নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের সীমানা দেয়ালের দক্ষিণ পাশে পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে গতকাল রবিবার বেলা ১১টার দিকে এ অভিযান চালানো হয়। এসময় অবৈধভাবে নির্মাণাধীন ৪টি বাড়ির অংশবিশেষ ভেঙ্গে দেয়া হয়। পরে দক্ষিণ ডিককুল এলাকাৃও থেকে দুই ব্যক্তিকে আটক করে সাত দিন করে কারাদন্ড দেয়া হয়। এদিকে প্রশাসনের এমন কার্যক্রম বন্ধের দাবীতে এলাকার কয়েক’শ নারী-পুরুষ বিকাল ৩টার দিকে প্রধান সড়ক অবরোধ করে। উত্তেজিত জনতা সেখানে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। স্থানীয়রা জানান, কয়েকজন অসাধু ব্যক্তি এলাকাবাসীকে উচ্ছেদ করার গুজব ছড়িয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে দিয়ে নাশকতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। পরে এলাকার কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি বিষয়টি বুঝতে পেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। স্থানীয় লোকজন জানান, ওই এলাকায় সরকারি জমিতে যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করছে। প্রশাসন সেখানে কোন উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে না। তবে সরকারি ওই জমিতে অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধে পদক্ষেপ নেয়। প্রশাসন সেখানে যেসব ব্যক্তি অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে শুধুমাত্র তাদের স্থাপনা উচ্ছেদে নেমেছে। কিন্তু কয়েকজন অসাধু ব্যক্তি ঘটনাটিকে পুরো এলাকাবাসীকে উচ্ছেদ করার গুজব ছড়িয়ে নাশকতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করে। আর ওই কয়েকজনের জন্য পুরো এলাকাবাসীর ক্ষতি হচ্ছে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের দক্ষিণপাশের দেয়াল সংলগ্ন এলাকায় সরকারি পাহাড় কেটে সৌদি প্রবাসী শামসুল আলম, ব্র্যাক ব্যাংক কর্মকর্তা আনছারুল করিম, রবিউল করিম, মৌলভী শামসুল আলম, ইয়াবা ব্যবসায়ীসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে আসছিল। উপজেলা ভূমি প্রশাসন এসব ব্যক্তিকে বেশ কয়েকবার অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মানে বাধা দেয়। কিন্তু তারা সেখানে প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ায় গতকাল অভিযান চালানো হয়। অভিযানে সৌদি প্রবাসী শামসুল আলম, ব্র্যাক ব্যাংক কর্মকর্তা আনছারুল করিম, রবিউল করিম, জঙ্গি নেতা মৌলভী শামসুল আলমসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তির নির্মাণাধীন ভবন আংশিক উচ্ছেদ করা হয়। পরে দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ উল্লাহ ও মো. দেলোয়ার হোসেনকে আটক করে প্রত্যেককে ৭ দিন করে কারাদন্ড দেয়া হয়। এ বিষয়ে স্থানীয় ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সোলতান জানান, উপজেলা প্রশাসন দক্ষিন ডিককুল এলাকায় পাহাড় কেটে নির্মাণাধীন কয়েকটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধে অভিযান চালায়। পরে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এসময় তিনি গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজিম উদ্দিন জানান, সরকারি পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করে ৭ দিনের কারাদন্ড দেয়া হয়। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন জানান, উপজেলা কমপ্লেক্সের পাশ ঘেঁেষই সরকারি পাহাড় কেটে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে বেশ কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ীসহ অপরাধীরাও রয়েছে। কাউকে সরকারি পাহাড় কেটে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করতে দেয়া হবে না। এছাড়া গুজব ছড়িয়ে নাশকতামূলক কর্মকান্ড করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তিনি তথ্য পেয়েছেন বলে জানান।