কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া :
রাখাইনে সহিংসতায় ঘটনায় গত দুই মাসে ছয় লাখেরও অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। এদের মধ্যে তিন লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত করা হয়েছে। কক্সবাজারের সাতটি কেন্দ্রে প্রতিদিন নিবন্ধিত হচ্ছে প্রায় ১২-১৩ হাজারের মতো রোহিঙ্গা। তালিকায় নাম লেখাতে নিবন্ধন কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিতই ভিড় করছেন তারা।
পাসপোর্ট অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী মাহামদুল হাসান বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) পর্যন্ত তিন লাখ ১৩ হাজার দুইশ’ রোহিঙ্গার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সব রোহিঙ্গাকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’ আগামী এক মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ডাটাবেজ তৈরির কাজ শেষ হবে বলেও জানান তিনি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রগুলোর সূত্রে জানা যায়, শুরুর দিকে রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র ও যন্ত্রপাতির সীমাবদ্ধতা থাকলেও এখন তা কাটিয়ে উঠেছে প্রশাসন। এছাড়া রোহিঙ্গারা ত্রাণের জন্য ছোটাছুটি করলেও বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে অনীহা ছিল তাদের। তবে ত্রাণসহ বিভিন্ন সহযোগিতা পেতে নিবন্ধন কার্ডের গুরুত্ব বোঝানোর পর এখন নিবন্ধিত হতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পে ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্বুদ্ধ করার পর এই গতি এসেছে বলেও জানান তারা।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, নতুনদের পাশাপাশি পুরাতনরাও বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আসছে। ছবিযুক্ত এই কার্ডের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সঠিক পরিসংখ্যান, সাময়িক আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে এই ডাটাবেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নির্যাতনের ভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, ভাষা ও শারীরিক কাঠামোই বলে দেয় যে তারা মিয়ানমারের নাগরিক। কিন্তু কারও কাছে তার কোনও দালিলিক প্রমাণ নেই। একইভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন অজুহাতে বসবাস করছেন আরও প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের বিপুল সংখ্যক এই জনগোষ্ঠীর পরিচয় নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে সেখানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনের কাজ চলছে। সাতটি স্থানে সকাল ৯টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে ছবিযুক্ত কার্ড সংগ্রহ করছেন রোহিঙ্গারা।