আবদুল মজিদ, চকরিয়া:

চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে চকরিয়া থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপন দাবী করে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে সংঘবদ্ধ চক্র। জিম্মাদশা থেকে  ১৩ জানুয়ারী ভোর রাতে প্রাণ রক্ষায় সুকৌশলে পালিয়ে আসা নির্মম নির্যাতনের শিকার হাফেজ মো: রিদুয়ান (২৮) লোমহর্ষক কাহিনী পরিবারের সদস্য ও সাংবাদিকদের কাছে বর্ণনা করেন। হাফেজ মো: রিদুয়ান চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মছনিয়াকাটা গ্রামের মৌলানা মোবারক আলীর পুত্র।

নির্মম নির্যাতনের শিকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাফেজ মো: রিদুয়ান জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে ভাল বেতনে মসজিদ ও হেফজখানায় চাকুরীর কথা বলে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক মোবাইল থেকে তাকে ফোন করেন। চাকুরীর আশায় গত ১২ জানুয়ারী জুমার নামাজের পর চকরিয়া থেকে গাড়ীতে উঠে মগরিবের সময় চট্টগ্রামের মুরাদপুর পৌছেন। মুরাদপুর থেকে একটি সিএনজি (অটোরিক্সা) যোগে হাতিয়াবাদ পৌছেন। সেখান থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের ৩জন যুবক তাকে (হাফেজ রিদুয়ান) আরেকটি সিএনজি গাড়ী যোগে প্রায় দু’য়েক ঘন্টা চালিয়ে পাহাড়ের গহীন অরন্যে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অজ্ঞাত ৪/৫জন যুবকের সাথে আকর্ষ্মিকভাবে দেখতে পান চকরিয়ার গ্রামের বাড়ি এলাকার মৃত আবদুল্লাহ’র পুত্র মুজিদুল হাসানকে। তাকে একটি কক্ষের দরজা বন্ধ করে বেধম মারধর ও ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাড়িতে মা-বাবা ও ভাইয়ের কাছে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপন এনে নেওয়ার কথা বলেন। এসময় মুজিদুল হাসান তার ভাস্যে পারিবারিক পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাকে প্রাণে হত্যার জন্য চাকুরীর প্রলোভন দিয়ে অপহরণকারী চক্রের হাতে কিডনিসহ শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে হস্তান্তর করে দিয়েছেন বলে হুশিয়ারী দেন। হাফেজ মো: রিদুয়ান জানিয়েছেন, তাকে হত্যা করার কথা বলে মনে কি কি চাহিদা আছে জানতে চাইলে সে পানি ও খাবার খাওয়ার কথা বলেন। এক পর্যায়ে রাত অনুমানিক ১১টার দিকে পানি ও খাবারের জন্য গেলে সে আটকাবস্থা থেকে শরীরের কাপড়-চোপড় বিহীন নদীপথ ও পাহাড়ের ঝিড়ি দিয়ে পালিয়ে গিয়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরিবারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে চকরিয়াগামী একটি গাড়ীতে তুলে দেন। হাফেজ মো: রিদুয়ানের মা লুৎফুন্নেছা জানিয়েছেন, ভোর সকাল ৫টার দিকে তার ছেলেকে একটি গাড়ী থেকে মুমুর্ষ অবস্থায় বুঝে নিয়ে সকালে চকরিয়া সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করান। বিকাল সাড়ে ৫টা পযর্ন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার্থে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করেন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের গুরুতর চিহ্ন রয়েছে।এঘটনায় তারা মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান। এদিকে অভিযুক্ত মুজিদুল হাসানের ভাই মহিউদ্দিন প্রকাশ কানা মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে বরইতলী মছনিয়াকাটা গ্রামে দা বাহিনী নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে বলে জানাগেছে।