ডেস্ক নিউজ:

ভালোবেসে বিয়ে করেন ক্রিকেটার আরাফান সানি ও নাসরিন সুলতানা। বিয়ের পর তাদের সংসার চলছিল সুখে-শান্তিতে। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতে দুজনের মধ্যে হয় ভুল বোঝাবুঝি। নাসরিন সুলতানা তার স্বামীর বিরুদ্ধে পরপর তিনটি মামলা করেন। মামলার পর সানিকে জেল খাটতে হয় ৫৩ দিন।

সব ভুলের অবসানের পর এখন সংসার করছেন তারা। সানির বিরুদ্ধে দায়ের করা তিন মামলার মধ্যে সচল রয়েছে একটি মামলা। বাকি দুই মামলার মধ্যে একটি প্রত্যাহার করেছেন নাসরিন এবং এক মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন সানি ও তার মা নার্গিস আক্তার। সচল মামলাটিও পরবর্তী ধার্য তারিখে নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করছেন নাসরিনের আইনজীবী।

মামলার বাদী নাসরিন সুলতানা জাগো নিউজকে বলেন, সানি ও আমার মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল তার অবসান হয়েছে। আমরা এখন সংসার করছি। আমাদের মধ্যে আর কোনো সমস্যা নেই।

তাদের সংসার করার কথা আরাফাত সানির মা নার্গিস আক্তারও জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সানি তার বউ নাসরিনকে নিয়ে সংসার করছে।’

নাসরিনের আইনজীবী দেলোয়ার জাহান রুমি বলেন, ক্রিকেটার সানি ও নাসরিন সুলতানার মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হওয়ায় তারা সংসার করবেন বলে সমঝোতায় পৌঁছেছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘চলতি বছরের শুরুতে নাসরিন সুলতানা ক্রিকেটার সানির বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেন। এর মধ্যে যৌতুকের মামলাটি নাসরিন প্রত্যাহার করেছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলা থেকে সানি ও তার মাকে অব্যাহতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের  মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। পরবর্তী তারিখে এই মামলাটিও নিষ্পত্তি হবে- আশা করছি।’ সানির বিরুদ্ধে নাসরিনের তিন মামলার সর্বশেষ অবস্থা

সানির বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে প্রথম মামলা

২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর আরাফাত সানির সঙ্গে নাসরিন সুলতানার বিয়ে হয়। গত বছরের ১২ জুন আরাফাত সানি দুজনের কিছু ব্যক্তিগত ছবি এবং ওই তরুণীর কিছু আপত্তিকর ছবি ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে পাঠান। ছবি পাঠিয়ে আরাফাত সানি ওই তরুণীকে হুমকি দেন। ২৫ নভেম্বর ওই তরুণীকে ফের আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে হুমকি দেন আরাফাত সানি। এ ঘটনায় ওই তরুণী বাদী হয়ে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করেন। এরপর ৬ এপ্রিল মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ জামানের আদালতে সানিকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইয়াহিয়া। ১২ আগস্ট বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাইফুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ২১ নভেম্বর প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের দিন নাসরিন তার স্বামী সানির পক্ষে সাক্ষী দেন। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি মামলাটির পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।

যৌতুকের দ্বিতীয় মামলা

২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করার অভিযোগে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে আরাফাত সানির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলা করেন নাসরিন সুলতানা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ৫ এপ্রিলের মধ্যে সানিকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন। তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলে মামলাটি নাসরিন সুলতানা প্রত্যাহার করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তৃতীয় মামলা

২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বরে ক্রিকেটার আরাফাত সানির সঙ্গে পাঁচ লাখ এক টাকা দেনমোহরে নাসরিন সুলতানার বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস পর ক্রিকেটার আরাফাত সানি নাসরিনের কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকার জন্য সানি তার স্ত্রীকে মারধর করেন এবং গালিগালাজ করে ভাড়া বাসায় রেখে যান।

গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য মারধরের এমন অভিযোগে আরাফাত সানি ও তার মায়ের বিরুদ্ধে ঢাকার ৪ নংনারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তৃতীয় মামলাটি করেন নাসরিন। এরপর আদালত মামলাটি মোহাম্মদপুর থানাকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন। ৮ ফেব্রুয়ারি আরাফাত সানি ও তার মা নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি এজাহার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে মোহাম্মদপুর থানা। ১৭ আগস্ট সানি ও তার মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. ইয়াহিয়া। ৩০ নভেম্বর ঢাকার ৪ নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক তাবাসুম ইসলাম ক্রিকেটার সানি ও তার মাকে অব্যাহতি দিয়েছেন।