ডেস্ক নিউজ:

‘আগামী এক বছরের মধ্যেই উত্তরের ফুটপাত এমনভাবে গড়া হবে যেন, অন্ধজনও সহজে চলতে পারেন।’

চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সদ্যপ্রয়াত মেয়র আনিসুল হক নগরীর ফুটপাতের সংস্কার করে অন্ধজনদের চলাচলের জন্য ফুটপাত তৈরির এ স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলেন।

নগরীর ফুটপাতের বেহালদশা দেখে দৃঢ় ইস্পাত কঠিন কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘মোটরসাইকেল ফুটপাতে উঠলেই তাকে ধরে পুলিশে দিন। অনেক প্রাইভেটকার ফুটপাতে চাকা তুলে দেয়। এমন দেখলেও পুলিশে দিন। এখন থেকে আর এসব চলতে দেয়া হবে না।’

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তরের নগরপিতা নির্বাচিত হন আনিসুল হক। ৬ মে শপথগ্রহণ ও ১৪ মে থেকে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। একসময়ের বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) সফল উপস্থাপক ও পরবর্তীতে সফল ব্যবসায়ী নেতা মেয়র হিসেবে কতটুকু সফলতা পাবেন তা নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত ছিলেন।

নির্বাচনের আগেই ‘আমরা ঢাকা’ শিরোনাম দিয়ে পরিচ্ছন্ন, সবুজ, আলোকিত ও মানবিক ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন আনিসুল। ‘সমস্যা চিহ্নিত, এবার সমাধানযাত্রা’ স্লোগান দিয়ে নিরাপদ স্বাস্থ্যকর ঢাকা, সচল ঢাকা, মানবিক উন্নয়নের ঢাকা, স্মার্ট ও ডিজিটাল ঢাকা, অংশগ্রহণমূলক ও সুশাসিত ঢাকা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এছাড়াও তিনি মশামুক্ত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকীকরণ, স্মার্ট কার্ড প্রদান, ফরমালিনমুক্ত ও নিরাপদ বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলা, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, মাদক ও সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ, সড়কগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা, স্কুলে হেলথ প্রোগ্রাম চালু, সাংবাদিক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য মিডিয়া সেন্টার করাসহ বিভিন্ন স্বপ্ন দেখান।

মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি ডিএনসিসিকে নিয়ে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নের বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেন। নানা হুমকি-ধামকিকে উপেক্ষা করে যত্রতত্র বিলবোর্ড অপসারণ, তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন সড়ক থেকে অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদ ও কল্যাণপুর থেকে গাবতলী পর্যন্ত সড়ক ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ড সড়ককে পার্কিংমুক্ত করেছেন।

এছাড়া ময়লা-আবর্জনা সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণের জন্য মিনি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ, মশা নিয়ন্ত্রণে হস্তচালিত স্প্রে মেশিন ও ফগার মেশিন, জলাবদ্ধতা দ্রুত করতে অত্যাধুনিক মেশিন কেনেন।

অনেক স্বপ্নের কিছু স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন আবার কিছু কিছু করতে পারেননি। অনেক স্বপ্ন বাস্তবায়ন না করেই বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্বপ্নবাজ এই নগরপিতা।