আমাদের সময়:

নৌবাহিনীর জন্য স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় জিটুজি ভিত্তিতে ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ নামে এ ঘাঁটি নির্মাণের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আর এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে যুগ্ম সচিব পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে মনোনয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে গত ৫ নভেম্বর অর্থ বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি পাঠান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এসএম আবুল কালাম আজাদ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়ায় ওই ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এরই মধ্যে ওই এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সাবমেরিনের জন্য স্থায়ী ঘাঁটি নির্মাণের লক্ষ্যে চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নৌবাহিনীর একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। নৌবাহিনীতে সম্প্রতি দুটি সাবমেরিন সংযোজিত হওয়ার পর এ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি।
সূত্র আরও জানায়, চলতি বছরের ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবমেরিন দুটির কমিশনিং করেন। এ দুটির নাম রাখা হয় বানৌজা জয়যাত্রা ও বানৌজা নবযাত্রা।

জানা গেছে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আধুনিক বাহিনীতে রূপান্তর ও ক্ষমতা বাড়াতে ১০ বছরব্যাপী একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বর্তমান সরকার সাবমেরিন নৌঘাঁটি স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের দায়িতপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক সম্প্রতি সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জানান, ২০১০-২০১৬ সময়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে একটি হাইড্রোগ্রাফিক ভেসেল, পাঁচটি প্যাট্রোল ক্রাফট, দুটি লার্জ প্যাট্রোল ক্রাফট, চারটি ফ্রিগেট, চারটি করভেট, একটি ফ্লিট ট্যাঙ্কার, দুটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি, দুটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাঙ্ক, দুটি কন্টেইনার ভেসেল, দুটি মেরিটাইল হেলিকপ্টার, দুটি মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট সংযোজিত হয়েছে।
নৌবাহিনীতে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র সংযোজনের বিষয়টি তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, দুটি জাহাজ বানৌজা স্বাধীনতা এবং বানৌজা প্রত্যয়ে সার্ফেস টু সার্ফেস এবং সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল সি-৮০২এ, এফএল-৩০০এন স্যাম স্থাপিত হয়েছে।
বানৌজা ওসমানে রকেট ডেপথ চার্জ টাইপ ডিসিএল-০০৩ডি স্থাপিত হয়েছে। এটি ৯.৪ মিটার/সেকেন্ড দূরত্বে পানির তলদেশে সর্বোচ্চ ৫০০ মিটার গভীরে আঘাত হানতে পারে। এ ছাড়া বানৌজা বঙ্গবন্ধুর যুদ্ধ সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অটোম্যাট এমকে-২ মিসাইল কেনা হয়েছে। নৌবাহিনীর মিসাইল বোট এবং জাহাজে সংযোজন করা হয়েছে আধুনিক সি-৭০৪ মিসাইল। পাশাপাশি জাহাজ থেকে শত্রু বিমানকে ধ্বংস করার জন্য শোল্ডার লঞ্চড কিউডব্লিউ-২ স্যাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এ ছাড়া সমুদ্র এলাকায় দ্রুত নজরদারি, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অপারেশন, জরুরি সেবা ও একান্ত অর্থনৈতিক এলাকায় সার্বক্ষণিক নজরদারির লক্ষ্যে নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে দুটি হেলিকপ্টার এবং দুটি মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট (এমপিএ)।