ডেস্ক নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ শহরে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল তাই সত্য হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মঙ্গলবার বিকালে বন্দর নগরীর আহত হয় অন্তত ৫০ জন। এদের একজন স্বয়ং মেয়র আইভী।

ডিসেম্বরের শেষ দিকে নগরী থেকে হকার উচ্ছেদ করেছিল সিটি করপোরেশন। আর তাদেরকে বসতে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন শামীম ওসমান। সোমবার তিনি মেয়রকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, হকাররা নারায়ণগঞ্জে বসবে, এটা তার অনুরোধ নয়, এটা তার নির্দেশ। মেয়র আইভীও জবাব দেন এভাবে যে, নারয়ণগঞ্জ শহর শামীমের এলাকা না। এখানে তার নির্দেশ চলবে না।

দুই নেতার অনঢ় অবস্থানের কারণে সকাল থেকেই নগরীতে ছিল উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। চাষাঢ়ায় শহীদ মিনার এলাকায় অবস্থান নেয় পুলিশও।

বিকাল ৪ টা ১৮ মিনিটে নগর ভবনের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও কাউন্সিলরদের নিয়ে অবস্থান নেন মেয়র আইভী। ওখান থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম আবু সুফিয়ান আইভীর পক্ষে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন করে চাষাড়ার দিকে আসতে থাকেন। পরে নেতাকর্মীদের নিয়েই আইভী হকার উচ্ছেদ করতে করতে চাষাড়ার দিকে আসতে থাকেন।

এসময় আইভীর সঙ্গে সিটি করপোরেশন কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন।

অপর দিকে হকার এবং শামীম ওসমানের অনুসারীরা অবস্থান নিয়েছিলেন চাষাঢ়া শহীদ মিনারে। আইভী যখন চাষাঢ়া সায়েম প্লাজার সামনে আসেন, তখন শামীম ওসমানের লোকজন আইভীর লোকজনদের বাধা দেয়। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে মেয়র আইভী, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফুদ্দীন সবুজ ও শামীম ওসমানপন্থী মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জুয়েল হোসেনসহ অর্ধশতাধিক নেতা কর্মী আহত হন।

পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আর কয়েকশ পুলিশ এসে দুই পক্ষকে দুই দিকে সরিয়ে দেয়।

বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে চাষাঢ়া রাইফেলস ক্লাব থেকে বের হন শামীম ওসমান। নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি চাষাঢ়া সায়াম প্লাজা পর্যন্ত শোডাউন করেন।

এর আগে আইভী তার নেতাকর্মীদের নিয়ে চাষাড়া ত্যাগ করেন। পরে শামীম ওসমান রাইফেলস ক্লাবে ফিরে যান।

এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সকল মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়। যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।