বান্দরবান প্রতিনিধি :

বান্দরবানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগে পৌর পানি সরবরাহের নামে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে ৩৯ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকল্প দুটি হচ্ছে- ৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে বান্দরবান পৌর পানি সরবরাহের প্রি-সেটেলিং ও গোল ট্যাংক এর জমে থাকা স্লাজ, বালি ও কাদা মাটি পরিস্কার করণ ও প্রয়োজনীয় মেরামত কাজ এবং ৩১ লাখ ৫ হাজার টাকা ব্যয়ে বান্দরবান জেলার ক্যাচিংঘাটাস্থ পৌর এলাকার পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনার সাবস্টেশন ও পাম্প হাউজের জরাজির্ন এইচটি ও এলটি মেরামত (বিভিন্ন সাইজের ক্যাবল দ্বারা) পরিবর্তন ও নতুন মোটর ক্রয়সহ নবায়ন করণ। দুটি কাজের টেন্ডার ফরম ড্রপিং এবং বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে রতন সেন তঞ্চঙ্গ্যা লাইসেন্সে। তবে লাইসেন্সের স্বত্তাধিকারী রতন সেন তঞ্চঙ্গ্যা প্রতিবেদক’কে জানিয়েছেন, কাজগুলোর ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেননা। তবে অফিস থেকে শোনেছি দুটি কাজের মধ্যে একটি মো: জহির উদ্দিন বাবর এবং আরেকটি নেজাম শরীফ করেছেন। ক্যাচিংঘাটাস্থ পৌর পানি সরবরাহ স্টেশনে গিয়ে উন্নয়ন কাজ দুটির হদিস পাওয়া যায়নি।

পাম্প হাউজের কর্মচারী মং এসিং বলেন, গত বছর টাঙ্কির কাদা মাটি পরিস্কার করা হয়েছিল। পানি পরিস্কারের জন্য কিছু পাথরও টাঙ্কিতে দেয়া হয়েছিল। এছাড়াও ৫টি পানির মটর পরিবর্তন এবং পাম্প হাউকের কিছু ক্যাবল সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ কত টাকার সেটি জানিনা।

নাম প্রকাশে অনিশ্চুক কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, টাঙ্কির কাদা মাটি পরিস্কার এবং পাম্প হাউজের জরাজির্ন এইচটি ও এলটি মেরামত দুটি কাজই হচ্ছে লোপাট প্রকল্প। লোক দেখানো টুকিটাকি কাজ দেখিয়ে প্রায় ৩৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ঠিকাদার’সহ সংশ্লিষ্টরা। নামে বেনামে এমন অনেক প্রকল্প দেখিয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগে কর্মকর্তাদের যোগ সাজতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন নির্বাহী প্রকৌশলী সোহারাব হোসেনের পছন্দের মুষ্টিমেয় কয়েকজন ব্যক্তি। ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতাও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের অনিয়ম দূর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সিন্ডিকেটের বাহিরে সাধারণ কোনো ঠিকাদার উন্নয়ন কাজের টেন্ডারের অংশ নিতে পারেনা। অগ্রীম টাকা নিয়ে উন্নয়ন কাজ ভাগ-বাটোয়ারা করে দেয়া হয়।

তবে ঠিকাদার জহির উদ্দিন বাবর জানান, গোল ট্যাংকের জমে থাকা স্লাজ, বালি ও কাদা মাটি পরিস্কার করণ ও প্রয়োজনীয় মেরামত কাজটি রতন সেন তঞ্চঙ্গ্যা লাইসেন্সের নামে করেছি। গতবছর কাজ বুঝিয়ে দিয়ে প্রকল্পের সব টাকাও উত্তোলন করে নিয়েছি। কাজে কোনো ধরণের অনিয়ম হয়নি।

অপরদিকে ঠিকাদার নেজাম শরীফ প্রতিবেদককে জানান, দরপত্র অনুযায়ী উন্নয়ন কাজটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তারপরও আপনি বিষয়টি নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে একটু কথা বলেন। আমি দেশের বাড়িতে আছি, এসে আপনার সঙ্গে কথা বলবো।

এ ব্যাপারে পৌর পানি সরবরাহ প্রকল্পের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খোরশেদ আলম সাংবাদিদের বলেছেন , পাম্প মেশিন নষ্ট হওয়ায় গত বছর টানা ৮দিন পানি সরবরাহ বন্ধছিল। তখন জরুরী টেন্ডার আহবান করে নতুন মোটর ক্রয়, ক্যাবল পরিবর্তন এবং পানির টাঙ্কির কাদা মাটি পরিস্কার করা হয়েছিল। পানি পরিস্কারের জন্য পাথরও দেয়া হয় টাঙ্কিতে। কাজ শেষে সবটাকাও ঠিকাদার উত্তোলন করে নিয়েছে।

তবে এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন’কে অফিসে কয়েক বার গিয়েও পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।