দিন এলাকার বিভিন্ন স্থানে  টুকাই থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ অপরাধীদের ঘরে,দোকানেসহ বিভিন্ন  স্পর্শ কাতরস্থানে আনন্দ উচ্ছাসে মত্ত থাকতে দেখা যায়। বিশেষ করে রাতের বেলায় পেট্রোল ডিউটিতে থাকা কর্মকর্তা দায়ীত্ব পালনের পরিবর্তে ঐ এলাকার চিহ্নিত দালাল চক্রের সাথে খোশ গল্পে জড়িয়ে পড়ার সুযোগে সম্রতি একের পর এক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে । বিগত তিন দিন পূর্বে যুবকের লাশ উদ্ধারের রেশ না কাটতেই গত ২৬ জানুয়ারি রাতে মহাসড়কের ঈদগাঁও কলেজ গেইট ব্যস্ততম ইউনুস সেন্টারে গুলি বর্ষণ করে দোকান ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে দোকান মালিক হুমায়ুন ইসলাম (২৬) গুলি বিদ্ধ হয়।সে ঈদগাঁও পশ্চিম ভাদিতলার গোমাতলী পাড়ার আবদুল হাকিমের পুত্র। ঐদিন ১০/১৫ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতদল হুমায়ুনকে লক্ষ্য করে  গুলি ছুঁড়ে রক্ষিত মালামাল তছনছ পূর্বক নগদ ৩ লক্ষ টাকা, বিকাশ ও ইজিলোডের মোবাইলসহ মালামাল  লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।মডেল থানার ওসি রনজিত বড়ুয়াও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উদ্ধারকৃত লাশ ও ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে
জানতে চাইলে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক  মিনহাজ মাহমুদ ভূঁইয়া জানান, লাশের পরিচয় না পাওয়ায় ২৭ জানুয়ারি বেওয়ারিশ হিসেবে আনজুমানে মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে লাশটি দাফন করা হয়েছে। অপর ডাকাতির ঘটনায় আহত দোকান মালিকের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেএবং ঘটনার দিন সন্দেহ ভাজন হিসেবে আটক দোকান কর্মচারী রায়হান জেল হাজতে রয়েছে বলে জানান।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ বিভিন্ন এলাকার যাদেরকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করছে তাদের মাধ্যমে  অপরাধীদের কবজায় আনার পরিবর্তে নিজের পকেটভারীর কাজেই ব্যবহার করাতে এলাকার অাইন শৃংখলা দিনদিন নাজুক হয়ে পড়ছে।কারণ ঐ সোর্সের মাধ্যমেই অপরাধীরা পুলিশের অবস্থান জেনেই অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে । এক্ষেত্রে দীর্ঘ দিন ঈদগাঁওতে কর্মরত কর্মকর্তারাই বেশী বেপরোয়া । তাই সচেতন মহল এলাকার আইন শৃৃংখলা উন্নয়নের স্বার্থে তদন্ত পূূূর্বক  ঐ  সব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উর্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।