ডেস্ক নিউজ:

রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে খালেদা জিয়ার ও বিএনপির কী অর্জন হয়েছে- আলোচনায় উঠে আসছে এমন প্রশ্ন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন যাবত দলটির নেতাকর্মীরা কার্যত নিস্ক্রিয় ছিল। চেয়ারপারসনের এই কর্মসূচির ফলে তারা উজ্জীবিত ও চাঙ্গা হয়েছেন, যা দলকে আরও গতিশীল করতে সহায়তা করবে। বিএনপি ত্রাণ তৎপরতার পাশাপাশি অন্যান্য মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

তবে দলটির নেতারা এটাকে রাজনৈতিক কোনো অর্জন মানতে নারাজ। তারা বলছেন, রাজনৈতিক সংগঠনের হলেও এটি ছিল মানবিক কর্মসূচি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের চারদিনের সফরে চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দলের হাইকমান্ডের যোগোযোগ আরও মসৃণ হয়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসনে এ সফর ফলপ্রসূ হয়েছে।

খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আসন ফেনী হলেও বিভক্তির কারণে সাংগঠনিকভাবে বিএনপি সেখানে পিছিয়ে আছে। জানা গেছে, চেয়ারপারসনের সফর উপলক্ষে দ্বন্দ্ব গুছিয়ে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।

তবে ত্রাণের বাইরে সাংগঠনিক কোনো কর্মসূচি হয়নি জানিয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রেহানা আক্তার রানু জানান, এ সফরকালে দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো সাংগঠনিক নির্দশনা দেননি খালেদা জিয়া।

চেয়ারপারসনের কক্সবাজার সফরের অর্জন প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, ম্যাডাম রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে এসেছিলেন। এটা মানবিক বিষয়। তবে এ সফরের কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে।

তিনি বলেন, লাখ লাখ নেতাকর্মী রাস্তার দু’পাশে দাড়িয়ে নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। আমি মনে করি এতে নেতাকর্মীরা অনেক উজ্জীবিত হয়েছেন। আগামী দিনের আন্দোলন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে তারা আরও সক্রিয় হবেন।

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের এ সফরে রাজনৈতিক অর্জনের কিছু নেই, এটা মানবিক ইস্যু। জনগণ এতে সম্পৃক্ত হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে ম্যাডামকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, রাজনৈতিক দলের স্বাভাবিক যে কার্যক্রম তা করতেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কক্সবাজার গিয়েছিলেন। এটা অস্বাভাবিক কিছু না। খালেদা জিয়ার এ সফরে কোনো রাজনীতি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে রাজনীতি বিশ্লেষক শান্তনু মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুর মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে আবির্ভূত হওয়ায় আশ্চর্যের কিছু নেই। তারা এটাকে অবশ্যই একটা সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তাদের পলিটিক্যাল মোবিলাইজেশন যেটা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়েছিল রাস্তায় লোক নামুক, এমনকি দু’একটা জায়গায় যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে সেগুলোকেও তারা এখন ব্যবহার করতে পারছেন। পলিটিকসে মানি না, মানব না, কিছু করব না, আমরা সুযোগ পাচ্ছি না- এটা বললে হবে না। তাদের কোনো না কোনো পথ বের করতে হবে, বাকিটা জনগণ দেখবে।