ডেস্ক নিউজ:
আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘লোকজন যেহেতু আমাদের পক্ষে আছে, তাই আমরাই আগামী নির্বাচনে জিতবো। মানুষ আমাদের ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনও ষড়যন্ত্র করতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

প্যারিসের ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্যারিস লা গ্রান্ড হোটেলে ফ্রান্স আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে ‘ওয়ান প্ল্যানেট সামিটে’ যোগ দিতে তিন দিনের সফরে সোমবার প্যারিসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দলকে শক্তিশালী করতে ব্যক্তিগত ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমেই দলের সর্বস্তরে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নেতাদের মধ্যকার বিভক্তির কারণে ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ পেয়ে যেতে পারে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে তা কখনোই সম্ভব হবে না। সামনে নির্বাচন, আমরা আবারও বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবো।’

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যাতে আর কখনও ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। যেসব অপশক্তির কারণে ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছিল তাদের ব্যাপারেও সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টিকারীরা যেন ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে না পারে। সেজন্য প্রত্যেককে সজাগ থাকতে হবে। লুটপাট ও দুর্নীতির বিষয়েও মানুষকে সজাগ করতে হবে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ ৪৬ বছর আগে স্বাধীন হয়েছে কিন্তু ৩০ বছর ধরে দেশটি শাসন করেছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষ প্রকৃত উন্নয়নের স্বাদ পেয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলে, তারা বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রচলন করেছে। কিন্তু আসলে তারা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির পুনর্বাসন করেছে। তারা ভোট কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসেছিল কিন্তু আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়।’

প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও তাদের নিজের আচরণের ক্ষেত্রে সংযত থাকতে হবে। আপনারা একটা বিষয় লক্ষ্য রাখবেন, তা হলো দেশের সম্মান। এই সম্মান যেন কোনোভাবেই ক্ষুণ্ন না হয়। এ ব্যাপারে সবাই সতর্ক থাকবেন। এটাই আমার অনুরোধ।’

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকের সমর্থন পেয়েছি আমরা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা সারা বিশ্বের মানুষের সমর্থন পেয়েছি। আর এ ঘটনায় পৃথিবীর প্রায় সব দেশই বাংলাদেশকে সমর্থন দিচ্ছে।’ এছাড়াও প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট না করেই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগের কথাও জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী, তাই তাদের সঙ্গে আমাদের সর্ম্পক নষ্ট হবে না। কিন্তু এই সমস্যাটা তাদের সৃষ্টি। তাদের দেশের নাগরিকদের অবশ্যই ফেরত নিতে হবে।’

এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহামুদ আলী ও প্যারিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসাইনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বুধবার ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা আছে প্রধানমন্ত্রীর। এরপর দেশের উদ্দেশে ফ্রান্স ত্যাগ করবেন তিনি।