শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমে দুই ইউএনওকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে উখিয়া টিভি সম্প্রচার কেন্দ্রের বিপরীতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অস্থায়ী তৈরী ঘুমধুম রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ওই হাসপাতালটি নরওয়ে ও ফিনল্যান্ডের অর্থায়নে ১০জন ডাক্তার ও ৪০জন নার্স দ্বারা রেডক্রিসেন্ট পরিচালনা করছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গা নাগরিক আবদুর রহিমের তাঁবুতে জ্বলন্ত মোম থেকে অগ্নিকাণ্ডে তাঁর স্ত্রী ঘুমন্ত নূর সাবা (৩০), ছেলে আমিন শরীফ (৮), দিলশান বিবি (১২) ও আসমা বিবি (৫) আগুনে পুড়ে আহত হয়।

তাদের দ্রুত উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী ঘুমধুম রেডক্রিসেন্টের অস্থায়ী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই মারা যান তারা।

কিন্তু এ ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট এলাকার কোন প্রশাসনকে অবহিত না করে গোপনে লাশ দাফনে সহায়তা করে হাসপাতাল কতৃপক্ষ।

এদিকে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি যাচাই করতে হাসপাতালে যান নাইক্ষ্যংছড়ি ইউএনও এস.এম সরওয়ার কামাল ও উখিয়া ইউএনও নিকারুজ্জামান।

প্রথমে পকেট গেইটের সামনে অবস্থানরত সিকিউরিটি গার্ড দুই ইউএনওকে সদর গেইট অতিক্রম করতে দিলেও মাঝপথে নরওয়ের ডেলিগেট নুরান নামে এক বিদেশী নাগরিক দুই ইউএনও’র সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ করে গেইট থেকে বের করে দেন।

এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিকারুজ্জামান এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে রোহিঙ্গার মৃত্যুর বিষয়টি প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ইউএনও স্যারসহ রেডক্রিসেন্ট হাসপাতাল গেলে জনৈক অস্ট্রেলিয়ান এক নাগরিক (টিম লিডার) আমাদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ করেন।’ বিষয়টি ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের উচ্চ মহলে অবহিত করা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম সরওয়ার কামাল জানান, রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালটি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সীমানায়। অগ্নিকাণ্ডে রোহিঙ্গার মৃত্যুর বিষয় জানতে গিয়ে দুই জন ইউএনও’র সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণকে লাঞ্ছনা হিসেবে মনে করছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে জানতে ঘুমধুম রেডক্রিট হাসপাতালে বাংলাদেশী স্টাফদের জন্য দায়িত্বে নিয়োজিত কো-অর্ডিনেটর ডা. বেলাল হোসেন বলেন, বিদেশী ওই নাগরিক প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে চিনতে পারেনি। প্রশাসনের লোকজনকে প্রবেশে বাধা বিষয়টি সত্যিকারার্থে দুঃখজনক। তাই রোববার জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সামনে দুই ইউএনওর কাছে ওই বিদেশী নাগরিক ক্ষমা চাইবেন।