ডেস্ক নিউজ:

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নে একই পরিবারের চার নারীকে ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার মিজান মাতব্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. আল ইমরান খানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন পুলিশ অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিআইবি) হাতে গ্রেফতার মিজান। এর আগে কর্ণফুলী থানা থেকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করে পিবিআই।

গতকাল সোমবার রাতে নগরের ইপিজেড থানার মাইলের মাথা এলাকা থেকে মিজানকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

চট্টগ্রামে চার নারীকে ধর্ষণের মামলায় এ নিয়ে মোট চারজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে মিজান ঘটনার বর্ণনা এবং জড়িত ব্যক্তিদের নাম বলেছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী জানান, আসামি মিজান মাতব্বর স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনার পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের নামও বলেছেন। তিনিসহ পাঁচজন জড়িত বলে জানিয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের নাম তিনি জানিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রামের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, গ্রেফতার মিজান আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, ঘটনার দিন চারজন ঘরে ডাকাতি করতে ঢুকেছিলেন। একজন স্থানীয় বাসিন্দা ঘরের বাইরে ছিলেন। ঘরে ঢোকা চারজনের মধ্যে দু’জন ধর্ষণ করেন। চারজন ডাকাতের মধ্যে দু’জন ঢাকা থেকে এসেছিলেন। মিজান নিজেও ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। অন্যদের জন্য পারেননি। ডাকাতি করা মালামাল বিক্রির ১৩ হাজার টাকা তিনি ভাগে পান। ঘটনার দিন ভোররাতে স্থানীয় ওই বাসিন্দা তাদের আনোয়ারার চাতুরী-চৌমুহনী এলাকা দিয়ে ১৫ নম্বর ঘাট পার করে পতেঙ্গা এলাকায় পাঠিয়ে দেন।

সন্তোষ চাকমা আরও বলেন, গ্রেফতার মিজানের কাছ থেকে ১৩ হাজার টাকার মধ্যে দুই হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত আরও যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে তাদের কারও নাম মিজানের জবানবন্দিতে আসেনি।

গত ১২ ডিসেম্বর রাতে কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নে এক প্রবাসীর বাড়ির গ্রিল কেটে ভেতরে ঢোকে ডাকাতরা। তারা ওই পরিবারের চার নারীকে ধর্ষণ করে এবং মালামাল লুটপাট করে।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর তারা কর্ণফুলী থানায় মামলা দিতে গেলেও পুলিশ নেয়নি। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর হস্তক্ষেপে পুলিশ মামলা নেয়। দেরি করে মামলার নেয়ায় অনেক আলামত নষ্ট হয়ে যায়।

এরপর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের নীরব ভূমিকা নিয়ে চট্টগ্রামে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সংগঠন।

মামলা হওয়ার পর কর্ণফুলী থানার পুলিশ এ মামলার তদন্ত করছিল। মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। অবশ্য ঘটনার পর থেকে পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করেছিল।