ইফতেখার শাহজীদ, কুতুবদিয়া
কুতুবদিয়া ভূমি অফিসে দুর্নীতি বেড়েছে। দিনের ভূমি অফিসে রাতেও চলে কাজ কর্ম। তবে, সরকারী প্রয়োজনে নয়, নিজের প্রয়োজনে রাত অবধি খোলা রাখা হয় সরকারী এই অফিস।

অভিযোগ উঠেছে, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তহশীলদার গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে রুজুকৃত বিভাগীয় মামলা নং-০৩/২০১৭ অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে।

১৮ জানুয়ারী কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে (সংস্থাপন শাখায়) হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সংস্থাপন শাখা হতে প্রেরিত ০৫.২০.২২০০.১০৮.০৩.০৭০.২০১৭-৩৭ তারিখ: ১০/০১/২০১৮খ্রিঃ স্বারকের নোটিশ সুত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন যাবত একই কর্মস্থলে থাকার সুবাধে ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা প্রত্যেকেই জিম্মি হয়ে পড়েছেন এই তহশীলদার গিয়াস উদ্দিনের নিকট।

পূর্বের চাহিদা হাজার-দু’য়েক হলেও বর্তমানে পাঁচ হাজার টাকার নিচে কোন প্রতিবেদনই করেননা এই তহশীলদার। জমির পরিমাণের উপর নির্ভর করে টাকার অঙ্ক। জমির পরিমাণ যত বেশী হয় টাকার অঙ্কও সেই অনুপাতে বাড়ে। অতিরিক্ত টাকা ঘুষ দিলে সৃজনকৃত খতিয়ানের পার্শ্ববর্তী অন্য খতিয়ানের জমিও আবেদনকারীর নামে সৃজন করে দেন এ তহশীলদার। উপরোক্ত কথাগুলো বললেন, আদালতের ডিগ্রী মূলে ১৮৫ (১)/১৭ নাম্বার জমাভাগ মামলা সৃজনের আবেদনকারী ষাটোর্ধ জামাল উদ্দিন।

জামাল উদ্দিন আরও বলেন, তার আবেদনটি বিভিন্ন অজুহাতে আটকে রাখেন তহশীলদার গিয়াস উদ্দিন এবং বিভিন্নভাবে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন। ঘুষ না দিলে প্রতিবেদন হবে না বলেও পরিষ্কার জানিয়ে দেন। তাই তিনি কোন উপায় না দেখে উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার বরাবরে অভিযোগ করতে বাধ্য হন। জামাল উদ্দিন ছাড়াও আরো অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, কুতুবদিয়া ভূমি অফিস বিশেষ করে তহশীলদারের অফিসটিতে চলছে দালালদের রামরাজত্ব। দালালের দাপটের কারনে কোন সেবা প্রার্থী নিজের প্রয়োজনীয় কাজটি করতে বিভিন্ন সমস্যায় নিপতিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এমনকি দালাল ছাড়া কোন কাজ এই পর্যন্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন অনেকেই। এই অফিসে সহজেই কাজ আদায় করতে দালালের প্রয়োজনীয়তা যে অপরিসীম তা অত্র অফিসে না গেলে বুঝাই যাবে না। এই অফিসে টাকাই একমাত্র কাজ আদায়ের মাধ্যম বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

ভূমি অফিসের কার্যালয় খোলা থাকে সপ্তাহে ২দিন
কুতুবদিয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) গিয়াস উদ্দিন নিয়মিত কার্যালয়ে থাকেননা। সপ্তাহে মাত্র ২ দিন অফিস করেন তিনি। রবিবার সকাল থেকে এই কর্মকর্তার কার্যলয়ে এসে বসে ছিলেন উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের বৃদ্ধ নুরুল কবির। তিনি সকাল থেকে বসে থাকলে দেখা পাননি ওই কর্মকর্তার। বৃদ্ধ জানালেন নিচের ফটক খুলে দিয়ে অন্যান্য কর্মচারিগন নিরুদ্দেশ হয়ে গেছেন। তিনি তহশীলদারের আশায় দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। এ বৃদ্ধের মত আরো অনেকে জানিয়েছেন, তহশীলদার গিয়াস উদ্দিন মাঠে প্রতিবেদন করতে গেছেন নাম ভাঙ্গিয়ে দিনের পর দিন অফিস ফাঁকি দিয়েছেন। যার ফলে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জমিনের খাজনা দিতে আসা ব্যক্তিরা বারবার ফিরে গেছেন। তাছাড়া গিয়াস উদ্দিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নিজেকে বড় মাপের একজন কর্মকর্তা হিসেবে জাহির করতে অভ্যস্থ হয়ে গেছেন। কুতুবদিয়ার দুই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী এ কর্মকর্তা কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে দাপটের সাথে দূর্নীতি করে যাচ্ছেন কুতুবদিয়ায়।