বিদেশ ডেস্ক:
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতায় শরণার্থী হওয়া মানুষদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে নেপিদো’কে আড়াই কোটি ডলার দেবে ভারত। আগামী পাঁচ বছরে এই অর্থ দেওয়া হবে। মিয়ানমার সরকার দেশে ফেরা শরণার্থীদের জন্য আবাসস্থল নির্মাণের মতো উন্নয়নমূলক প্রকল্পে এ অর্থ ব্যয় করবে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধরা। খুন-ধর্ষণ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি বারবার আহ্বান জানানো হলেও এখনও পর্যন্ত তাতে উল্লেখযোগ্য কোনও সাড়া মেলেনি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া এই মানুষগুলোকে আর দেশে ফেরার সুযোগ দিতে রাজি নয় মিয়ানমার। তবে এমন সন্দেহ-সংশয়ের মধ্যেই শরণার্থী প্রত্যাবাসনে আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।

সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার মিয়ানমারের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্কর। এদিন তিনি রাখাইন রাজ্যের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান তৈরিতে ভারতীয় সহায়তার উদ্দেশ্যে দেশটির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অর্থ সহায়তার লক্ষ্য হচ্ছে মিয়ানমার সরকার যেন রাখাইন রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। তারা যেন বাস্তুচ্যুত মানুষদের ফিরিয়ে আনতে পারে।

আবাসস্থল নির্মাণ ছাড়াও স্কুল তৈরি, স্বাস্থ্য সেবা এবং সড়ক ও ব্রিজের মতো অবকাঠামো নির্মাণেও ভারতের দেওয়া এ অর্থ ব্যবহার কবে মিয়ানমার।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় দেশটির প্রতি বাড়তি মনোযোগ রয়েছে ভারতের। এ লক্ষ্যে দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহী দিল্লি।