হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ:
টেকনাফের হরিখোলাসহ বিভিন্ন গ্রামে ধান ক্ষেতে বন্য হাতি তান্ডব পাকা ধান নষ্ট করছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হোয়াইক্যং ইউনিয়নের হরিখোলা গ্রামের বাসিন্দা বংএ চাকমার স্ত্রী কৃষাণী লাবংছিং চাকমা ক্ষতিপুরণ দাবি করে ২১ নভেম্বর টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করেছেন।
এদিকে রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়া-টেকনাফের জনগনের পাশাপাশি বন্যপ্রাণীও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাহাড় ও বন জঙ্গলসহ আবাসস্থল সাবাড়ের কারণে গ্রামাঞ্চলে হানা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষেত খামারের ক্ষতি করছে বন্য পশুরা। টেকনাফ, হ্নীলা, হোয়াইক্যং ও বাহারছড়ায় ইতিমধ্যে বন্য হাতির পাল হানা দিয়ে কয়েক লক্ষাধিক টাকার ধান ও বিভিন্ন প্রকার শষ্য ক্ষেত নষ্ট করেছে। এর আগে ১৮ নভেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় টেকনাফ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বীজ ও সার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি সিআইপির কাছে কৃষক-কৃষাণীরা অভিযোগগুলো তুলে ধরেন। হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী গ্রামের কৃষক ফরিদুল আলম অভিযোগ করে বলেন, কৃষি কাজ হচ্ছে তার পেশা। সম্প্রতি একদল বন্য হাতির দল তার ধান ও শষ্য ক্ষেতে ফলন পাওয়ার প্রাক্কালে হানা দিয়ে তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছে। এখন সে নিংস্ব হয়ে পরিবার নিয়ে খুব সমস্যাই রয়েছে। তিনি এর উপযুক্ত ক্ষতিপূরন দাবী করেন। একই অভিযোগ করেন হোয়াইক্যংয়ের হরিখোলার কৃষাণী লাবংছিং চাকমা। তিনি জানান, ঋণ নিয়ে অনেক কষ্টে ১.২ একর জমিতে ধান চাষ করেছেন। ফলন পাওয়ার সময় বন্য হাতিরা হানা দিয়ে খেয়ে পেলেছে এবং নষ্ট করেছে। এতে ১ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন ঋণ শোধ করার মতো টাকা নেই। তিনিও ক্ষতিপুরনের দাবী জানান। এসময় বন্য পশু কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্থ আরও একাধিক কৃষক-কৃষাণী এমপি আবদুর রহমান বদির কাছে সাহায্য চেয়ে অভিযোগ করলে তিনি তাদের উপযুক্ত ক্ষতি পুরণের আশ্বাস প্রদান করেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও এবং কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। এছাড়া আরও কয়েকজন কৃষক-কৃষাণী উক্ত অনুষ্টানে পানি সমস্যা, ব্রীজের সমস্যা, পাহাড়ী পানি আটকানো, সেচ সমস্যা, রাস্তার সমস্যার কথা তুলে ধরলে তিনি মনোযোগ সহকারে শুনে তা যথানিয়মে দ্রুত সমাধান করার আশ্বাস দেন।
উক্ত অনুষ্টানে এমপি আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি সিআইপি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। কৃষিই সমৃদ্ধি বয়ে আনে। রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়া-টেকনাফের মানুষ যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তেমনি ভাবে বণ্য প্রাণীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাহাড়ের গাছপালা কেটে চারণ ভূমি সাবাড় করার কারণে পশুদের খাদ্য নেই, বন্যপশুদের এখন হাহাকার অবস্থা চলছে। ফলে গ্রামাঞ্চলে হানা দেওয়া স্বাভাবিক। কৃষকরা ক্ষতি হলে তার ভূক্তভোগী আমাদেরও হতে হবে। তাই কৃষকদের উপযুক্ত ক্ষতিপুরনের জন্য বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করা হবে’।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।