এম.জাহেদ চৌধুরী:
চকরিয়া সরকারী বালিকা বিদ্যালয় ও চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রী। দুজনেরই বাড়ি চকরিয়া উপজেলার কেয়ারবিল ইউনিয়নের ছোট ভেওলা গ্রামে। এই দুই অপ্রাপ্ত বয়স্ক টিনেজ প্রেমিক জুটি অভিভাবকদের নজর এড়িয়ে বিয়ে করতে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। নিকটবর্তী উপজেলা পেকুয়ায় গিয়ে বিয়ের চেষ্টা করছিল। কিন্তু তাদের অসময়ে বিয়ের প্রস্তুতিকালে বেঁকে বসেন কাজী, খবর পেয়ে ছুটে আসেন পেকুয়া থানা পুলিশ। অবশেষে শিক্ষার্থী প্রেমিক জুটি পুলিশের খপ্পরে পড়ে প্রেমিক গেলেন কারাগারে, প্রেমিকার ঠিকানা হলো হাটাজারীস্থ সেফহোমে।

সোমবার রাতে পুলিশ বাঘগুজারা স্টেশন থেকে তাদেরকে আটক করে মঙ্গলবার চকরিয়া থানায় হস্তান্তর করলে বুধবার তাদের আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

আটক প্রেমিক রুহুল কাদের রানা (১৭) চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ছোটভেওলা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন ছেলে। লেখাপড়া করেন চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণীতে। অপরদিকে প্রেমিকা (১৫) একই গ্রামের বাসিন্দা আবুল খায়েরের মেয়ে। লেখাপড়া করেন চকরিয়া শহরের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের একই ক্লাসে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্ক থেকেই তারা চলতিবছর পরপর তিনবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করতে প্রস্ততিও নিয়েছিলেন। সর্বশেষ চতুর্থবার পালিয়ে বিয়ের চেষ্টা করলেও কিন্তু দুইজনই অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় নিকটাত্মীয় ও উৎসুক জনতার সহায়তায় বেরসিক পুলিশের হাতে আটক হয়।

এ ঘটনায় ছাত্রীর মা আয়েশা বেগম বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে থানায় একটি মামলা রুজু করেছেন। মামলায় বিবাদি করা হয় মেয়ের প্রেমিক শিক্ষার্থী রুহুল কাদের রানাকে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চকরিয়া থানার এসআই সুকান্ত চৌধুরী বলেন ছেলে ও মেয়ে এখনো অপ্রাপ্ত বয়স্ক। আইনীভাবে এখনও তাদের বিয়ের বয়স হয়নি। মেয়েটি তাঁর মা-বাবার হেফাজতে যেতেও রাজি নন। পরে মামলার প্রেক্ষিতে দুইজনকে গতকাল দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, মামলার শুনানী শেষে আদালতের বিচারক প্রেমিক রুহুল আমিন রানাকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে ও প্রেমিকা ওই শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীস্থ সেইফহোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো.এনামুল হক ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমার জানা মতে ওই ছেলে-মেয়ে এবারসহ চারবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করতে চেষ্ঠা করে। কিন্তু দুইজনই অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারণে প্রতিবারই নিকট স্বজন, কিংবা উৎসুক জনতা ও বেরসিক পুলিশের হাতে আটক হয়ে তিনদফায় বাড়ী ফিরলেও এবার আদালতের নির্দেশে দু’জন দু’মেরুতে।