বিশেষ প্রতিবেদক:
ধবধবে সাদা টিশার্ট। কাছের মানুষগুলোর রঙ্গিন কলমের লেখায় ভরে গেছে। লেখালেখির সময়তো আজ। চার বছরের পড়াশোনা শেষ করে আজ তাদের শিক্ষা সমাপনী দিন।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ছিল কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী দিন। এ উপলক্ষে আয়োজন করা হয় শিক্ষা সমাপনী উৎসবের। প্রথম ব্যাচ ছাড়াও বিভাগের অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরা যোগ দেয় উৎসবে।
ক্যাম্পাসেÑ ক্যাফেটেরিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, ঘোরাঘুরি, ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, ভাইভা, প্রেজেন্টেশন নিয়ে দৌড়াদৌড়ি, এভাবেই কেটে গেল শিক্ষাজীবনের চারটি বছর। ২০১৪ সালে ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার পর প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পথচলায় সবকিছুই ঘটেছে তাদের চোখের সামনে। ক্যাম্পাসের আনাছে-কানাছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাদের মজার স্মৃতি, আনন্দ-বেদনার বিভিন্ন ঘটনা। মনের কোণে তাই বেজেছে বিদায়ের ঘন্টা। বিদায় বেলায় সবার মুখেই বিষাদের ছাপ।
দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষার্থীদের উচ্ছাস- উন্মাদনার কমতি নেই। কারো হাতে বেলুন, কারো হাতে ফুল, কারো হাতে রঙ। সবাই ব্যস্ত নিজের বিভাগকে মনের মতো করে সাজাতে।
সকাল নয়টায় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর আবুল কাশেম। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উজ্জ¦ল ভবিষ্যৎ কামনা করে বক্তব্য দেন ট্রাস্টি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, ইংরেজি বিভাগের প্রধান আমিনুল ইসলাম। এরপরই শুরু হয় মুল উম্মাদনা- আনন্দ শোভাযাত্রা। ব্যান্ড বাজিয়ে, নেচে-গেয়ে, একে অন্যকে রঙ মাখিয়ে শহরের কলাতলী ঘুরে শেষ হয় শোভাযাত্রা। দুপুরের পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। একের পর এক চলে নাচ, গান, কৌতুক , নাটক, র‌্যাম্প শো ও স্মৃতিচারণ। সন্ধায় উড়ানো হয় ফানুস।
‘কিভাবে এতটা সময় পার করলাম ভাবতেই পারিনা। যদি আবার প্রথম থেকে শুরু করতে পারতাম তাহলে মনে হয় আরো ভালো হতো!’ আবেগতাড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী জান্নাতুল নওরীন। দেলোয়ার হোসেন, নাবিলা হাসান, ইউসুফ মাহমুদ তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন- টানা চার বছর একসঙ্গে একটি পরিবারের মতো ছিলাম। অনেক আনন্দ লাগছে ঠিকই। কিন্তু এরমাঝেও খানিকটা কষ্ট লুকিয়ে আছে।। প্রিয় ক্যাম্পাস ছেড়ে বিদায় নিতে হবে, বন্ধুদের ছেড়ে যাবার কষ্ট। স্মৃতি হয়ে থাকবে ভালোবাসার ক্যাম্পাস। হাসি-কান্নার সারথীদের আর পাওয়া যাবেনা একসাথে, এভাবে।
অবশেষে ফুরিয়ে এলো দিন। রাতের আধারের সঙ্গে মিলিয়ে যেতে লাগলো আনন্দ- বেদনা। একে একে বিদায় নিল সবাই। প্রানোচ্ছল চিত্র মুছে াগয়ে সবকিছু নীরব। বিদায়বেলায় মনের গহীনে একটাই কথা- আবার হবেতো দেখা!