কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া:
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়ছে। অনেকেই সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়ি জমানোর জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে।
ইতিমধ্যেই মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া প্রায় ১৫ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে টেকনাফ থানার পুলিশ আটক করে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে ফেরত পাঠিয়েছে।
উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া নতুন রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে, সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রত্যাবাসন হলে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে নিরাপদ বসবাস করতে পারবে না।
তারা জানান, বর্তমানে মিয়ানমার সেনারা রোহিঙ্গাদের ছেড়ে আসা বসতভিটাগুলো সমতল করে সেখানে সুপারি ও নারকেল চারা রোপন করছে। যাতে রোহিঙ্গারা সেখানে ফিরে গিয়ে তাদের বাড়ি ভিটা চিহ্নিত করতে না পারে। তাই অপারগ হয়ে রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশসহ এদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত স্বজনদের কাছে চলে যাচ্ছে।
গত ১৭ ডিসেম্বর টেকনাফের হারিয়াখালী পয়েন্ট দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে শাপলাপুর চেকপোষ্ট অতিক্রমকালে পুলিশ ৯ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে।

টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাঈন উদ্দিন জানান, এসব রোহিঙ্গারা সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য শাপলাপুর হারিয়াখালী পয়েন্টে একত্রিত হওয়ার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল।
বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ কাঞ্চন কান্তি দেব নাথ জানান, কুতুপালং ডি-ব্লকের পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে টেকনাফের বড়ডেইল গ্রামের দালাল নুরুল আলমের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। ওই রাতে তারা সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল।

তিনি জানান, গোপন সূত্রের সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হলে পুলিশ আসার সংবাদ পেয়ে আরও প্রায় ১০/১২ জন রোহিঙ্গা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

উখিয়াস্থ মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এমএ আবুল কাশেম জানান, উখিয়ার উপকূল দিয়ে অবৈধভাবে ফিশিং বোটের মাধ্যমে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গারা উপকূলে ঘোরাঘুরি করছে। স্থানীয় গ্রামবাসী ও রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা তৎপর থাকার কারণে রোহিঙ্গারা টেকনাফের হারিয়াখালী পয়েন্টকে নিরাপদ মনে করে ওই পয়েন্ট দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।