বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলোর মতো নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক সহায়তা দিতে আজ থেকে দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হচ্ছে ইমার্জেন্সি হেল্পলাইন ‘৯৯৯’। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে এই নম্বরে ডায়াল করলেই পাওয়া যাবে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশি সেবা।

আপনার চোখের সামনে কোনো অপরাধের ঘটনা ঘটলে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অথবা জরুরি ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন হলে এই একটি নম্বরেই ফোন করলে পাওয়া যাবে সব সমাধান। আপনার কাছে পৌঁছে যাবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক দল অথবা অ্যাম্বুলেন্স।

পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি সহেলী ফেরদৌস জগো নিউজকে বলেন, ৯৯৯ নম্বরে কল করতে কোনও টাকা খরচ হবে না। কেউ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহায়তা চাইলে সার্ভিসের প্রশিক্ষিত এজেন্টরা জরুরি মুহূর্তে মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ বা অ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদানকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন।

তিনি বলেন, রাজধানীর আবদুল গনি রোডের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে এই সার্ভিসের প্রধান কার্যালয় করা হয়েছে। জনগণকে পরিপূর্ণভাবে এই সেবা দিতে ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দৈনিক তিন শিফটে ২৪ ঘণ্টায় তারা জনগণকে সেবা দেবেন।

ইমার্জেন্সি হেল্পলাইন ‘৯৯৯’ সেবা বাংলাদেশ পুলিশ তদারকি করছে জানিয়ে সহেলী ফেরদৌস বলেন, একই সময়ে ৩০-৫০ জন সাহায্যপ্রার্থী ইমার্জেন্সি হেল্পলাইনে ফোন করে কথা বলতে পারবেন এবং সাহায্য পাবেন। এছাড়া মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও সরাসারি কথা বলা যাবে। শিগগিরই ফেসবুকেও এই সেবার একটি প্লাটফর্ম যুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

৯৯৯ হেল্প ডেস্ক মোবাইল অ্যাপলিকেশন ডাউনলোড লিংক: http://bit.ly/2fqnhey।

মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ৯৯৯ জরুরি সেবার কল সেন্টারে সরাসরি ফোন, লাইভ চ্যাট, বিভিন্ন তথ্য খোঁজার জন্য সার্চ অপশন ব্যবহার করতে পারবেন নাগরিকেরা। এ ছাড়া এই অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জরুরি প্রয়োজনে জরুরি সেবার বিভিন্ন তথ্য লোকেশনসহ জানা যাবে।

এআইজি সহেলী ফেরদৌস আরও বলেন, জরুরি সেবা পেতে সাহায্যপ্রার্থীকে অবশ্যই তার নাম ও ঠিকানা পূর্ণাঙ্গভাবে বলতে হবে। ফোনকারীর সঠিক অবস্থান না জানা থাকলে পাশের বড় রাস্তা, বাজার বা মহাসড়কের নাম বলতে হবে। তবে অকারণে বা হয়রানিমূলক ফোন না করার জন্য জনগণকে অনুরোধ করা হয়েছে। কেউ হয়রানিমূলক ফোন করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে কল সেন্টারটি সার্বক্ষণিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। ইতোমধ্যে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের ৬৪ জেলায় ৯৯৯-এর ব্যবহার, প্রচার ও কমিউনিটি সেফটি অ্যাওয়ারনেস কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ প্রথম ন্যাশনাল হেল্প ডেস্ক ‘৯৯৯’ এর কাঠামো তৈরির কাজ শুরু করে। ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে জনগণকে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এই সার্ভিসটির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।