বিশেষ প্রতিবেদক :

কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকায় বিদেশি পর্যটকবাহী এক বাসে ভাঙচুর চালিয়েছে দুই পুলিশ সদস্য। এঘটনায় জড়িত সুমন ত্রিপুরা ও জহিরুল হক নামের ওই দুই পুলিশ সদস্যকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের জিম্মায় আটক রাখা হয়েছে। শুক্রবার রাত ৮টায় কলাতলী মোড় এলাকায় এঘটনায় ঘটে।

সাভারের বাংলাদেশ হেলথ প্রফেশন্স ইনস্টিটিউটের রিহাবিলিটেশন সাইন্স বিভাগের কর্মকর্তা লোকমান হোসেন জানান, তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাস্টার্সের ৪র্থ ব্যাচের ১৭ জন বিদেশি শিক্ষার্থীসহ ৪০ জন শিক্ষাসফরে কক্সবাজার আসেন। তাদের মধ্যে শ্রীলঙ্কা, নেপাল, আফগাগিস্তান ও ভূটানের নাগরিক রয়েছে।

শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে তারা টেকনাফ থেকে ফেরার পথে তাদের বহনকারী বাসটি কক্সবাজার শহরে প্রবেশের সময় কলাতলী মোড়ের ডলফিন চত্বরে পৌঁছায়। ওই সময় বিপরীতমুখি শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস তাদের বাসকে ধাক্কা দেয়।

বাসের ধাক্কা খেয়ে তাদের বিদেশি পর্যটকবাহী বাসটি পাশের একটি ইজিবাইকে ধাক্কা খায়। ওই সময় তাৎক্ষণিক সাদা পোশাকধারী দুই ব্যক্তি নিজেদের দাঙা পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিদেশি পর্যটকবাহী বাসটি আটকে দেন।

এক পর্যায়ে ওই দুই পুলিশ সদস্য উত্তেজিত হয়ে পর্যটকবাহী বাসের সামনে অংশের বামপাশের গ্লাসে ইট নিক্ষেপ করেন। এতে বাসের কয়েকটি গ্লাস ভেঙে যায়। আতঙ্কিত হয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা।

লোকমান হোসেন বলেন, এরপরও ক্ষান্ত হননি ওই দুই পুলিশ সদস্য। বিদেশি শিক্ষার্থী পর্যটক ও শিক্ষকদের মারধর করতে উদ্যত হন দুই পুলিশ সদস্য। এসময় তারা আশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে জিম্মি করে কলাতলী মোড় থেকে বিদেশি পর্যটকবাহী বাসটি সুগন্ধা মোড় এলাকায় নিয়ে আসেন।

এরই মধ্যেই বিদেশি পর্যটকবাহী বাসের যাত্রীরা ঘটনাটি শিক্ষা মন্ত্রণলায়ের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন। পরে রাত ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের পর্যটন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যদের জিম্মিদশা থেকে পর্যটকবাগী বাস ও যাত্রীদের উদ্ধার করেন। পরে ওই পুলিশ সদস্যকে আটক করেন।

তবে অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদম্য সুমন ত্রিপুরা ও জহিরুল ইসলাম বিদেশি পর্যটকবাহী গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তারা দাবি করেন, তাদের ইজিবাইককে বিদেশি পর্যটকবাহী বাসটি ধাক্কা দিলে একজন গুরুতর আহত হন। এসময় উত্তেজিত জনতা ওই বাসটিতে ভাঙচুর চালায়।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় জানিয়েছেন, অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে আটক করে কক্সবাজার সদর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।