আবদুল মজিদ, চকরিয়া:

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের অধীন চকরিয়া উপজেলার নলবিলা বনবিটের ফরেষ্ট গার্ড (এফ.জি) মুন্সি নাজমুল হোসেনের বনদস্যুদের যোগসাজসে বনাবয়নের মূল্যবান গাছ পাচার ও ইসলাম নগরে পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে। প্রতিনিয়ত রাতের আধারে বন নিধন করে পাচার হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার মূল্যবান গাছ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের রিংভং, ডুলাহাজারা, কাকারা, নলবিলা, মানিকপুর বিট এলাকার বনায়ন থেকে রেঞ্জার আবদুল মতিনের প্রত্যক্ষ মদদে সরকারী সংরক্ষিত বনভূমি থেকে মূল্যবান মাদারট্রি কর্তন করে প্রতিনিয়ত পাচার হচ্ছে। তবে মূল্যবান কাঠ পাচারের মূল পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করে নলবিলা বনবিট। বিটের এফ.জি মুন্সি নাজমুল হোসেন নলবিলা বনবিটে বিশেষ করে যেদিন গেইটের দায়িত্বে সেদিনই আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে গাছ ভর্তি এসব গাড়ী পাচার করে থাকে। স্থানীয়রা আরো জানান, নলবিলা বিটের এফ.সি প্রতি গাড়ী থেকে অন্তত ৫/৬ হাজার টাকা করে অবৈধভাবে আদায় করে। মূলত এফজি মুন্সি নাজমুল হোসেন ইতিপূর্বে কক্সবাজার জেলা ডিএফও অফিসের হেডক্লাকের সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিল। সে সুবাদে ফাসিয়াখালী রেঞ্জারের প্রত্যক্ষ মদদে এফজি গাছ পাচারে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। একইভাবে এফ.জি নাজমুল যোগদানের পর থেকে নলবিলা বিটের ইসলাম নগর এলাকার বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে প্রকাশ্যে দিবালোকে পাহাড় কেটে ট্রাক-ডাম্পার ভর্তি করে মাটি বিক্রি ও জমির দখল বিক্রি করে চলছে। অপরদিকে ফাসিয়াখালীর রেঞ্জার মূল্যবান গাছ গোপনে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। পাহাড় কর্তনকারীরা জানিয়েছেন, এফজি মুন্সি নাজমুল তাদের বলেছেন, তিনি পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি, জমির দখল বিক্রি ও গাছ বিক্রি করলে কেউ তাকে ধরবেননা। তিনি ডিএফও অফিস থেকে এসব বিষয়ে অনুমতি এনেছেন। রেঞ্জারের সাথেও তার গোপন সর্ম্পক রয়েছে। তিনি নিজেকে নলবিলা বিটের ক্যাশিয়ার দাবী করে যাবতীয় লেনদেন তার মাধ্যমে হবে বলে জানান।

বক্তব্য জানতে ফাঁসিয়াখালীর রেঞ্জার আবদুল মতিনের সাথে ১৯ ডিসেম্বর রাত ৯টায় মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। অপরদিকে নলবিলা বিট কর্মকর্তা আকরাম আলী খানের কাছ থেকে এফ.জি মুন্সি নাজমুলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি দেখার পর প্রয়োজনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

এবিষয়ে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) বেলায়ত হোসেন জানিয়েছেন, আমাদের যেকোন ষ্টেশনে (বনবিট) এরিয়ায় কোন সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবহিত করে থাকেন। কিন্তু এবিষয়ে এখনো কেউ অবহিত করেনি। এরপরও বিষয়টি তদন্ত পূর্বক দেখা হবে। তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হলে আইনী প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।