ডেস্ক নিউজ:

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারসহ মিয়ানমার থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে। পাশাপাশি ওই এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। এতে ব্যয় হবে ১৪১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।

একনেক সভা মোট ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে প্রকল্পগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

‘কক্সবাজার জেলার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নতের জন্য উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদ বরাবর পোল্ডারসমূহের (৬৭/এ, ৬৭, ৬৭বি এবং ৬৮) পুনর্বাসন’ শীর্ষক এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪১.৬৫ কোটি টাকা। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদকালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্প এলাকা হচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলা।

প্রকল্পটি সম্পর্কে বলা হয়, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার পূর্ব দিকে মিয়ানমার অবস্থিত। টেকনাফ-উখিয়া ও মিয়ানমারের মাঝ বরাবর নাফ নদ প্রবাহিত। নাফ নদের ডান তীর বরাবর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্মিত পোল্ডার নং-৬৭/এ, ৬৭, ৬৭/বি এবং ৬৮ এর আওতায় ৪৭.৬০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং ৪৬টি পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো রয়েছে। যার মূল উদ্দেশ্য হলো- প্রকল্প এলাকায় নাফ নদের লোনা পানির প্রবেশ রোধসহ বন্যা ও উচ্চ জোয়ার হতে প্রকল্প এলাকায় শস্য ও জানমাল রক্ষা করা। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও পানি নিষ্কাশন অবকাঠামোসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কর্তৃক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতেও ওই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু বাঁধসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় থাকায় বর্তমানে মোটরযান দ্বারা বিজিবি সদস্যদের সীমান্ত টহল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাই প্রকল্পটি হাতে নেয়া
হয়েছে।

প্রকল্পটির আওতায় ৬০.৬০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পুনর্বাসন/পুননির্মাণ, আটটি পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ এবং ৪৬টি পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো মেরামত করা হবে।

অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- এক হাজার ৫২১ কোটি ৭৬ টাকা ব্যয়ে ‘বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, কুমিল্লা জোন’ প্রকল্প। ‘পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলের সংযোগ নদী খনন, সেচ সুবিধার উন্নয়ন এবং মৎস্য চাষ (তৃতীয় সংশোধিত, প্রস্তাবিত)’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪৮৪
কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

‘বাংলাদেশে মসলা জাতীয় ফসলের গবেষণা জোরদারকরণ’ প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ৯৪ কোটি টাকা। ‘বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-তৃতীয় পর্যায়’ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৫১ কোটি টাকা।

‘মরজাল-বেলাব সড়ক ও পোড়াদিয়া-বেলাব জেলা মহাসড়ক দুটি যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ১০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বগুড়া শহর থেকে মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (এন-৫১৯)’ প্রকল্প। ‘জিএমডিএসএস এবং ইন্টিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম স্থাপন’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪৫৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থল বন্দর উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। ‘ইন্ট্রোডাকশন অব মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এবং মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৭১৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ বাস্তবায়ন (ভ্যাট অনলাইন)’ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩১৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

‘বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারকে শক্তিশালীকরণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪০ কোটি ৬৯ কোটি টাকা। এছাড়া ১৩৩ কোটি ১১ লাখ ব্যয়ে ‘কেমিকেল মেট্রোলজি অবকাঠামো সমৃদ্ধকরণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।