• আড়াই হাজারের লাইসেন্স থাকলেও চলছে ৪ হাজার টমটম

বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার :

তীব্র যানজটে কাবু হয়ে পড়েছে কক্সবাজার শহরবাসী। গরম আর যানজটের মাত্রা তীব্রতর, সবমিলিয়ে চরম ভোগান্তিতে শহরবাসী। বিশেষ করে রিক্সা ও টমটম জট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। পাশাপাশি মাহিন্দ্র, সিএনজি, বিভিন্ন মালবাহি যানবাহনের মাত্রারিক্ত চলাচলের কারণে যানজটের মাত্রা আরো বেড়ে গিয়েছে। একটি সূত্রে জানা গেছে-পৌর কর্তৃপক্ষ আড়াই হাজার টমটমের লাইসেন্স দিলেও বর্তমানে শহরে চলাচল করছে ৪ হাজারেরও বেশী টমটম। ফলে শহরবাসীকে ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে আধ থেকে ১ ঘন্টা। যানজট নিরসনে প্রশাসনের নেয়া কোন পদক্ষেপই কাজে আসছে না। ট্রাফিক পুলিশ বলছে যানজটের একমাত্র কারণ নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে টমটমের লাইসেন্স দেয়া আর লাইসেন্সবিহীন টমটমের বেপরোয়া চলাচল। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে পানবাজার সড়ক, ভোলাবাবুর পেট্টোল পাম্প এলাকা ও বড় বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীরা ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা না করা। সকাল থেকে দুপুর আবার বিকাল থেকে রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত শহরের বাজারঘাটা, লালদিঘীর পাড়, ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প, বার্মিজ মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, হাসপাতাল সড়ক ও বড় বাজার এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। মাঝে মধ্যে কালুর দোকান ও পিটি স্কুল এলাকায়ও যানজটের কবলে পড়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। এতে করে যেমন করে মানুষ কর্ম ঘন্টা নষ্ট হচ্ছে, ঠিক তেমনি ভাবে নষ্ট ব্যাঘাত ঘটছে মানুষের নিত্য নৈমত্তিক কর্মকান্ডেও। গতকাল (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ১০ টায় শহরের বার্মিজ মার্কেট এলাকা থেকে টমটমে করে লালদিঘীর পাড়ে আসার সময় কথা হয় শহরের পাহাড়তলী এলাকার পঞ্চার্ধো বৃদ্ধ আবুল হাসেমের সাথে। যানজট প্রসংগে তিনি বলেন-ছোট্ট এই শহরে চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত টমটম আর রিক্সা সংখ্যা বেড়ে গেছে। তার সাথে যোগ হয়েছে সিএনজি, মাহিন্দ্রাসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের চলাচলের সংখ্যা। ফলে যানজটের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন-গত এক মাস ধরে শুধু প্রধান সড়ক নয়, শহরের বিভিন্ন অলি-গলিতে যেভাবে যানজটের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে পুরো শহরটাকে যানজট কাবু করে রেখেছে। আবুল হাসেমের মত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে যানজটের চরম দুর্ভোগের বনর্না দেন গোলদিঘীর পাড় এলাকার ব্যবসায়ী কিরণ পাল। তিনি বলেন-রিক্সা আর টমটমের শহরে পা ফেলায় যেন আজন্ম পাপ হয়েছে। শহরের লালদিঘীর পাড় থেকে বার্মিজ মাকের্ট পযন্ত ১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ২/৩ ঘন্টার সময় লেগে যায়। যানজটের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে-লাইসেন্সধারী ও লাইসেন্স বিহীন রিক্সা ও টমটমের ছড়াছড়ি। এদিকে লোকবল সংকটের মাঝেও ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। ট্রাফিক অফিস সূত্রে জানা যায়-বর্তমানে ট্রাফিক অফিসে ৫ জন ইন্সপেক্টর, ২ জন টিআই, ৩ জন সার্জেন্ট, ৫ জন এটিএসআই ও ১৮ জন কনষ্টেবল রয়েছে। অবশ্যই ৩০ জন কনষ্টেবল থাকার কথা। জেলা ট্রাফিক পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার বাবুল বণিক বলেন-ট্রাফিক পুলিশ পর্যটন শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। শত কষ্ট করেও যানজট নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে। এর জন্য তিনি টমটম আর রিক্সার মাত্রারিক্ত চলাচলের পাশাপাশি ফুটপাত দখল করে ভাসমান ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন।