মাননীয়,
প্রধানমন্ত্রী,
মানবতার মা জননী,
শেখ হাসিনা।
পত্রের শুরুতে আপনার প্রতি রহিল অধম নাখান্দা নালায়েক নগন্য বান্দা “দেওয়ান ফরিদ গাজীর”  শত কুঠি সালাম ও দোয়া। অাশা করি অাপনি মহান রাব্বুল আলামিনের রহমতে ছহি সালামতে আছেন। আমরাও কোন মতে সস্থা মঙ্গা চাউল খাইয়া কোন মতে বাঁচিয়া অাছি।  বহুত বছরের লালিত স্বপ্ন ছিল ৬৮ হাজার গ্রাম বাংলার পোড়া কপাইল্যাগোর দুঃখ দুর্দশা নিয়া আপনার দরবারে একখানা পত্র লিখিবার। যাহাই হোক এত দিন পরে হলেও লিখিবার যখন মনস্থ করিয়াছি তখন জনগনের কিছু কথা অাপনার দরবারে পেশ করিতেছি।

মহান বিজয়ের মাসে সৃষ্টি কর্তার নাম মুখে লইয়া  লেখা অামার এই পত্র খানিতে এদেশের যাহাদের কথা স্মরণ না করিলে এই অধম অকৃতজ্ঞতার অাস্তাকূঁড়ে নিক্ষিপ্ত হইব, যিনি বাংলার জনক,বাঙালীর জনক, জাতির জনক হাজার বছরের শ্রষ্ট প্রতিবাদী পুরুষ মহান স্বাধীনতার স্থপতি যাহার মুখনিসৃত ভাষন স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে দেশের গন্ডী পার হইয়া আন্তর্জাতিক ভাবে ইউনেস্কোর মেমোরী অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অর্ন্তভূক্তির মাধ্যমে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি লাভ করে দেশের জন্য অসামান্য  অবদান অর্জন আনিয়া দিয়াছেন সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের অগ্র নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাহারই অনুসারি স্বাধীনতাকামী লাখো শহীদ মুক্তিযোদ্ধা,ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র স্বশ্রদ্ধ সালাম জানাইয়া শুরু করিতেছি অামার পত্রখানার অাসল বিষয় গুলি।

মা গো,চিঠির শুরুতেই স্বাধীন বাংলাদেশের বিষফোঁড়ার মতন এখানা বিষয় নিয়া কথা কহিতে চাই। সেটি হইল রোহিঙ্গা সমস্যা। বাপ দাদা চৌদ্দগোষ্ঠির মুখের ইতিহাস থেকে শুনিয়া অাসিতেছি এই রোহিঙ্গা শুধু মাত্র অাজকের বিষয় নয়। ১৯৪৮ সাল থেকেই নাকী এই সমস্যা বারবার ঘুরে ফিরে অাসে। তো, মা অামার এক্কান সন্দেহের কথা কইতাছি, যে মায়ানমারের অভ্যান্তরে অারাকানী রোহিঙ্গাদের ভিতরে বিদ্রোহ সৃষ্টির পিছনে এদেশে অবস্থানকারী বিদেশ ভিত্তিক এনজিও গুলোর কোন হাত থাকিতে পারে কিনা তাহা অাপনার গোয়েন্দা বাহিনী দিয়া খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কারণ এই দেশে রোহিঙ্গা অাসিলে ওই সব এনজিও গুলো কুঠি কুঠি টাকার বিদেশী ফান্ড অানিয়া লুটিয়া পুটিয়া খাইতে পারে। তার উপরে নতুন পুরাতন মিলিয়া ১০/১১ লাখ রোহিঙ্গার ভার সহিতে অামাগো দেশের অবস্থা কাহিল হইয়া পড়িতেছে। মা গো মগের মুল্লুকের নির্যাতিত মুসলমান হিসেবে সীমান্ত খুলিয়া দিয়া অাপনি মানবতা দেখাইছেন ভাল কথা। কিন্তু মইগ্যার দেশের মানুষ গুলো বড়ই বেইজ্জতি খাইস্যতের। তাহারা এই দেশে অাসিয়া অাশ্রয় লইয়া ভাল ভাবে চলিবারতো দুরের কথাতাহারা হেনতেন কাজ করা বাকী নাই যাহা এই দেশের জন্য রীতিমত টেনশন না করার মত। তারা অাসার সময় কাঁথা বালিশের লগে নিয়া অাসিতেছে হাজার হাজার লাল বড়ি না কি জানি বাবা বড়ি। সাথে নিয়া আইতাছে মরণঘাতি ব্যাধি এইডসের ভাইরাস। সিভিল সার্জন বাবু কহিল এপর্যন্ত নাকি ধরা পড়ছে ৯৭ জন। অারো থাকিতে পারে। রোহিঙ্গা নারীদের লইয়া এই দেশের কিছু দালাল টাইপের পোলা পাইনরা যেই রকম পিটিস পাটিস শুরু করিয়াছে তাহাতে এন্টিভাইরাস লাগাইয়াও এই দেশ রক্ষা করিতে পারিবেন কিনা অামার সন্দেহ হইতাছে। কারণ লক্ষণ গুলো ইতিমধ্যেই আপনি ও অাপনার প্রশাসনের বাহিনীরা দেখিতেছে। রোহিঙ্গা নারী পুরুষরা এই দেশের দালালদের মা বাবা বানাইয়া বাঙ্গালী সাজিয়া পাসপোর্ট বানাইয়া সৌদি আরব সহ বিভিন্ন দেশে চলিয়া যাইতাছে। মা গো আপনার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়তো ইতিমধ্যেই জানিয়াছে, যে সৌদি থেকে বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়া ৬ জন রোহিঙ্গা সনাক্ত করিয়া এই দেশে পাঠাইয়া দিয়াছিল। তাগোরে অাবার ফেরৎ দিয়াছেন। এতে আরইব্যারা আরো ক্ষেপিয়া গিয়া আমাগো দুতাবাসে প্রতিবাদ করিয়া সেই দেশের জেলখানায় থাকা অারো ২৭৩ জন রোহিঙ্গা সনাক্ত করিয়া অারো বড় একখানা ফর্দ ধরাইয়া দিয়াছে। মাগো রোহিঙ্গারা এই সুযোগ পাইলে সৌদিতে থাকা ১৫ লাখ বাঙ্গালীর উপর কেয়ামতের আলামত শুরু হইয়া যাইব। মা গো বায়োমেট্রিক তেট্রিক করিয়া রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করিয়া এক জায়গায় কুন্ডলী দিয়া রাখা যাইত নয়। ১১ লাখের মধ্যে এখনো নাকি সাড়ে ৫ লাখের রেজিষ্ট্রেশন হইয়াছে মাত্র। শুনে সীমান্তে আরো জড়ো হইতাছে আসার লাইগা। মানবতা যা দেখাইছেন তাতেই যথেষ্ট। সীমান্ত সীলগালা কইরা দেন। অার রোহিঙ্গাদের জন্য টেঙ্গার চরে হাজার কুটি টাকার প্রকল্প লইয়া তাগোরে এই দেশে স্থায়ী ভাবে থাকার সুযোগ করিয়া দেওয়াটা ঠিক হইতাছে না বলিয়া জানাইতাছে বিজ্ঞ জনেরা। অতিস্বত্তর মেহমানদের সেই দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।

মা গো আপনার কাছে লেখা পত্র খানীতে আমার অনেক বিয়ষ জমা রহিয়াছে। একবারে সব ফরিয়াদ করা সম্ভব হইতাছে না বলিয়া ফিরিস্তি লম্বা করিলাম না। তবে দুই এক্কান সমস্যার কথা তুলিয়া ধরিবার জন্য অামাকে গেরামের লোকজন বলিতেছে।
অামাগো পেঁয়াজ আলী খাঁন নাকি বেশী হ্যাডাম দেখাইতাছে। তার হ্যাঁডাম নাকি বানিজ্য মন্ত্রীও দমাইতে পারিবে না। বাজারে তার কেজি নাকি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হইতাছে। অামার মত গরীব পোড়া কপাইল্যারা পেঁয়াজের লেজে রশি বাঁধিয়া দিয়া তরকারির ডেকসিতে চুবাইয়া চুবাইয়া পেঁয়াজ আলী বাবার পানি পড়া খাইতাছে। রোজা রমজাইন্যা দিন হইলে এমন দাম বাড়ানো মানিতে পারিতাম। অডৌক্তিক দাম বাড়াটা গরীব মানুষ গুলো মানিতে পারিতেছে না। মা গো অাপনি চাইলে বানিজ্য মন্ত্রীরে একটু টাইট কইরা দিলে পেঁয়াজ অালী খাঁনের লাগাম একটু টানিয়া ধরিতে পারিবেন। নচেৎ অাগামী রমজানে হইলে মানুষকে যাদুঘর থেকে পেঁয়াজ কিনার জন্য লাইন ধরিতে হইবে।

মানবতার মা জননী গো, আপনি এই খেতাব পাইছেন বলিয়া অাপনাকে বলার জন্য কয়লা বিদ্যুতের রাজধানী মাতারবাড়ীর ভাতিজা কেরামত অালী অামার কাছে এক্কান ফর্দ পাঠাইছে, সে কহিল আপনি এই দেশটারে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য অায়ের দেশে উন্নীত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করিয়া যাইতাছেন। এই জন্য অাপনি গ্যাস,বিদ্যুৎ,জ্বালানি সেক্টর এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়িয়া তুলিবার জন্য নানাবিদ উন্নয়ন মুলক মেগা প্রকল্প হাতে নিয়াছেন। তাও আবার বেশ কিছু প্রকল্প অামাদের মহেশখালী দ্বীপে। এই প্রকল্প নেওয়ার শুরুতে এই দ্বীপের মানুষ জমি দিতে নারাজ থাকিলেও এখন অামরা প্রতিবাদ করিতেছি না। অাপনি যাহা করিতেছেন তাহা অামাগো জনগনের ভালোর লাইগ্যা করিতেছেন। তবে মা গো এক্কান কথা হইল গিয়া কি জানেন? প্রকল্পের স্থান গুলো ঠিক চিহ্নিত করিতে একটু অদুরদর্শিত ভাবে করা হইয়াছে। অামাগো স্বর্ণদ্বীপ খ্যাত মহেশখালীর মাটিতে কিন্তু সোনা ফলে। এই দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখার মত ফসল কালো সোনা খ্যাত চিংড়ী, সাদা সোনা খ্যাত লবণ এর রাজধানী কিন্তু মহেশখালীতেই। সেই ধান,পান,লবণ চিংড়ীর তিন চাষ্য জমি গুলো নষ্ট না করিয়া এর পার্শ্ববর্তী সামান্য পশ্চিমে হাজার হাজার একর জেগে উঠা চরে যদি করা যেত তাহা হইলে লবণ চিংড়ীর একটি খাত বন্ধ না হইয়া কয়লা বিদ্যুত আর লবণ চিংড়ী দুইটাই করা যাইত। অর্থনৈতিক অঞ্চল আর গভীর সমুদো বন্দর করার মত জায়গাও অামাদের প্রচুর অাছে।  শুধু মাত্র হুট করিয়া শুরুতেই ফসলী নষ্ট করাতেই অামাদের মানুষ গুলো প্রতিবাদ করতে চাহিয়াছিল। যাক, মা গো অামরা জমি দিয়া দিলাম। তার পরও আপনি চাইলে জনগনের ফসলী জমি নষ্ট না হওয়ার মত প্রকল্প টারে একটু ঠেলিয়া সামান্য পশ্চিমে বসাইতে পারিলে জনগন উপকৃত হইবে। অার এক্কান কথা, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুতের প্রকল্পের জায়গা ছাড়িয়া দিয়া যাহারা ঘরবাড়ী ব্যবসা বানিজ্য হারাইয়া পথে বসিয়াছে তাহাদের ছেলে পিলেদের নাকি ওইখানে কাজে কর্মে চাকরি না দিয়া দালালরা টাকার বিনিময়ে অন্য লোকরে চাকরি দিতেছে। স্থানীয় উদ্বাস্তুরা নাকি কাফনের কাপড় পড়িয়া প্রতিবাদ করিতেছে। অাপনি চাইলে মানবতার খাতিরে ককস বাজারের মাননীয় ডিসি সাহেবের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করিতে পারেন।

মা গো আপনি সারা বিশ্বের মধ্যে শান্ত শিষ্ট ও ব্রিলিয়ান্ট শাসক হিসেবে ৩য় স্থান পাইয়া অামাগোরে ধন্য করিয়াছেন। তাই অাপনারে না বলিয়া এই অধমের ফরিয়াদ কাহারে সুধাইব। তাই অাপনাকে বলার অনেক অভাব অভিযোগ ও ফরিয়াদ অামার কাছে গেরামের মানুষ গুলো জমা করিতেছে। এই পর্বে সব বলা সম্ভব নয়। তবু কয়েকটি বিষয় আপনার পাক দরবারে পৌছাইয়া দিতে চাই। সেই গুলি হইল, ইয়াবা বানিজ্য নিয়া অাপনার অাইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত হইয়া অাপনার মান সম্মান নষ্ট করিয়া বেইজ্জ্যতি করিয়া ফেলাইতাছে। সেদিকে একটু খেয়াল রাখিলে ভাল হয়। জানি অাপনি আগামী জাতীয় নির্বাচন নির্বাচন লইয়া বড়ই টেনশনে অাছেন। চিন্তা না করিয়া যেই সব এমপিরা ক্ষমতা লইয়া বেশী অাকাম কুকাম করিয়া অামল নামা ভারি করিয়াছেন এবং অঢেল সম্পদ অার টাকা বানাইয়া ফেলেছেন, অাপনার বিশ্বস্থ গুরিন্দা বাহিনীর মাধ্যমে খবর লইয়া তাগোরে ফটাফট বোল্ডআউট করিয়া সৎ যোগ্য নেতাদের নমিনেশন দিয়া দিলে আপনার দেশ,দল ও গদী ঠিক থাকিবে।  অাইজ অার নয়। আগামী সপ্তাহে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লইয়া এই অধম অাপনার দরবারে হাজির হইব। প্রস্তুতি মুলক এই চিঠি খানায় অনেক কথা বার্তা লিখিয়া ফেলাইয়াছি। গোস্তাকি মাফ কইরেন মা জননী। ভুল হইলে নিজ গুনে ক্ষমা করিয়া দিবেন। আপনার জন্য দোয়া করি, আপনি যেন অারো হাজার বছর বাঁচিয়া থাকিয়া এই বাংলার ৬৮ হাজার গ্রামের জনগনের খেদমত করতে পারেন।
তারিখ- ১ ডিসেম্বর-২০১৭ ইং

ইতি-
৬৮ হাজার গ্রাম বাংলার জনগনের খাদেম
অধম দেওয়ান ফরিদ গাজী