মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী ॥
জেলা ও দায়রা জজ

১ম পরিচ্ছেদ-প্রারম্ভিক

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনামা, প্রয়োগ ও প্রবর্তন :- (১) এই আইন অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ নামে অভিহিত হইবে।

(২) সমগ্র বাংলাদেশে ইহার প্রয়োগ হইবে।

(৩) এই আইনের ৪৬ ও ৪৭ এর বিধানদ্বয় উক্ত ধারাদ্বয়ে উল্লিখিত সময়ে এবং বাকি বিধানসমূহ ২০০৩ সালের ১লা মে তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

অত্র আইনের ধারা ১ এ শিরোনামায় অত্র আইনের পরিচয়, প্রয়োগযোগ্য এলাকা ও বলবৎ হওয়ার তারিখ সম্পর্কে সবিস্তারে উল্লেখ করা হইয়াছে। ধারা ১(১) মতে এই আইনের নামকরণ করা হইয়াছে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩। ধারা ১(২) অনুসারে এই আইন সমগ্র বাংলাদেশে প্রয়োগের নিমিত্ত সংসদ কর্তৃক গৃহীতক্রমে ২৬শে ফাল্গুন ১৪০৯ মোতাবেক ১০ই মার্চ, ২০০৩ইং মহামান্য রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে। তাই এই আইন সমগ্র বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে প্রয়োগ হইবে। ধারা ১(৩) অনুযায়ী প্রবর্তনের ক্ষেত্রে অত্র আইনের ৪৬ ধারায় বর্ণিত মামলা দায়ের সম্পর্কিত বিশেষ বিধান ও সময়সীমা এবং ৪৭ ধারায় বর্ণিত দাবি আরোপের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কিত বিষয়াদি ২০০৪ সনের ১লা মে হইতে এবং অত্র আইনের অন্যান্য বিধানাবলী ২০০৩ সনের ১লা মে হইতে কার্যকর করা হয়।

২। সংজ্ঞা :- বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-

(ক) “আর্থিক প্রতিষ্ঠান” অর্থ-

(১) Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O.No.127 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংক;

(২) Bangladesh Bank (Nationalisation) Order, 1972 (P.O.No.26 of 1972) এর অধীন গঠিত ব্যাংক;

(৩) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ১৪নং আইন এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বা পরিচালিত ব্যাংক কোম্পানী;

(৪) Bangladesh House Building Finance Corporation Order, 1973 (P.O.No. 7 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত গৃহ নির্মাণ ঋণদান কর্পোরেশন;

(৫)Investment Corporation of Bangladesh House Ordinance, 1976 (Ordinance No. XL of 1976) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ;

(৬)The Bangladesh Shilpa Rin Sangstha Order, 1972 (1[P.O.No. 128] of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা;

(৭)The Bangladesh Shilpa Bank Order, 1972 2[1972] (P.O.No. 129] of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক;

(৮)The Bangladesh Krishi Bank Order, 1973 (P.O.No. 27 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক;

(৯)The Rajshahi Krishi Unnayan Bank Ordinance, 1986 (Ordinance No. LVIII, of 1986) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক;

(১০)The Bangladesh Small and Cottage Industries Corporation Act (E.P. Act XVII of 1959) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন;

(১১) আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান;

12) International Finance Corporation (IFC);
(13) Commonwealth Development Corporation (CDC);
(14) Islamic Development Bank (IDB);
(15) Asian Development Bank (ADB);
(16) International Bank for Reconstruction and Development (IBRD);
(17) International Development Association (IDA);

৩ [(১৮) কোন আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যাংক।]

(খ) “আদালত” বা অথ ঋণ আদালত” অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ধারা ৪ এ উল্লিখিত অধীন প্রতিষ্ঠিত বা ঘোষিত কোন আদালত অথবা অর্থ ঋণ আদালত হিসাবে গণ্য হইবে মর্মে কোন যুগ্ম-জেলা জজের আদালত।

(গ) “ঋণ” অর্থ-

(১) অগ্রিম, ধার, নগদ ঋণ, ওভার ড্রাফট, ব্যাংকিং ক্রেডিট, বাটাকৃত বা ক্রয়কৃত বিল, ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পরিচালিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিনিয়োগকৃত অর্থ বা অন্য কোন আর্থিক আনুকূল্য বা সুযোগ-সুবিধা, যে নামেই অভিহিত হউক না কেন;

(২) গ্যারান্টি, ইনডেমনিটি, ঋণপত্র বা অন্য কোন আর্থিক বন্দোবস্ত যাহা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ গ্রহীতার পক্ষে প্রদান বা জারী করে বা দায় হিসাবে গ্রহণ করে;

(৩) কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উহার কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে প্রদত্ত কোন ঋণ; এবং

(৪) পূর্ববর্তী ক্রমিক (১) হইতে (৩) এ উল্লেখিত ঋণ, বা ক্ষেত্রমত ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী পরিচালিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিনিয়োগকৃত অর্থ এর উপর বৈধভাবে আরোপিত সুদ, দন্ড সুদ বা মুনাফা বা ভাড়া;

(ঘ) “সরকার” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

বিশ্লেষণ

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে আইনে ব্যবহৃত শব্দ অবশ্যই আইনের সংজ্ঞার আলোকে বিশ্লেষিত হইবে। এই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধানটি সমস্ত আইনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য (Commissioner of sales tax, State of Gujrat v. Union Medical Agency, 1981, 1 SCC 51)। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে অত্র আইনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আদালত বা অর্থ ঋণ আদালত, ঋণ ও সরকার অর্থ ধারা ২ এ যথাক্রমে (ক), (খ), (গ) ও (ঘ) দফাসমূহে যে অর্থে ব্যাখ্যা করা হইয়াছে সেই অর্থে ব্যবহৃত হইবে মর্মে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ বর্ণিত বিষয়সমূহ ধারা ২ এ সংজ্ঞায় বর্ণিত অবস্থার পরিপন্থী কোন ব্যাখ্যা করা যাইবেনা। আর্থিক প্রতিষ্ঠান কি তাহা সুস্পষ্টভাবে ধারা ২ (ক) দফায় ১৭টি ক্রমিকে উল্লেখ করা হয়। বর্ণিত ১৭টি ক্রমিকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলি ব্যতীত অন্য কোন প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ের জন্য অত্র আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত অর্থ ঋণ আইনে দায়ের করা যাবে না।

পরবর্তীতে অর্থ ঋণ আদালত সংশোধন আইন, ২০০৪ সনের ১১নং আইনের মাধ্যমে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর ৮নং ধারা ২ এর দফা (ক) এর ক্রমিক নং ১৮ সংযোজন করিয়া কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যাংক অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফলে ধারা ২ এ বর্ণিত ১-১৮ নং ক্রমিক পর্যন্ত বর্ণিত প্রতিষ্ঠানসমূহ অর্থ ঋণ আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাপূর্ব সময়ে যে সকল ব্যাংক, ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনা হইত ঐ সকল ব্যাংকসমূহ Bangladesh Banks (Nationalisation) Order, 1972 (P.O.No.26 of 1972) এর তফসিল অনুসারে নি¤œলিখিত ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় যথা- The National Bank of Pakistan, The Bank of Bahawalpur Ltd. I The Premier Bank Ltd. wbqv †mvbvjx e¨vsK, The Habib Bank Ltd. I The Commerce Bank Ltd. wbqv AMÖYx e¨vsK, The United Bank Ltd. I The Union Bank Ltd. wbqv RbZv e¨vsK, The Muslim Commercial Bank Ltd., The Standard Bank Ltd. I The Australiasia Bank Ltd. wbqv iƒcvjx e¨vsK, The Eastern Mercantile Bank Ltd. wbqv cyevjx e¨vsK Ges The Eastern Banking Corporation Ltd. wbqv DËiv e¨vsK| ধারা ২ (ক)(৩) এ আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থ ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বা পরিচালিত ব্যাংক কোম্পানীকেও বুঝানো হইয়াছে। ব্যাংকসমূহকে দুইভাগে ভাগ করা যায় যথা: তফসিলভুক্ত ব্যাংক ও অ-তফসিলভুক্ত ব্যাংক। তফসিলভুক্ত ব্যাংক সমূহ ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (২০১৩ সংশোধিত) এর অধীনে লাইসেন্স নিয়া ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনা করে। অন্যদিকে অ-তফসিলভুক্ত ব্যাংক বিশেষ ও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (২০১৩ সংশোধিত) এর অধীনে লাইসেন্স নিয়া ব্যাংকিং কার্য পরিচালনা করে। উক্ত ধরনের ব্যাংক তফসিলভুক্ত ব্যাংকের কাজ পরিচালনা করিতে পারে না। বাংলাদেশে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O.No.127 of 1972) এর অধীনে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাবে পরিচালিত হয়।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ যথা : (১) সোনালী ব্যাংক (২) অগ্রণী ব্যাংক (৩) রূপালী ব্যাংক ও (৪) জনতা ব্যাংক।

প্রাইভেট বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ যথা : (১) উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড (২) ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (৩) আরব-বাংলাদেশ ব্যাংক লিমিটেড (৪) পূবালী ব্যাংক লিমিটেড (৫) ডাচ্ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (৬) আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড (৭) ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (৮) দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড (৯) ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড (১০) ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (১১) এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড (১২) মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড (১৩) সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড (১৪) প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড (১৫) প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড (১৬) বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড (১৭) ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড (১৮) মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড (১৯) স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড (২০) ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড (২১) ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড (২২) যমুনা ব্যাংক লিমিটেড (২৩) এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (২৪) এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড (২৫) মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড (২৬) ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড (২৭) ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেড (২৮) মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড (২৯) সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এবং কমার্স ব্যাংক লিমিটেড (৩০) মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড।

ইসলামি কমার্শিয়াল বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহ যথা : (১) ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (২) শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড (৩) ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড (৪) এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অফ বাংলাদেশ (৫) আল-আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড (৬) সোস্যাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড (৭) আইসিবি ইসলামি ব্যাংক (৮) ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড।

বৈদেশিক বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহ যথা : (১) সিটি ব্যাংক এনএ (২) এইচএসবিসি (৩) স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক (৪) কমার্সিয়াল ব্যাংক অফ সিলন (৫) স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (৬) হাবিব ব্যাংক লিমিটেড (৭) ন্যাশনাল ব্যাংক অফ পাকিস্তান (৮) ওরি ব্যাংক (৯) ব্যাংক আল-ফালাহ (১০) আইসিআইসিআই ব্যাংক।

বিষেশায়িত উন্নয়ন ব্যাংক সমূহ যথা : (১) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (২) রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (৩) বাংলাদেশ উন্নয়ন ব্যাংক লিমিটেড (৪) বেসিক ব্যাংক লিমিটেড (৫) প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক (৬) গ্রামীণ ব্যাংক (৭) আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক (৮) বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক (৯) কর্মসংস্থান ব্যাংক (১০) প্রগতি করপোরেশন ল্যান্ড মরগেজ ব্যাংক লিমিটেড।

অত্র আইনের ধারা ২ (ক)(১১) এর বর্ণিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান যাহা উক্ত আইন দ্বারা পরিচালিত ও বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

বাংলাদেশে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ যথা : (১) বাংলাদেশ ইন্ডাট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানী লিমিটেড (২) ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (৩) ফারইস্ট ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (৪) ফার্স্ট লিজ ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (৫) জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানী (বাংলাদেশ) লিমিটেড (৬) হজ্জ্ব ফাইন্যান্স কোম্পানী লিমিটেড (৭) ইন্ডাট্রিয়াল এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোম্পানী লিমিটেড (৮) ইন্ডাসট্রিয়াল প্রমোশন এন্ড ডেভলপমেন্ট কোম্পানী অফ বাংলাদেশ লিমিটেড (আইপিডিসি) (৯) ইনফ্রেস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট কোম্পানী লিমিটেড (১০) ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড (১১) ঢাকা মাল্টিপারপোস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড (১২) ইনভেস্টমেন্ট ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড (১৩) এমইস অফ বাংলাদেশ লিমিটেড (১৪) বাহরাইন বাংলাদেশ ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানী লিমিটেড (১৫) বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (১৬) বাংলাদেশ ইন্ডাসট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানী লিমিটেড (১৭) বাংলাদেশ মিচ্যুয়াল সিকিউরিটিস লিমিটেড (১৮) বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা (১৯) বে লিজিং এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (২০) চাটার্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ লিমিটেড (২১) গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেটিব সোসাইটি লিমিটেড (২২) ইসলামিয়া ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট (২৩) মিডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড (২৪) ন্যাশনাল হাউসিং ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (২৫) ওমান বাংলাদেশ লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স লিমিটেড (২৬) ফনিঙ লিজিং কোম্পানী লিমিটেড (২৭) প্রিমিয়ার লিজিং ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (২৮) সাউদিয়া বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া এন্ড এগ্রি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (২৯) দি ইউএই (বাংলাদেশ) ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানী লিমিটেড (৩০) উত্তরা ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (৩১) বণিক বাংলাদেশ লিমিটেড (৩২) আইডিএলসি (৩৩) লংকা বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড (৩৪) ডিবিএইচ।

অত্র আইনের ধারা ২ (খ) এ আদালত বা অর্থ ঋণ আদালত বিষয়ে সংজ্ঞা প্রদান করা হয়। সংজ্ঞানুযায়ী অর্থ ঋণ আদালত অত্র আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ধারা ৪ এ উল্লিখিত অধীন প্রতিষ্ঠিত বা ঘোষিত কোন আদালত বা অর্থ ঋণ আদালত হিসেবে গণ্য হইবে মর্মে কোন যুগ্ম-জেলা জজ আদালতকে বুঝানো হইয়াছে।

ধারা ২(গ) এ “ঋণের” যে সংজ্ঞা দেওয়া হয় তাহা ব্যাখ্যা করিলে দেখা যায় যে, অগ্রিম, ধার, নগদ ঋণসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিনিয়োগকৃত অর্থ বা অন্য যে কোন আর্থিক আনুকূল্য বা সুযোগ-সুবিধা তাহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন তাহা ঋণ হিসেবে অভিহিত হইবে। বর্ণিত ঋণ বা আর্থিক আনুকূল্য বা সুযোগ-সুবিধাদির সহিত বৈধভাবে আরোপিত সুদ, দন্ড সুদ বা মুনাফা বা ভাড়া অন্তর্ভুক্ত হইবে। সংজ্ঞা অনুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উহার কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে প্রদত্ত ঋণও ঋণের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত হইবে।

উল্লেখ্য যে, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্তৃক অর্থ আত্মসাৎ ঋণ হিসেবে বিবেচিত হইবে না বিধায় আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধারের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করার অধিকারী হইবে না।

মহামান্য উচ্চ আদালতের নজির :

Artha Rin Adalat Ain (VIII of 2003), Section 2
Bank Company Act (XIV of 1991), Section 25
section-2 “The Court is definitely permitted to look at the definition of loan in the Ain when the Bank Company Act is silent on the definition of loan.” IFIC Bank ltd. and others Vs. Beximco Holdings Ltd. and others. 57 DLR 154. অর্থাৎ ব্যাংক কোম্পানী এ্যাক্ট এ “ঋণের” সংজ্ঞা সম্পর্কে নীরব থাকিলে আদালত অবশ্যই অর্থ ঋণ আদালত আইনের ধারা ২ এ উল্লিখিত ঋণের সংজ্ঞা দেখিতে পারে।

section-2(Kha)- “The definition clearly indicates that any amount taken from the bank on condition of repayment in whatever name this may be termed comes within the definition of ÒFYÓ Alco hygienic Products Ltd. vs. Islami Bank Bangladesh Ltd. 47 DLR, 264. অর্থাৎ সংজ্ঞা সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে, পরিশোধের শর্তে ব্যাংক হইতে যে কোন পরিমাণ টাকা যে কোন নামে গ্রহণ করিলে তাহা সংজ্ঞার আওতায় “ঋণ” হিসেবে অভিহিত হইবে।

“The suit has been filed not for realization of any loan money from the defendant who was admittedly not a loanee, but he misappropriated the bank money. By no stretch of imagination the suit comes within the provision of Artha Rin Ain.” Agrani Bank, Janna Branch, Manikganj vs. AFM Emamul Haq. 50 DLR, 173. অর্থাৎ বিবাদীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় ঋণ আদায়ের জন্য নহে, যিনি স্বীকৃতমতে ঋণ গ্রহিতা নহেন কিন্তু তিনি ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করেন। কোন ধারণায় মামলাটি অর্থ ঋণ আইনের বিধানের আওতায় পড়ে না।

Artha Rin Adalat Ain (VIII of 2003)
Section 2(ga)(4)
Constitution of Bangladesh, 1972
Article 8(1) & 20(2)
“The rate of interest is subject to control or review by the central bank of the country to ensure that it is justified by the forces of demand and to provide healthy competitiveness amongst the banks and the financial institution. The mechanism of money market which is controlling the banks and the financial institutions are also subject to payment of compound interest to the respective depositors. All these are there to ensure protection to the borrowers as they desire and deserve and at the same time to achieve and maximize social welfare and basic values of life. In that view of the matter, it cannot be said that inclusion of “interest” in section 2(ga)(4) is against the spirit of articles 8(1) and 20(2) of the Constitution.” Angels Corporation (Pvt) Ltd and another vs. Bangladesh and others, 59 DLR, 601.

অর্থাৎ সুদের হার দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে বা পুনরীক্ষণের অধীন যাহা চাহিদার প্রাবল্যের দ্বারা ইহার ন্যায্যতা নিশ্চিত করা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবল প্রতিযোগিতা তৈরির ব্যবস্থা করা। অর্থ বাজারের কৌশল যাহা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট আমানতকারীগণের চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ পরিশোধ নিয়ন্ত্রণ করে। অত্র সব কিছু করা হয় ঋণ গ্রহীতাগণকে সুরক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করাসহ তাহাদের প্রত্যাশা এবং একই সময় সামাজিক কল্যাণ ও জীবনের মৌলিক মূল্যবোধের পরম অবস্থা অর্জন করা। বিষয়ের উক্ত ধারণায় ইহা বলা যায় না যে, ধারা ২(গ)(৪) এ সুদ অন্তর্ভুক্ত করা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮(১) ও ২০(২) এর চেতনার পরিপন্থী।

৩। আইনের প্রাধান্য :- আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলীই কার্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

ধারা ৩-এ অত্র আইনের বিধানসমূহকে অর্থঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে প্রচলিত অন্যান্য যে কোন আইনের উপর প্রাধান্য দেওয়া হইয়াছে। এই ধরনের বিধানকে আইনের পরিভাষায় ÒNon Obstante ClauseÓ বলা হয়। উল্লেখ্য যে, অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ আদায়ের জন্য একটি বিশেষ আইন। ইহা আইন ব্যাখ্যায় সাধারণ সুপ্রতিষ্ঠিত নীতি যে, একই বিষয়ে সাধারণ আইন ও বিশেষ আইন থাকিলে বর্ণিত অবস্থায় বিশেষ আইন সাধারণ আইনের উপর প্রাধান্য পায়। উল্লেখ্য যে, অত্র আইনে ধারা ৩ সন্নিবেশিত যদি না করাও হইত তথাপিও অত্র আইনের বিধানাবলী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাইত।

মহামান্য উচ্চ আদালতের নজির :-

যদি একটি মামলার বিষয়বস্তু বিশেষ আইনের বিধানাবলী দ্বারা পরিচালিত হয় সেইক্ষেত্রে সাধারণ আইনের বিধানাবলী দ্বারা আকৃষ্ট হইবে না। (Motram Chelabhai v. Jagan Nagar. 1985.2 SCC 279)|

যেক্ষেত্রে বিশেষ আইন ও সাধারণ আইন কোন ব্যাপারে প্রযোজ্য তখন বিশেষ আইন সাধারণ আইনের উপর প্রাধান্য লাভ করিবে। (P.L.D. 1950. Dhaka 37)|

Maxim, “Genearlia Specialiabus non-derogant” নীতিমালায় বিশেষ আইন, সাধারণ আইনের উপর প্রাধান্য লাভ করে। “In a conflict between general statute and special statute the later prevails. “Kamruzzaman v. The State, 10 B.L.D., 190। অর্থাৎ যেখানে সাধারণ আইন ও বিশেষ আইনের মধ্যে বিরোধ হয়, তৎক্ষেত্রে শেষোক্ত আইন প্রাধান্য লাভ করে।

কালেক্ট বাই : মো: আকতার হোছাইন কুতুবী সহ-সম্পাদক, জাতীয় দৈনিক আমার কাগজ ও দি গুড মর্নিং, ঢাকা।

প্রধান সম্পাদক, জাতীয় ম্যাগাজিন জনতার কণ্ঠ ও উপদেষ্টা সম্পাদক জাতির আলো, ঢাকা।

মোবাইল : ০১৮২২৮৫৮৪০০, ই-মেইল : akterkutubinews@gmail.com