ইমাম খাইর, সিবিএন:
পশ্চাত্যে ইসলামের প্রতি বিভিন্ন ধর্মাবলম্বিদের আকর্ষণ বেড়েছে। ইসলামের বিরোধীতা করেছে এমন ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে। ইংল্যান্ডে ১ লাখের বেশী সাদা চামড়ার লোক মুসলমান হয়েছে। যাদের অধিকাংশ সেই দেশের উচ্চশিক্ষিত শ্রেণীর। মূলতঃ বিরোধীতা করতে গিয়েই ইসলামকে জেনেছে তারা।
কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত ‘পশ্চিমে ইসলাম : প্রেক্ষিত ইংল্যান্ড’ শীর্ষক সেমিনারে ইংল্যান্ডের টিভি ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক ডক্টর মাহমুদুল হাসান আল আজহারী কথাগুলো বলেন।
১৪ জানুয়ারী রাতে শহরের অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। দারুল আরক্বম তাহফিজুল কুরআন মাদরাসা সেমিনারটি আয়োজন করে।
প্রধান আলোচক ডক্টর মাহমুদুল হাসান বলেন, ইসলামই মহিলাদের অধিকার দিয়েছে। ইসলামের সংস্পর্শ পেয়ে নগ্ন মহিলারা নিজেদের সম্মান সম্ভ্রম রক্ষা করতে শিখেছে।
তিনি বলেন, ইসলাম দমিয়ে রাখার আদর্শ নয়। ইংল্যান্ডে মুসলমানরা আজ দ্বিতীয় অবস্থানে। দিন দিন ইসলামের প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে। যত বিরোধীতা করা হবে ততই ইসলামের সৌন্দর্য্য প্রকাশ পাবে। ইসলামের আদর্শ ধ্বংস হবার মতো নয়। জর্জ বর্ণার্ডশ নিজেই স্বীকার করে বলেছিলেন- ‘আগামী শতাব্দি হবে ইসলামের।’ সুতরাং ইসলামকে বেশী করে জানতে হবে মানতে হবে।
তিনি বলেন, সুন্দর আচরণ দিয়েই ইসলাম বিরোধীদের জবাব দিতে হবে। সব মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। সে জন্য ইংরেজি ভাষাসহ আন্তর্জাতিক ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ভাষার দখল ছাড়া ইসলামকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া যাবেনা। দ্বীন প্রচার প্রসারে ভাষাগত দক্ষতার বিকল্প নাই।
নিজেদের মধ্যে দ্বিধা দ্বন্দ ভুলার আহবান জানিয়ে আল্লামা মাহমুদুল হাসান আল আজহারী বলেন, আমাদের চিন্তার চেতনার পার্থক্য থাকতে পারে, সেগুলো মিডিয়ায় প্রকাশ করা উচিৎ নয়। দ্বন্দপূর্ন বিষয়ে উম্মুক্ত আলোচনা বন্ধ করতে হবে। তাতে ইসলামের লাভের চেয়ে ক্ষতি হচ্ছে বেশী। যে দেশের মানুষ ৯০ শতাংশ হালাল-হারাম বোঝে না, তাদের সামনে ‘নামাজে হাত তোলা আর না তোলা’ নিয়ে আলোচনা বিরোধ বাড়াবে। সমাজে অস্থিরতা বাড়াবে। এসব অমূলক কাজ বন্ধ করা দরকার।
খ্যাতনামা এই আলোচক বলেন, পশ্চিমা মিডিয়াগুলোতে ইসলাম বিরোধী প্রচার প্রোপাগান্ডা অব্যাহত রয়েছে। মিথ্যা অভিযোগে মুসলমানদের ধ্বংস করার অপচেষ্টা চলছে। পশ্চিমা মিডিয়াতে ইসলামকে বিতর্কিত একটি ধর্ম হিসেবে উপস্থাপনের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। এসব বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকা দরকার।
দারুল আরক্বম তাহফিজুল কুরআন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুছ ফরাজির স্বাগত বক্তব্যে সেমিনার আরম্ভ হয়।
মাওলানা নুরুল আলম আল মামুনের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা ইয়াছিন হাবীব, মাওলানা মুহাম্মদ আলী নাজির, জামাল উদ্দিন তাওহীদ প্রমুখ।
প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন সাংবাদিক আবদুল্লাহ নয়ন, ইমাম খাইর, ইব্রাহিম ছিদ্দিকী, জাহেদুল্লাহ আনচারী, মাওলানা ইয়াকুব প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন এডভোকেট হাফেজ রিদওয়ানুল কবির।
সেমিনারে শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, সাংবাদিক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
ডক্টর মাহমুদুল হাসান আল আজহারী জ্ঞানের মধু পিপাসু মৌমাছি হয়ে জ্ঞান আহরন করেছেন বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ইলমী বাগান জামেয়া আহলিয়া হাটহাজারী। পড়েছে জামেয়া ইসলামীয়া পটিয়ায়।
ইলমের ফুল হয়ে ফুটেছেন- সুরভী সুঘ্রাণ বিলিয়েছেন অকাতরে জামেয়া ইসলামীয়া পটিয়া, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তিনি জ্ঞানের বহমান স্রোতে আবগাহন করতে ছুটে গিয়েছেন মিশরের জামেয়া আল আজহারে।
জ্ঞানে বিজ্ঞানে মাখামাখি হয়ে বিদগ্ধ আল্লামা বনে এখন থিতু হয়েছেন ইংল্যান্ড এর এসেক্সে।
মসজিদের ইমাম হিসাবে আলোকিত মশাল হয়ে আলো ছড়িয়ে সিরাতুল মুস্তাক্বিমের পথ দেখাচ্ছেন পশ্চাত্যের দিকহারা সমাজকে।