ইমাম খাইর, সিবিএন:
কক্সবাজার সদর উপজেলায় ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদে কর্তন ও স্থানান্তর বাদে নতুন ৮ হাজার ৭১০ জন নিবন্ধিত হয়েছে। সেখানে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ১৪১, মহিলা ভোটার ৩ হাজার ৫৬৯ জন। সদরে স্থানান্তরিত হয়েছে ৩১০ জন। মৃত্যুসহ অনান্য কারণে ভোটার তালিকা থেকে নাম কর্তন করা হয়েছে ৪ হাজার ৩৩৬ জনের।
বাছাই পর্বে বাদ পড়া ভোটারের আপিলের সময় ২০১৮ সালের ১৬ থেকে ৩০ জানুয়ারী। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কার্যালয়ে আপিল শুনানী অনুষ্ঠিত হবে। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শিমুল শর্মা সিবিএনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২৬ অক্টোবর ইসলামপুর ইউনিয়নে নিবন্ধন কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়। এরপর ২৭ অক্টোবর ইসলামাবাদ, ২৮ অক্টোবর ঈদগাঁও, ২৯ অক্টোবর জালালাবাদ, ৩০ অক্টোবর পোকখালী, ৩১ অক্টোবর ভারুয়াখালী, ১ নভেম্বর পিএমখালী, ২ নভেম্বর চৌফলদন্ডি, ৩ নভেম্বর খুরুশকুল, ৪ নভেম্বর ঝিলংজা, ৫ নভেম্বর কক্সবাজার পৌরসভার ১-৫ নং ওয়ার্ড, ৬ নভেম্বর ৬-১০ নং ওয়ার্ড এবং ৭ নভেম্বর ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ডে ছবি তোলা হবে। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নিবন্ধন কার্যক্রম চলে।
নিবন্ধনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষর ও সীল জাল করে ভোটার হতে গিয়ে জালালাবাদ থেকে হাতেনাতে আটক হয় দুই মিয়ানমারের নাগরিক। একইভাবে পোকখালী থেকেও মিয়ানমারের এক নাগরিককে আটক করে নির্বাচন কর্মকর্তারা। পরে তাকে সাজা দেয়া হয়। জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিচ্ছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
সর্বশেষ গত ৯ নভেম্বর জেলা নির্বাচন অফিসের দেয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, ছবিযুক্ত মোট ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছে ইসলামপুরে ৪৩৭ জন, ইসলামাবাদে ৬৯৯ জন, ঈদগাঁওতে ৯০৬ জন, জালালাবাদে ৪৮৪ জন, পোকখালীতে ৫৬৮ জন, ভারুয়াখালীতে ৩৯৩ জন, পিএমখালীতে ৭১৩ জন, খুরুশকুলে ৭৬৯ জন এবং ঝিলংজায় ৮৬১ জন।
পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডে ২০৮ জন, ২ নং ওয়ার্ডে ২৬৯ জন, ৩ নং ওয়ার্ডে৮৯ জন, ৪ নং ওয়ার্ডে ১৬৫ জন, ৫ নং ওয়ার্ডে ২১৪ জন, ৬ নং ওয়ার্ডে ২৪৮ জন, ৭ নং ওয়ার্ডে ২৫৬ জন, ৮ নং ওয়ার্ডে ১৫৮ জন, ৯ নং ওয়ার্ডে ২০০ জন, ১০ নং ওয়ার্ডে ১৬৫ জন, ১১ নং ওয়ার্ডে ৭৯ জন, ১২ নং ওয়ার্ডে ১৯২ জন ছবিযুক্ত ভোটার নিবন্ধিত হয়েছে।
সদর উপজেলায় নতুন ভোটার নিবন্ধিত হয়েছে ৬৪৬৬ জন। পৌরসভায় নতুন ভোটারের পরিমাণ ২২৪৩ জন।
এদিকে কক্সবাজার জেলায় ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে বাছাইপর্বে ৭ হাজার ১২৫ জনের আবেদন বাতিল করেছে বিশেষ কমিটি। তথ্যগত ভুল, সঠিক ডকুমেন্ট জমা না করা, অসম্পূর্ণ আবেদন ইত্যাদি কারণে এসব আবেদন বাতিল হয়। আগামী ১ জানুয়ারী খচড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। বাতিল আবেদনের আপিল গ্রহণের সময় ঠিক করা হয়েছে ২ থেকে ১৫ জানুয়ারী। ১৬ থেকে ৩০ জানুয়ারীর মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করবে সংশ্লিষ্ট উপজেলার বিশেষ কমিটি। ৩১ জানুয়ারী চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে জেলা নির্বাচন অফিস।
২৫ জুলাই থেকে সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজারেও ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলে। ৯ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য নেয় নিয়োজিত কর্মীরা। এ সময়ে জেলায় ভোটার নিবন্ধনের মোট আবেদন জমা পড়ে ৫৭ হাজার ৪২৭ জনের। সেখান থেকে যাচাই বাছাইয়ে বৈধতা পেয়েছে ৫০ হাজার ৩০২ জনের আবেদন। বাতিল ঘোষিত হয় ৭ হাজার ১২৫ টি আবেদন। -জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য। তিনটি ধাপে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকার কাজ শুরু হয় ২০ আগস্ট থেকে।
কক্সবাজার জেলায় বিদ্যমান ভোটার সংখ্যা ১৩ লাখ ২৬ হাজার ৪৩৯ জন। সেখানে পুরুষ ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৩ এবং মহিলা ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৯১৬ জন। আগের ভোটারের সঙ্গে হালনাগাদ হতে যাওয়া নতুন ভোটার যুক্ত হবে। মোট ভোটারের সাড়ে ৩ ভাগ নতুন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকায় স্থান পাবে।
জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ মোজাম্মেল হোসেন সিবিএনকে জানান, কক্সবাজার একটি ‘বিশেষ এলাকা’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় ভোটার করার ক্ষেত্রে খুব সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। ১ জানুয়ারী ২০০০ বা তার পূর্বে জন্মগ্রহণকারী এবং ইতোপূর্বে যারা হালনাগাদে বাদ পড়েছেন, তাদের ভোটার তালিকাভুক্তির তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল বা ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দন্ডিত ব্যক্তিরা ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেছে।