আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সহিংসতার কারণে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কার্যক্রম স্বেচ্ছাসেবামূলক হতে হবে এবং তাদেরকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য সমস্ত শর্ত পূরণ করতে হবে। শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশন (ইউএনএইচসিআর) এ কথা জানিয়েছে।

ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র আদ্রিয়ান এডওয়ার্ড জাতিসংঘের সদর দফতর জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘বর্তমানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো নিরাপদ অবস্থায় নেই। আর সেখানে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে গেলে তা টেকসই হবে না।’

‘এখনও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। রাখাইনে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গারা নির্মম অত্যাচার সহ্য করছে, ধর্ষণের শিকার হচ্ছে এবং মানসিক অবসাদে ভুগছে’ বলেও বর্ণনা করেন ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র।

তিনি আরও জানান, ‘অনেকেই তাদের পরিবারের সদস্য এবং স্বজনদের খুন হওয়ার সাক্ষী হচ্ছে। হাতেগোনা কিছু মানুষ এমনকি কেউ তাদের বিধ্বস্ত বসতভিটায় ফিরে যাচ্ছে না। চরম দুরাবস্থার মধ্য দিয়ে দিন পার করা সম্প্রদায়টি এখনও দিশেহারা। উত্তর রাখাইনে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গাদের কাছে ঠিকমতো মানবিক সহায়তা পৌঁছানোও সম্ভব হয়নি।’

এরই মধ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে সেই কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

আদ্রিয়ান এডওয়ার্ড জানান, তারা দু’দেশের করা চুক্তি বিস্তারিতভাবে পর্যবেক্ষণের অপেক্ষায় রয়েছেন। আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনে রোহিঙ্গা ফেরানো উচিত বলে মনে করেন তিনি। এজন্য ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারকে সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশের বেশ কিছু তল্লাশি চৌকিতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার জেরে রোহিঙ্গা নিধন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধদের তাণ্ডবে ছয় লাখ ২২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

ইউএনএইচসিআর এখনও মিয়ানমার-বাংলাদেশের করা চুক্তি পর্যবেক্ষণ করেনি। আদ্রিয়ান এডওয়ার্ডের মতে, শরণার্থীদের সেখানে ফিরে যাওয়ার অধিকার রয়েছে। আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনে তাদের ফেরানো হলে আমরা সেই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।