পেকুয়া সংবাদদাতা:
পেকুয়ায় আজগর আলী সিকদার ওয়াকফ সম্পত্তিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সতর্কতামূলক দেয়া হয়েছে লাল পতাকা। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে জমিতে উড়াল করা হয়েছে লাল পতাকা। ২০ কানি জমি নিয়ে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের মগঘোনা এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পেকুয়া থানা পুলিশ ওই স্থান পরিদর্শন করেছেন। তবে পুলিশের উপস্থিতি ও পক্ষপাতমুলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নীতিবাচক ভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। আদালত স্থিতিবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। তবে পুলিশ প্রভাবশালীদের পক্ষে ম্যানেজ হয়ে জমিতে জোরপূর্বক সতর্কতা জারি করেছেন বলে ভোগ দখলদার প্ক্ষ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এ দিকে আজগর আলী সিকদার ওয়াকফ সম্পত্তির প্রকৃত ভোগদখলদার কে এ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরী হয়েছে। ওই এলাকার প্রখ্যাত জমিদার শেখ আবদুল আজিজ চৌধুরী বিপুল জমি ওইল করেছেন। স্কুল, মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্টানের উন্নয়নের জন্য তিনি সম্পত্তি ওয়াকফ করেন। নাল ও ওয়াকফ সম্পত্তি তার ১৩ ছেলে ও অন্যান্য ওয়ারিশরা ভোগ করছিলেন। তার ছেলে আবদুল করিম চৌধুরী ৭০৫ খতিয়ানের ৭২৪৪ দাগের মগঘোনা অংশের ২০ কানি জমি ভোগ করছিলেন। নাল জমির সাথে এ সম্পত্তির হিস্যা হয়েছে। আবদুল করিম চৌধুরী ও তার ছেলে মাহামুদ নুর চৌধুরী গং দীর্ঘ ১২০ বছর ধরে এ সম্পত্তি ভোগ দখলে আছেন। এরই মধ্যে একই দাগে মাহামুদ নুর চৌধুরী ও তার ভাই শহিদুল্লাহ চৌধুরী সহ একাধিক পরিবার ঘরবাড়ি তৈরী করে বিগত ৪০ বছর ধরে বসবাস করছেন। আবদুল আজিজ চৌধুরীর ছেলে রুহুল আমিন চৌধুরী, আবদুল গণি চৌধুরী সহ অধিকাংশ ওয়ারিশ নাল জমি তাদের প্রাপ্ত অংশ সমুহ বিক্রি করেছেন। এ দিকে মগঘোনার ওই জমি নিয়ে নতুন করে বিরোধ দেখা দিয়েছে। জমি মাহামুদ নুর গং ভোগ করছিলেন। চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদনের জন্য মাঠ প্রস্ততির কাজ চলছিল। এ সময় আবদুল গণি চৌধুরীর ছেলে আবু হেনা মোস্তফা কামাল চৌধুরী ও আবু নঈম চৌধুরী জমির প্রাপ্যতা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। তারা পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন। অপরদিকে রিয়াজুল করিম চৌধুরী সহ আবু হেনা মোস্তফা কামাল চৌধুরী গং জমিতে চাষা দেয়ার চেষ্টা করে। সাতঘর পাড়ার জব্বরের ছেলে আবু তৈয়ব সম্পত্তির বিষয়ে মাহামুদ নুর চৌধুরী গংদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেয়। সম্প্রতি ২০ কানি জমির আধিপত্য নিতে অভিযোগের ছড়াছড়ি হয়েছে। মাহামুদ নুর চৌধুরী গংদের জমি থেকে উচ্ছেদ করতে তারা ভাড়াটে লোকজন ও মাস্তান জড়ো করে এলাকায়। এতে করে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এম আর মামলা হয়েছে। আদালত স্থিতিবস্থা বজায়সহ শান্তিভঙ্গ না ঘটাতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। মাহামুদ চৌধুরী স্থিতি মালিক। অপরপক্ষ কোন ধরনের যাতে করে অনুপ্রবেশ না করতে পারে আদালত এ সম্পর্কিত আদেশ দেন। তবে পুলিশ গত সোমবার ৪ ডিসেম্বর দুপুরে ওই জমিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে। জানা গেছে পেকুয়া থানার এস,আই সুব্রত দাশ পুলিশসহ জমিতে উপস্থিত হন। এসময় ওই জমিতে পুলিশ লাল পতাকা উড়াল করে। মাহামুদ নুর চৌধুরী গংদের উচ্ছেদ করতে তারা ত্রিমুখী ঐক্যমত হয়েছেন। স্থানীয়রা জানায়, এ জমি মাহামুদ নুর গং যুগ যুগ ধরে ভোগ দখলে আছেন। তারা জানায় ওয়াকফ সম্পত্তি দেখভাল করেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এক সময় জমির দখল ও ওয়াসিলা নিয়ে ওয়ারিশদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। শেখ আবদুল আজিজ চৌধুরীর ছেলে সাবেক এমপি ও মতোওয়াল্লী মাহামুদুল করিম চৌধুরী লিখিত সমঝোতা স্মারক করেছেন। এ সময় শর্ত ছিল ওয়ারিশরা যে যে ভাবে ভোগ করছে সেভাবে সম্পত্তির দখল ও হিস্যা নিশ্চিত হবে। বর্তমানে ওই শর্ত ভঙ্গ করে তার ওয়ারিশ্ রিয়াজুল করিম চৌধুরী ও আবদুল গণি চৌধুরীর ওয়ারিশ আবু হেনা গং জমি দখলে চেষ্টা করছে। মাহামুদ নুর চৌধুরী জানায়, আমি আ’লীগ করি। স্বাধীনতার সময় চট্রগ্রাম শহরে ছিলাম। সেখানে সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেছি। এখন নব্য আ’লীগ ও বিএনপির শীর্ষ ক্যাডাররা আমার পিছনে লেগেছে। তারা অধিক জমি ভোগ করছিলেন। বিক্রি করে দিয়েছেন পাওয়ার চেয়ে বেশী। এখন আমার গুলো দখলের চেষ্টা করছে। বজল করিম চৌধুরীর জমিও তারা জবর দখল করে রেখেছে। আমার বাবার জমি বিক্রি হয়নি। তাদের জমি বিক্রি করে এখন আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা করছে। আমি হয়রানি থেকে বাঁচতে চাই। প্রয়োজনে এ সবের বিচার চাইতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। তারা চাটুকার, দখলবাজ। যে টুকু ছিল সব বিক্রি করে দিয়েছে। আমাদেরকে নিয়ে খেলছে এখন। এ সম্পত্তিতে তাদের কোন অধিকার নেই। অহেতুক হয়রানি করছে। পুলিশ তাদের কথামত এসব করছে। লাল পতাকা দেওয়ার মত পরিস্থিতি হয় নি। জমি আমার দখলে। তারা মিথ্যার দিকে ছুটছেন। নিজের জীবিত পিতাকে মৃত উল্লেখ করেছেন। আমি মাহামুদ নুর চৌধুরী আজীবন জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছি। বঞ্চনা ও লাঞ্চনার শিকার মানুষজনকে নিয়ে জুলমাবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। তারা বৃদ্ধা বয়সে আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।