মানবজমিন :  আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপির সরকার গঠনের আশা দেখছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমরা অনেক কারণে আশাবাদী হয়ে উঠছি। আমরা নির্বাচনে যাবো, দেশনেত্রী নির্বাচনে যাবেন। উনারা (আওয়ামী লীগ) থাকবেন না। কারণ ওনারা নিরপেক্ষ নির্বাচনে আসবেন না। আমরা বলতে চাই, ২০১৮ সাল দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সাল, ২০১৮ সাল বিএনপির সাল, ২০১৮ সাল তারেক রহমানের সাল, ২০১৮ সাল এদেশের গণমানুষের সাল।
যারা লড়াই করে, যুদ্ধে করে এদেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে এসেছে তাদের সাল। আমরা আছি, লড়াই করে যাচ্ছি, লড়াই করব। ২০১৮ সালে আমরা অবশ্যই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত এ আলোচনা সভায় তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মির্জা আলমগীর বলেন, কথা খুব স্পষ্ট- নির্বাচন তো দিতেই হবে। সেই নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচন হতে হবে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সকল দলের অংশগ্রহণে। অবশ্যই তা সুষ্ঠু, অবাধ হতে হবে। ইনশাআল্লাহ সে নির্বাচনে অবশ্যই দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, চোখ-কান খোলা রাখুন। একটা কথা আমাদেরকে সকলকে মনে রাখতে হবে। এটা রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞান; আমাদের লক্ষ্য কী? ক্ষমতায় যাওয়ার। আমরা সবসময় শুধু এখানে মিটিং করব, আর ডুগডুগি বাজাব- তার জন্য তো আসিনি। আমরা ক্ষমতায় যাবো, ক্ষমতায় গিয়ে আমাদের মেহনতি মানুষের সমস্যার সমাধান করব, চাকরির ব্যবস্থা করব, দেশের উন্নয়ন করব; সেজন্য আমরা রাজনীতি করছি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাজনীতির একটা বিজ্ঞান আছে। বিজ্ঞানটা কী? সংগঠন, আন্দোলন এবং নির্বাচন। এই তিনটা জিনিস আমাদের একসঙ্গে করতে হবে। সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে, আন্দোলন করতে হবে এবং নির্বাচন করে আমাদের ক্ষমতায় যেতে হবে। এই বিষয়গুলো সকলকে মনে রাখতে হবে। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের একজন শ্রদ্ধেয় নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, এই ভয়াবহ সরকারকে সরাতে হলে জাতীয় ঐক্য দরকার। আমার খুব ভালো লেগেছে উনার কথাটা। উনি উপলব্ধি করেছেন। আর আমরা বরাবরই বলে আসছি একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করুন। খালেদা জিয়া ডাক দিয়েছেন, জাতীয় ঐক্য দরকার। এই ভয়াবহ, ফ্যাসিস্ট, একনায়ক সরকারকে সরাতে না পারলে এই বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে না। আমাদের সবাইকে তাই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। সেই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে জনগণের উত্তাল তরঙ্গের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটি পত্রিকা বলছে- উন্নয়নের নামে যে একটা ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে সেই উন্নয়ন আসলে একটা তাসের ঘর। শিক্ষিত যুবকদের ৪৭ ভাগ কোনো চাকরি পায় না। প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। টাকা দেবেন তো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি পাবেন, মেডিকেল কলেজের অনুমতি পাবেন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির অনুমতি পাবেন। গুম ও টাকা- এর উপরেই এখন সবকিছু চলছে। কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কৃষক দলের সহ-সভাপতি এম এ তাহের, নাজিমউদ্দিন মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তকদির হোসেন মো. জসিম, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক শাহ নেসারুল হক ও ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট বক্তব্য দেন।