বিশেষ প্রতিবেদক:

রোহিঙ্গাদের একই স্থানে রাখা উচিত হয়নি। এটি ভুল সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই স্থানে রাখার কারনে কোন ছোঁয়াছে রোগ সৃষ্টি হলে তা মহামারি আকার ধারন করতে পারে। আগুন লাগলে সব পুড়ে যাবে। বিশৃংখলা সৃষ্টি হলে তা নিয়ন্ত্রন করা কঠিন হবে। সংঘর্ষ বাধলে তার রুপ হবে ভয়াবহ। একই জায়গা থেকে ১০ লাখ না হোক ৫ লাখ মানুষ আওয়াজ করলে তা হবে ভয়ংকর গর্জন। আর তারা আন্দোলনে নামলে তা হবে দেশের জন্য মহাবিপদ। তখন তাদের নিয়ন্ত্রন করা নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যেতে পারে। কারন একই জায়গায় একই গোষ্টি তাদের স্বার্থের জন্য যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এটা উড়িয়ে দেয়া যায়না। তাই এখননো সময় আছে তাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তর করা। আর সবচেয়ে ভালো হয় জাতিসংঘের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন রাষ্ট্রে স্থানান্তর করতে পারলে। কারন রোহিঙ্গারা কত বছর থাকবে তাদের কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। এত রোহিঙ্গার বোঝা বাংলাদেশ একা কতদিন বা কত বছর বহন করবে তা জাতিসংঘের বিবেচনায় আনা প্রয়োজন।

গতকাল ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কক্সবাজার হিল ডাউন সার্কিট হাউসে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময়ে সাবেক মন্ত্রী পরিষদের সচিব ও জাপানি উন্নয়ন সংস্থা আইসি নেট এর পরামর্শ কনসাল্টেন্ট আলী ইমাম মজুমদারের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা আলোচনায় উঠে আসে। মতনিনিময়কালে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের সর্বতো মানবকতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এখনো রোঙ্গিাদের মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশে মানুষ। রোহিঙ্গাদের উপর যে নির্মমতা হয়েছে তা বিশ্ব ইতিহাসের কলংকিত অধ্যায়। এমন অপরাধের সাথে যারা জড়িত তারা বিশ্বের কাছে ঘৃনিত, নিন্দিত। এটাই তাদের জন্য বড় শাস্তি।

রোহিঙ্গাদের কারনে স্থানীয়দের মানবেতর জীবন যাপনের কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের কঠিন রোগ স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই রোহিঙাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের সমান সুবিধা দিয়ে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। স্থানীয়দের চাষাবাদের জমি নষ্ট হয়ে গেছে, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মৎস্য চাষ, সামাজিক বনায়নসহ বনাঞ্চল ধ্বংস হয়ে গেছে, হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ, দাম বেড়ে গেছে দ্রব্যমুল্য ও পরিবহনে। এই অবস্থায় স্থানীয়দের ভি.জি. ডি/ ভিজিডি সহায়তাসহ ত্রাণ ব্যবস্থাপনায় তাদেরকে নিয়ে আসতে হবে। এছাড়া ভারি যানবাহনসহ যে হারে যান চলাচল করছে এতে ব্রিজ, কালভার্ট ও সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। তাই সড়কের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

বক্তারা আশংকা করে বলেন, স্থানীয়দের চাকুরি হচ্ছেনা। বেকার হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। আর এখনো চাকুরি পাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীরা। আর তারা হতে পারে দেশের বিপদের কারন। তাছাড়া এমনিতেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা অপরাধ কর্মকান্ড চলছে। অন্যদিকে কিছু এনজিও নেতিবাচক কর্মকান্ড চালাচ্ছে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র, মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্টি, বিতর্কিত এনজিওরা তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য রোহিঙ্গাদের দেশবিরোধী কর্মকান্ডে নিয়োজিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

বক্তারা বলেন, বেশিরভাগ এনজিও রোহিঙ্গাদের ইস্যু করে নানা দুর্নীতি করে টাকা লুটপাট করছে। তাদের কর্ম প্রকল্পের সাথে কাজের কোন মিল নেই। প্রকল্প হচ্ছে কাগজে কলমে কিন্তু মাঠে কোন প্রকল্পের কাজ দেখা যায়না।

হাজার হাজার টিউবওয়েল বা নলকুপ দ্বারা পানি উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ মিষ্টি পানির স্তর নি:শ্বেষ হয়ে যাচ্ছে। মিষ্টি পানির খাল, ছড়া, ইত্যাদিতে বাঁধ নির্মানপুর্বক প্রাকৃতিক জলাধার সৃষ্টি করে সেখানে যান্ত্রিক উপায়ে ক্যাম্প সমুহে পানি সরবরাহ করতে পারলে প্রকৃতি ও এলাকা বাঁচবে।

মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহন করেন, মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, অতিরিক্ত সচিব (অব) শফিউল আজম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, আইসি নেট এর প্রতিনিধি নাকামুরা, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম ও কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু।