হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ :
সীমান্ত জনপদ টেকনাফে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন প্রকার মাছের শুটকি তৈরী করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে আসছে পেশাদার শুটকী ব্যবসায়ীরা। টেকনাফের শুটকী ব্যবসাকে আরো সম্প্রসারিত করতে হলে সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সমুহকে পৃষ্টপোষকতায় এগিয়ে আসতে হবে।
জানা যায়, উপজেলার সেন্টমার্টিনের হামিদ আব্দু শুক্কুর, মোঃ আমিন, মোঃ আয়াজ, মোঃ হামিদ, শহর মুল্লুকসহ ২০ জন, শাহপরীর দ্বীপের ওয়াজ করিম, দুদু মিয়া, আব্দু শুক্কুর, মোঃ আলমসহ ৩০/৩৫ জন, পৌরসভার জালিয়া পাড়ার নুরুল হক, শামসু, ছৈয়দ হোছন, জাগির হোছনসহ ১৫/২০ জন, সদর ইউনিয়নের দরগাহ ছড়ার মৃত সিকান্দর আলীর পুত্র আব্দুল গফুর, শেখ আহমদ, শামসুল আলম, মৃত আলী আহমদের পুত্র নুরুল হক, মিঠা পানির ছড়ার মৃত খুইল্যা মিয়ার পুত্র শব্বির আহমদ, মৃত রুওশন আলীর পুত্র নুর হোছন, নুর হোছনের পুত্র মোহাম্মদ হাছন, মৃত মোহাম্মদ হোছনের পুত্র জুনাইদসহ ২৫/৩০ জন ও বাহারছড়া শামলাপুর উত্তর পাড়ার সোলতান, ইব্রাহীম, দক্ষিণ পাড়ার আনসার করিম, রুবেল, নেচারুল করিম, আবু, মোস্তাক, মুফিজসহ ১৫/২০ জন সর্বমোট ২শতাধিত ব্যক্তি মাছ শিকারী ও ব্যবসার মধ্যদিয়ে শুটকি মাছের পেশাগত জীবন শুরু করেন। গোদারবিল, দরগাছড়া, রাজারছড়া ও উপকূলীয় বাহারছড়ার বিভিন্ন পয়েন্টের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আরো অনেক শুটকী ব্যবসায়ী রয়েছে। পুরানোর আমলের পদ্ধতিতে শুটকি না শুকিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এবং উন্নত প্রযুক্তির সংমিশ্রন ঘটানো গেলেই এই শুটকী উৎপাদন খাতকে আরো এগিয়ে নেওয়া যাবে। উপজেলার ৪/৫ হাজার নারী-পুরুষের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সরবরাহের মাধ্যমে কর্মসংস্থান খুঁজে নেয়। কীটনাশকমুক্ত, লবণযুক্ত, লবণবিহীন, হলুদ ও মরিচের গুঁেড়ার সংমিশ্রণে এই খামারে উৎপাদিত ছুরি, পোয়া, পাইচ্ছা ও ধনশাসহ (স্থানীয় ভাষায় গরু মাছ) হরেক রকম শুটকী উৎপাদন করলে গুটি কয়েক ব্যক্তি মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ প্রয়োগ করে পুরো শুটকী ব্যবসাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করছে। উপজেলার এসব ব্যক্তি মালিকানাধীন খামার হতে প্রতি সপ্তাহে ৩৫/৪০টন শুটকী মাছ উৎপাদন করে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রামু, চকরিয়া, আমিরাবাদ, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সুনামের সাথে সরবরাহ করে আসছে। এই শুটকীখাতে সরকারী বেসরকারীভাবে অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পৃষ্টপোষকতা পেলে শুটকী উৎপাদন খাত আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবেন বলে সচেতন মহলের ধারণা। টেকনাফ দরগাছড়ার শুটকী উৎপাদনকারী আব্দুল গফুর জানান, শুটকী উৎপাদন কার্যক্রমে মৎস্য বিভাগের কাছ থেকে তারা কোন ধরণের সহযোগিতা পায়না। সীমান্তে শুটকি মাছের খাতকে এগিয়ে নিতে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এমন কি সমাজের বিত্তশালীদের নিকটও তাদের কদর নেই। তবে এই পেশায় আল্লাহর রহমতে কোন প্রকারে পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিতে আছি।
এই ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসাইন বলেন,শুটকী উৎপাদন ও সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে আমার নিকট সঠিক কোন তথ্য নেই। এই ব্যাপারে উর্ধ্বতন মহলের সাথে যোগাযোগ করা হবে। এই ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আহমদ বলেন,গুরুত্বপূর্ণ এইখাত নিয়ে সরকারী কোন উদ্যোগ এখনো নেই। তবে এই পেশায় জড়িতদের বিষয়ে উপর মহলের সাথে যোগাযোগ করে একটি উদ্যোগ নেওয়া হবে।