শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর :

কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডীতে ভন্ড প্রেমিকের সঙ্গে অভিমান করে তরুণী আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৬ নভেম্বর নিহত তরুণীর মা শাকেরা বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে। এতে আসামী করা হয়েছে আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী কথিত প্রেমিক একই ইউনিয়নের খোনকারখীল এলাকার ফোরকান আহমদের পুত্র রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ও তার বাবা ছৈয়দ আহমদের পুত্র ফোরকান আহমদ। মামলাটি রেকর্ডভূক্ত করে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই দেবাশীষ সরকারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা যায়, উত্তর পাড়ার মোস্তাক আহমদ প্রকাশ মোস্তানুর মেয়ে রুহি আক্তার (১৭) কথিত প্রেমিক রাসেলের সাথে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। তারা এক পর্যায়ে কক্সবাজারস্থ একটি কটেজেও উঠেছিল। এসময় মেয়েটির চাচা ধরে এনে তাকে উত্তম মধ্যম দেয়। মারধরের বিষয়টি প্রেমিক রাশেদকে জানালে সে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। এমনকি ৬ নভেম্বর কাবিন নামামূলে বিয়ে হওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু কথিত প্রতারক প্রেমিক তার পিতার যোগসাজশে মেয়েটিকে বিয়ে করবে না মর্মে মোবাইলে হুমকি দিয়ে বন্ধ করে রাখে। পরের দিন আবারো মোবাইল চালু করে বিয়ের প্রস্তাব দিলে পুনরায় হুমকি দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩ নভেম্বর সকালে বাড়ির সিলিংয়ের সাথে উড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। এদিন খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তার মৃতদেহ উদ্ধার করে সূরতহাল রিপোর্ট পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে ঐদিন তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল মেয়ের বাড়িতে এসে সমবেদনা এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ^াস দেন। ঘটনার ৩ দিন পর মেয়ের মা শাকেরা বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে যার নং ১০১৫ ধারা ৯(ক)। এসময় মামলাটি তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন সদর ইউএনও। একই দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা প্রশাসনের তহবিল থেকে এ অসহায় নির্যাতিত পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ ও ২ বান্ডেল টিন তুলে দেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন বলেন, হয়ত পরিবারটির অপূরণীয় ক্ষতি আমি পূরণ করতে পারব না। সদর উপজেলা প্রশাসন সবসময় নির্যাতিত অসহায় এবং গরীব মানুষের জন্য কাজ করবে বলে ঘোষণা দেন। এতে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শফিউল আলম সাকিব, চৌফলদন্ডী ৭নং ওয়ার্ডে মেম্বার মোস্তফা কামালসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনজিত কুমার বড়–য়া দৈনিক সকালের কক্সবাজারকে জানান, মামলাটি রেকর্ড হয়েছে এবং ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই দেবাশীষ সরকারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।