মাননীয়,
প্রধানমন্ত্রী
মাদার অফ হিউম্যানিটি,
শেখ হাসিনা।

পত্রের শুরুতে আপনার প্রতি রহিল অধম নাখান্দা নালায়েক নগন্য বান্দা “দেওয়ান ফরিদ গাজীর” শত কুঠি সালাম ও দোয়া। অাশা করি অাপনি মহান রাব্বুল আলামিনের রহমতে ছহি সালামতে আছেন। আমরাও শীতে বানে জবু থবু হইয়া বাঁচিয়া অাছি।
পর সমাচার এই যে, ৬৮ হাজার গ্রাম বাংলার মধ্য অায়ের দেশের স্বপ্ন দেখা মানুষের দুঃখ দুর্দশা নিয়া আপনার দরবারে অামার লেখা খোলা চিঠির অাজকে তৃতীয় পর্ব লইয়া হাজির হইলাম।
মানবতার মাগো, একখানা বেখাপ্পা কথা কিছুতেই মানিয়া নিতে পারছি না। অাপনি নাকি শীতের ডরে মহেশখালীর ২৫ জানুয়ারি মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ উদ্বোধন ও সফর বাতিল করিয়াছেন। কিন্তু এখানকার লোকেরা মন্তব্য করিতেছে, আপনার জনসভার স্থান ও ভেন্যু লইয়া কয়লা বিদ্যুতের এলাকার নেতাদের ময়লা ছুড়াছুড়ি নাকি অাপনি জানিয়া গেছেন। তাই সফর বাতিল বা স্থগিত করিয়াছেন। অাপনার সফর বাতিলের বিষয়ে দুইএক জন নেতা খুশি হইতে পারিলেও লক্ষ জনতা নাখোস হইয়াছেন। স্থগিত সফরটি ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হইতে পারে মর্মে অাপনার কার্যালয়ের অাশ্বাসে এখানকার মানুষ গুলো অাশায় বুক বাঁধিয়া অাছে। অাপনি অাসেন, দেখিয়া যান, অাপনার মেগা প্রকল্পের এলাকার রাস্তা ঘাট, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থার কি নাজুক অবস্থা।
অাপনার জনসভার ভেন্যু পরিবর্তনের চেষ্টার কারণে সফর বাতিলের বিষয় নিয়া আপনার কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য চৌদ্দ পুরুষের ভিটেমাটি দেওয়া মাতারবাড়ির মানুষ ক্ষুব্ধ হইয়াছেন। আপনি আগামীতে যখনই অাসেন না কেন, মাতারবাড়িতেই জনসভা করার দাবি জানিয়েছেন। তাতে বাস্তুহারা মানুষ খুশি হইব। অামাদের কক্সবাজারের সাংবাদিক অাহমদ গিয়াস অাপনারে শীত কাইল্যা দাওয়াত দিয়া কহিল, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নাকি কক্সবাজারেই। তাই আপনি কিছুদিনের জন্য বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত কক্সবাজারে নাইয়র অাসেন। সাথে পুতুল, জয়, ক্রিস্টিনাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও নিয়া আসিবেন। আমরা আপনাদের আপ্যায়িত করব শীতের পিঠা, সামুদ্রিক তাজা মাছ ও মহেশখালীর মিষ্টিপান দিয়ে। কয়েক দিন এখানেই থাকুন।  শীত ও কুয়াশার প্রকোপ থেকে ভালই থাকবেন। আপনার যতসব মেগা প্রকল্পের এলাকা মহেশখালী তথা কক্সবাজারের জনগণও খুব উৎফুল্ল হইবে। খুশি হইব যাদের জন্য মাদার অফ হিউম্যানিটি খেতাব পাইয়াছেন সেই মজলুম রোহিঙ্গারাও। ভোটের অংকেও আপনার কক্সবাজারে অবস্থান ভাল ফলদায়ক হইতে পারে।
মানবতার মা জননী গো,
দেশে চলমান একটা কর্মসূচী লইয়া অাপনার দরবারে ৬৮ হাজার গ্রাম বাংলার শিক্ষিত অশিক্ষিত লক্ষ কোঠি বেকারদের অাকুতির একখানা ফরিয়াদ অাপনারে না কহিয়া অার পারিতেছি না। কথাটা হইল, ডিজিটাল যুগের অাদম শুমারি স্টাইলে সারা দেশে “খানা তথ্য ভান্ডার জরিপ” করিতেছেন ভাল কথা। তাতে দেশে কত জন কর্মজীবি কত জন বেকার তাও জানা যাইব। অামার মনে হয়, গত কয়েক বছরে যেই হারে মানুষ অবৈধ পথে জীবনের ঝুকি নিয়া উত্তাল সাগরে ঝাপ দিয়া বাঁচিয়া মরিয়া মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়াছে তাতে বুঝা যায়, দেশে এখন বেকারের সংখ্যা বেমালুম বাড়িয়া গিয়াছে। বেকার মানুষ গুলো গণনা করিয়া লাভ কি হইব যদি তাদের কর্ম সংস্থান না হয়। এই জন্য আপনার কাছে একখানা দাবী জানাইতেছি, খানা তথ্য ভান্ডার জরীপের পর দেশে যত শিক্ষিত অর্ধ শিক্ষিত বেকার অাছে তৎমধ্যে প্রতি পরিবারের অন্তত একজন সদস্যকে তাদের যোগ্যতা অনুসারে যদি চাকুরির ব্যবস্থা করিয়া দিয়া একটি যুগান্তকারি পদক্ষেপ নেন, তাহাতে  অাপনার ও সরকারের জন্য কোঠি জনতা দুই হাত ভরিয়া দোয়া করিবেন।
মান্যবর সুযোগ্য নেত্রী গো,
দেশ পরিচালনায় সুযোগ্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অাপনার কাছে অার একখানা ফরিয়াদ জানাইতেছি যে, লাল নীল বেগুনী বাবা ট্যাবলেট গুলির যন্ত্রণা অার সহ্য হইতাছে না। এই অদম্য মাদকের থাবায় দেশের যুব সমাজের অবস্থা কাহিল হইয়া যাইতেছে। আপনার পুলিশ বাহিনীও বলিতেছে, ইয়াবা বন্ধ করা সম্ভব নয়। কিন্তু অামরা একথা মানিয়া নিতে পারিতেছি না। দেখিতেছি, ইয়াবার চোরাচালান প্রতিরোধ বা বন্ধ করার চেয়ে উদ্ধার বেশী। মনে হইতেছে, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে ককস বাজার এলাকায় জলে স্থলে অাপনার যত বাহিনী নিয়োজিত অাছে, তারা সস্তায় বাহবা অার পদোন্নতি নেওয়ার জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে মালিকসহ অাবার কোন ক্ষেত্রে মালিক বিহীন লক্ষ লক্ষ ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করিতেছে। যদি শতভাগ না হলেও কার্যত দৃশ্যনীয় নির্মূল করা না যায় তবে এত বেশী বেশী উদ্ধার মার্কা নিয়ন্ত্রণ দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে অানা অসম্ভব। তাই  দেশ ও জনগণের স্বার্থে একটি ফরিয়াদ জানাইতেছি যে, কঠোর হাতে মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্তত ককস বাজার জেলায় অাপনার বিশ্বস্ত বাহিনী সেনা বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। অাশা করি সেনা বাহিনীর হস্তক্ষেপে মায়ানমার থেকে মাদক ঢুকার পথ বন্ধ হইবে।
পরিশেষ অাপনার সরকারের সফলতা ও অাপনার দীর্ঘায়ু কামনা করিয়া অাজকের মত বিদায় নিলাম। খোদা হাফেজ।

তারিখ- ১৬ জানুয়ারি-২০১৮ ইং
     ইতি-
৬৮ হাজার গ্রাম বাংলার জনগনের খাদেম
অধম দেওয়ান ফরিদ গাজী।