নিজস্ব প্রতিনিধি, কুতুবদিয়া:

কুতুবদিয়ায় ঘরের দরজা বন্ধ করে নার্গিস নামে এক প্রেমিকাকে বেদড়ক পিটিয়েছে রিপন নামে প্রেমিক। আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের হায়দার পাড়া গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ১ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়ির উঠানে কাজ করছিল নার্গিস। এসময় সেখানে মোটর সাইকেলে করে আসে দীর্ঘদিনের প্রেমিক পাশের বাড়ির রিপন। নার্গিসকে প্রথমে ইশারায় ডাকে রিপন তাতে সাড়া না দিলে পরে নাম ধরে ডাকে। ডাকে সাড়া দিয়ে কাছে গেলেই পূর্বের ঘটনার জের ধরে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয় এবং পরে নর্গিসকে উপর্যপুরি মারধর করতে থাকে রিপন। একপর্যায়ে বাড়িতে নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে রিপনসহ আরো ৫/৬ জন মিলে বেদম প্রহার করতে থাকে। এসময় নার্গিসের চিৎকারে এলাকবাসী এগিয়ে আসলে ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায় রিপন। পরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে নার্গিসকে উদ্ধার করে কুতুবদিয়া হাসপাতালে ভর্তি করায় এলাকার ইউপি মেম্বার হারুনসহ এলাকাবাসী।

নার্গিসের তলপেটে উপর্যপুরি আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান ভিকটিম নার্গিসের পরিবার। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, রিপন ওই এলাকার মাস্টার সাইফুল্লাহ খালেদের ছেলে এবং নার্গিস আকতার একই এলাকার আবদু মোনাফের মেয়ে। এলাকাবাসী জানিয়েছে তাদের দুই জনের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেম বর্তমানে বিষাদে পরিণত হয়েছে।

এলাকার পারভীন নামের এক মহিলা জানান, নার্গিস-রিপনের প্রেম কুতুবদিয়ার একটি আলোচিত ঘটনা। এ প্রেমের কাহিনী বিয়েতে রূপ নেয়ার আগেই গড়িয়েছে থানা-আদালত পর্যন্ত।

হারুন নামের অন্য একজন জানান, থানায় দায়ের করা একটি জিডির ভিত্তিতে গত ২৯ নভেম্বর রিপনকে আটক করে কুতুবদিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। ওইদিন বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশী বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ১ ডিসেম্বর (শুক্রবার) বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষকে মিমাংসা করার লক্ষ্যে ওই দিন স্থানীয় সাংসদ কুতুবদিয়া আগমন করলে তার সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার আশ্বাস প্রদান করেন কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)।

এ ব্যাপারে ভিকটিম নার্গিস বলেন, বিষয়টি যাতে স্থানীয় সাংসদের কর্ণপাত না হয় সে লক্ষ্যে এমপি মহোদয় কুতুবদিয়ায় আসার পূর্বেই পরিকল্পিতভাবে আমাকে ডেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে এলোপাতাড়ি মেরে রক্তাক্ত করেছে রিপন। আমি নরপশু রিপনের নির্যাতনের বিচার চাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, মেয়েটিকে আমিসহ এলাকাবাসী ঘরের দরজা ভেঙ্গে উদ্ধার করেছি। সবাই এগিয়ে না আসলে আরও ভয়াবহ ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ছিল।

এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ দিদারুল ফেরদাউস বলেন, ঘটনা শুনেছি তবে থানায় এজাহার দায়ের হলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।