এম.জুবাইদ. পেকুয়া:

পেকুয়ায় পাথর বোঝাই লরির ধাক্কায় জেটিঘাটের আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। ৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম উজানটিয়া করিমদাদ মিয়া চৌধুরী জেটিঘাটে এ ঘটনা ঘটে। লরির প্রচন্ড ধাক্কায় উজানটিয়া চ্যানেলের ওই জেটিঘাটের একটি পিলার বিধ্বস্ত হয়।

প্রাপ্ত সুত্রে জানা যায়, একটি পাথর বোঝাই লরি চট্রগ্রাম শহর থেকে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুস্কুলের দিকে যাচ্ছিল। এমবি আব্বা-আম্মা নামের লরিটি প্রায় ৭ হাজার ঘনফুট পাথর বোঝাই করে চট্রগ্রাম শহরের শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন স্থান থেকে উজানটিয়া ক্যানেল হয়ে খুরুস্কুল যাচ্ছিল। ভাটার সময় নদীর পানি উচ্চতা হ্রাস পাওয়ায় লরিটি উজানটিয়া চ্যানেলে গত বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে নোঙ্গর করে। হঠাৎ নোঙ্গর বিচ্ছিন্ন হয়ে পাথর বোঝাই লরিটি পাশর্^বর্তী জেটিঘাটে ধাক্কা দেয়। এ সময় জেটির একটি পিলার বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচন্ড ধাক্কার আঘাতে বিএ ডব্লিউ টিএ এর মালিকানাধীন জেটিঘাটের মূল ফাউন্ডেশনে বড় আকারের ফাটল দেখা দিয়েছে।

উজানটিয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য এহছানুল হক জানান, সকালে স্থানীয়রা ডুবে যাওয়া লরিটি থেকে ৪ বান্ডেল রশি, একটি হাম্বুল, ১২ বোল্ড একটি ও ১০ বোল্ডের দুটি ব্যাটারী, চার কেজি অকটেন, চয় কেজি মোবিল, দুটি নোঙ্গর, ছোট-বড় চারটি মই ও একটি চালের বস্তা উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত মালামাল স্থানীয় ইউপি সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজ¦ী জয়নাল উদ্দিন ও যুবদলের সাবেক সভাপতি বাহা উদ্দিন ফরহাদ বরাবরে জমা রাখে।

এই বিষয়ে হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বল্লা ও স্থানীয়দের দাবী ওই সব মালামাল জামাদাররা বিক্রি করে দিচ্ছে বলে এই প্রতিবেদকে জানান। এ সময় প্রশাসনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ম্যাসেজ দেন স্থানীয়রা। তবে এখনো কেউ তা দেখতে আসেনি।

এদিকে জেটিঘাটের ইজারাদার সাজ্জাদ ট্রের্ডাসের সত্বাধীকারী যুব সংহতি পেকুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ও সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাজ্জাদুল ইসলাম জানায়, করিমদাদ মিয়ার জেটিঘাটের ইজারা নিয়েছেন তারা। আগামী বাংলা সনের বৈশাখ মাস পর্যন্ত তারা ওই জেটি থেকে টোল আদায় করবেন। ইজারাদার জানান, গত চার মাস পূর্বে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়রিং(প্রাঃ) লিঃ-২ নামের লরিটি প্রায় ৭ হাজার ঘনফুট পাথর বোঝাই করে চট্রগ্রাম শহরের শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন স্থান থেকে উজানটিয়া ক্যানেল হয়ে খুরুস্কুল যাচ্ছিল। ভাটার সময় নদীর পানি উচ্চতা হ্রাস পাওয়ায় লরিটি উজানটিয়া চ্যানেলে রাত ৮ টার দিকে নোঙ্গর করে। ভোরের দিকে নোঙ্গর বিচ্ছিন্ন হয়ে পাথর বোঝাই লরিটি পাশর্^বর্তী জেটিঘাটে ধাক্কা দেয়। এ সময় জেটির ৫টি পিলার বিধ্বস্ত হয়েছে। জেটির পিলার বিধ্বস্ত হওয়ার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ জেটির আশপাশ এলাকায় কোন ধরনের যাত্রীবাহী ইঞ্জিন চালিত বোট, নৌকা ও যাত্রীসহ মালামাল উঠানামায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেটিটি বিধ্বস্ত হওয়ায় তারা টোল আদায়ে অনিশ্চয়তা দেখা এবং ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে বলে দাবী করেছেন। দ্বিতীয় দফায় বৃহষ্পতিবার আবারো এমবি আব্বা-আম্মা নামের ওই লরিটি ধাক্কা দিয়ে আরো একটি পিলার বিধ্বস্থ হওয়ায় ইজরা আদায়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।

এ ব্যাপারে লরির সারাং সান্টু জানায়, খুরুস্কুলে নৌবাহিনী তত্তাবধানে পাউবোর ব্লক তৈরীর কাজ চলছে। সেখানে তারা পাথরগুলি নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিধ্বস্থ লরির মালিক তাজুল ইসলামের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বিধ্বস্থেও খবর পেয়েছি। তবে স্থানীয়দের সহয়তায় উদ্ধার হওয়া মালাল লুট হয়েছে। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।