ডেস্ক নিউজ:
যার বিরুদ্ধে ফেইসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে রংপুরে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয় সেই টিটু রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

রংপুর সদর উপজেলার ঠাকুরপাড়া গ্রামে মঙ্গলবার পোড়ানো বাড়িঘর পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “টিটু রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টিটু দোষী হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

টিটুকে নীলফামারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, “নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোল্লা ইউনিয়নের চিঁড়াভেজা গোল্লা এলাকায় টিটু তার স্ত্রীর এক আত্মীয়বাড়িতে ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

টিটু ওই গ্রামের খগেন রায়ের ছেলে। তিনি একজন গ্রাম্য কবিরাজ বলে তার মায়ের ভাষ্য। তার বিরুদ্ধে ফেইসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ ওঠে গত মাসে।

গত শুক্রবার কয়েক হাজার মানুষ ওই গ্রামের হিন্দুবাড়িতে হামলা চালিয়ে কয়েকটি বাড়িঘরে আগুন দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হাবিবুর রহমান (৩০) নামে একজন মারা যান। আহত হন আরও অন্তত ১১ জন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “শুনেছি টিটু লেখাপড়া জানেন না। তিনি নাকি আট-দশ বছর আগে থেকে বাড়ি ছেড়ে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে থাকেন। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করছে। এটা আসলে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা। এজন্য এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। দেশে ষড়যন্ত্র চলছে।”

ফেইসবুকে টিটুর স্ট্যাটাস সম্পর্কে জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেছেন, “ফেইসবুকে তার দেওয়া ধর্ম অবমাননার স্ট্যাটাস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এলাকায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”

টিটুর মা জিতেন বালা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলে কোনোদিনও স্কুলে যায়নি। সে গ্রাম্য কবিরাজ। জীবিকার সন্ধানে দশ বছর আগে এলাকা ছাড়ে টিটু। তবে আমার সাথে যোগাযোগ রয়েছে তার।”

এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া থানার এসআই রেজাউল করিম ও কোতোয়ালি থানায় এসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছেন। এসব মামলায় দুই হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ১২৪ জনকে। আর জেলা প্রশাসন গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটি।