জাগোনিউজ :
ঢাকার লালবাগের এক কোটিপতি তার অসুস্থ বৃদ্ধ বাবাকে বাড়ি থেকে তুলে এনে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফেলে চলে গেছে। এতে করে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে তাকে ভর্তি করলে রাতেই বৃদ্ধের মেয়ের ঘরের নাতি এসে তাকে নিয়ে যায়। তবে হাসপাতালের ডিউটিরত লোকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া বৃদ্ধকে তার নাতি নিয়ে গেছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমনটাই জানিয়েছেন।

শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার হতে কুড়িয়ে পাওয়া বৃদ্ধের খোঁজখবর নিতে গেলে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানিয়েছেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৃদ্ধসহ তার নাতনির নাম ঠিকানা জানাতে পারেনি।

এদিকে বৃদ্ধের চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে থাকা চিকিৎসক তাহমিনা নাজনীনের সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বৃদ্ধের মেয়ের ঘরের নাতি এসে হাসপাতালে হৈচৈ করে নিয়ে গেছেন। তার নামটা মনে করতে পারছিনা। তবে বৃদ্ধের নাতনি জানিয়েছে বৃদ্ধের বাসা ঢাকার লালবাগে। বৃদ্ধের একমাত্র সন্তান রয়েছে। তাদের ঢাকা লালবাগে কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। তার ছেলেই তার নানাকে নারায়ণগঞ্জে এসে ফেলে চলে যায়। কি কারণে ফেলে রেখে গেছে তা কিছুই জানাইনি। তাদের নাম ঠিকানা খাতায় এন্ট্রি করে রাখা হয়েছে রাত ১০টার পর আসলে নিতে পারবেন।

নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোমেন বলেন, আমি শুক্রবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থ বৃদ্ধে খবর নিতে গিয়ে জানতে পারি রাতের বেলায় বৃদ্ধের নাতি এসে তাকে নিয়ে গেছে। কোনো নাম ঠিকানা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নোট করেনি। বৃদ্ধের স্বজনরা অনেকটা রাগারাগি করে নাকি নিয়ে গেছে। শুধু জানিয়েছে বৃদ্ধের বাসা ঢাকার লালবাগে। তিনি একজন সচ্ছল পরিবারের। তাকে কেন ঢাকা হতে নারায়ণগঞ্জের শহিদ মিনারে ফেলে গেলো তা কিছু জানতে পারেনি তিনি।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া বেইলী টাওয়ারের সামনে ৭০ বছরের একজন বৃদ্ধকে দেখতে পায় লোকজন। তিনি কথা বলতে পারেন না। কিছু খেতেও পারেন না। হাটতে বসতে ওঠতে পারেন না। কে বা কাহারা তাকে ফেলে চলে যায়। সকাল হতে নারায়ণগঞ্জে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। সেই বৃষ্টিতে ভেজা কাকের মতো হয়ে গেছে সেই বৃদ্ধ। পরে বৃদ্ধকে পড়ে থাকতে দেখে কজন লোক প্রথমে শহীদ মিনারের ভেতরে এনে একটি গাছের নিচে শুয়ে দেন। সেখানে পরে থাকা অবস্থায় অনেকেই খেতে দেন। সারাদিন শহীদ মিনারে পুলিশ দায়িত্বে থাকলেও তাকে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করেনি। শেষ বিকেলে সন্ধ্যার দিকে কজন সংবাদকর্মীর খবরে চাষাড়া ফাঁড়ি পুলিশ এসে ওই বৃদ্ধকে নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৃদ্ধকে চিকিৎসা শুরু করে।