ক্রীড়া ডেস্ক:

বাংলাদেশ দলের কোচের পদ থেকে ইস্তফা চেয়ে পাঠানো হাথুরুসিংহের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করবে তো বিসিবি? নাজমুল হাসান পাপন কি এ লঙ্কান বংশোদ্ভুত কোচের সাথে কথা বলে তার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে সক্ষম হবেন? নাকি হঠাৎ পদত্যাগের চিঠি দেয়া হাথুরু উপাখ্যান সত্যি সত্যি শেষই হয়ে গেলো?

চারিদিকে নানা কৌতুহলি প্রশ্ন এখন। নানা গুঞ্জন। হাথুরুর পর কাকে দায়িত্ব দেবে বিসিবি?হাথুরুর পর কাকে দায়িত্ব দেবে বিসিবি? এ মুহূর্তে এর কোনটারই জবাব নিশ্চিত করে দেয়ার উপায় নেই। কারণ ভিতরের খবর, হাথুৃরুসিংহেকে বাংলাদেশে আসার কথা বলা হয়েছে। ক্রিকেট মহলে জোর গুঞ্জন, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকায় আসছেন হাথুরু।

জানা গেছে, বিসিবি প্রধা নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন হাথুরুর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিসিবি সভাপতির ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। তারপরও হাথুরু বাংলাদেশে আসলে তার সাথে বসবেন বিসিবি বিগ বস। সেখানেই তার সাথে খোলাখুলি কথা বলবেন এবং তার সাথে বসে পদত্যাগের সম্ভাব্য কারণও জানতে চাইবেন।

আর যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাথুরু ঢাকায় না আসেন, তাহলে ইতি ঘটবে হাথুরু উপাখ্যানের। বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটি চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কথায় সে ইঙ্গিতই মিলল। শনিবার সন্ধ্যায় শেরে বাংলার প্রেস বক্সে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপে অনেক কথার ভীড়ে জালাল ইউনুস পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন- বিসিবি সিইওর সাথে টেলিফোনে কথা হয়েছে হাথুরুর। তারা (বিসিবি) এখন হাথুরুর অপেক্ষায়। তিনি আসলে এক রকম। না আসলে অন্যরকম। ঢাকায় আসলে হয়ত তার সাথে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই কথা বলবে বিসিবি। আর না আসলে হাথুরু উপাখ্যান শেষ ধরেই নতুন কোচের সন্ধানে নেমে পড়বে দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থাটি।

তবে সেটা চট ঝলদি নয়। হাথুরু সত্যি সত্যি ‘না’ করে দিলে আপাততঃ ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করবে বোর্ড। অন্তবর্তিকালীন সময়ে স্থানীয় কাউকেও দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। এমন সম্ভাবনার ইঙ্গিতও দেন জালাল ইউনুস।

‘সিইওর সাথে হাথুরুর আলাপ আলোচনা হয়েছে। তবে ওই টেলিফোন আলাপে তিনি জয়েন করবেন কি করবেন না- এ রকম কোনো আলাপ হয়নি। এর মধ্যে যদি না আসেন, ডিসিশন হয়ে যায়। না আসলে, আমরা নতুন একজন কোচের জন্য চেষ্টা শুরু করবো। এর জন্য আমরা খুব একটা তাড়াহুড়া করব না। সময় নেব। দু’এক মাস সময় লাগতে পারে। আমাদের দলের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, আর উপমহাদেশের মানসিকতার সঙ্গে পরিচিত কোনো কোচ হলে তো খুব ভালো হয়। এর মধ্যে হয়তো লোকাল কোনো কোচ দায়িত্ব নিতে পারেন।’

এখন হাথুরু ইস্যুতে বোর্ডের অবস্থান কি? জানতে চাওয়া হলে জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমি জানি না, কনসিডার করার প্রশ্ন আসছে কি না। আলাপ আলোচনা হয়েছে সেটা জানি। আমি নেগেটিভ পজিটিভ বলতে পারছি না। সে যদি না আসে, নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ভালো। যাকে আমরা নিয়োগ দেব, যেন আমরা ভালো কোচ নিয়ে আসতে পারি। ভালো কোচ কিন্তু নেই। পাওয়াটা খুব একটা সহজ নয়। ওরকম পেশাদার কোচের বাজারে ক্রাইসিস আছে। সে জন্য আমরা চিন্তা করছি, সময় নেব। তিন মাসের মধ্যে যদি ওই রকম কিছু জানা না যায়, তাহলে আমরা চেষ্টা করব।’

জালাল ইউনুস জানালেন, নতুন কোচ খুঁজতে হলে এবার হয়ত উপমহাদেশের কোচদের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকবে। তাই তো কন্ঠে এমন কথা, ‘উপমহাদেশের মানসিকতা মানে আমাদের কালচারের সাথে একটু সামঞ্জস্য থাকে, এমন কাউকে পাওয়া গেলে ভালো। এর মানে এই নয় যে উপমহাদেশের বাইরে খুঁজব না। আমাদের লক্ষ্য এমন একজন কোচ যে দলের সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করতে থাকে।’

এদিকে সত্যিই হাথুরু আর কোচিং করাতে না চাইলে একজন ভালোমানের কোচের বিষয়ে বোর্ড চাইলে কথা বলতে আগ্রহী ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক এ বিষয়ে বলেন, ‘আমি জানি না, সত্যি সত্যিই হাথুরু কোচ থাকবেন কি থাকবেন না। তিনি যদি না থাকেন, তাহলে বোর্ড নিশ্চয়ই ভালো ও হাই প্রোফাইল কোচ নিয়োগের সব চেষ্টা করবে। বোর্ড সম্ভাব্য কোচের তালিকা বা শর্ট লিস্ট করলে তখন বলা যাবে। তবে আমাদের মতামত চাইলে আমরা আমরা মত দেবো।’