মিয়ানমারের ইচ্ছে অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ১৯৯২ সালের চুক্তি অনুসরণ করা হয়েছে। শনিবার (২৫ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘১৯৯২ সালের চুক্তি তারা অনুসরণ করতে চায়। সেভাবেই জিনিসটি করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ফিরিয়ে নেওয়া। এতে ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে, এটা নাই সেটা নাই- এসব বলে লাভ নাই।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত এই চুক্তি হওয়ার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, ১৯৯২ সালের ওই চুক্তি অনুসরণযোগ্য নয়।

মিয়ানমারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত কোনও সময়সীমা নেই- এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রী বলেন, ‘ফিরিয়ে নেওয়ার কোনও টাইমফ্রেম দেওয়া যায় না। প্র্যাকটিক্যাল ব্যাপার হলো, এরকম কোনও টাইমফ্রেম দিয়ে কোনও লাভও নেই।’

মন্ত্রী জানান, ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর থেকে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে তাদের আগে পাঠানো হবে। আর এর আগে থেকেই যারা আছে (প্রায় তিন লাখের মতো) তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয় পরে বিবেচনা করা হবে।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার পর রোহিঙ্গাদের তাদের সাবেক আবাসস্থল বা পছন্দ অনুযায়ী কাছাকাছি কোনও স্থানে পুনর্বাসিত করা হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে সীমিত সময়ের জন্য রাখা হবে। এছাড়া যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে।’

মন্ত্রী জানান, যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ার জটিলতা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

এই প্রত্যাবাসন চুক্তির কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা আছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু আইন থাকলেও লঙ্ঘন হয়। আইন দিয়ে কিছু হয় না। মূল কথা হলো কোনও দেশ এটি মানছে কিনা।’

চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে– এক সাংবাদিক এরকম মন্তব্য করলে মন্ত্রী বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি সন্তুষ্ট। আপনার মন্তব্য অত্যন্ত চমৎকার। আমার মনে হয় এটি অত্যন্ত হাস্যকর মন্তব্য। গোটা পৃথিবী একদিকে বলছে, আপনি বলছেন এটি কোনও চুক্তি হয়নি। স্বার্থ কে ঠিক করে? যে সরকার ক্ষমতায় আছে সেই ঠিক করে। আমরা স্বার্থ ঠিক করেছি।’